বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের বাণিজ্য ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

trade

বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন খান।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজকে রবিবার তিনি এই তথ্য জানান। দ্য নিউজে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বরাত দিয়ে দেশটির আরেক সংবাদমাধ্যম দ্য ডন সোমবার জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহের কারণে বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন হাইকমিশনার ইকবাল।

দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে উষ্ণতা ফিরে এসেছে। দীর্ঘ সময় ধরে ঢাকার নেতারা, বিশেষ করে শেখ হাসিনার সরকার নয়াদিল্লির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে ইসলামাবাদের সঙ্গে দূরত্ব রক্ষা করে চলছিল। তবে গত আগস্টে আন্দোলনের মাধ্যমে হাসিনার সরকার উৎখাতের পর দুই রাজধানীর মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি ঘটেছে, যার ফলে বাণিজ্য ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ব্যাপক অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর হাসিনার স্থলাভিষিক্ত হন নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি পাকিস্তানের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে আলাপে তিনি বিদ্যমান সমস্যাগুলো ‘মীমাংসা’ করে ‘এগিয়ে যাওয়ার’ প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।

গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার ঘোষণা দেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু হবে। তিনি পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য অনলাইনে বাংলাদেশি ভিসা পাওয়ার সুবিধার কথা উল্লেখ করে ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদারে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির কথা জানান।

বাংলাদেশের হাইকমিশনারের বরাত দিয়ে দ্য নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে পাকিস্তানি পণ্যের ‘ব্যাপক চাহিদা’ রয়েছে এবং পাকিস্তানও বাংলাদেশি পণ্য থেকে উপকৃত হচ্ছে। ১৫ বছর পর দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য পুনরুদ্ধারকে তিনি ‘সন্তোষজনক’ হিসেবে উল্লেখ করেন। বাংলাদেশে পাকিস্তানি তুলা, চিনি, চাল, পোশাক ও ফল, যেমন আমের চাহিদা রয়েছে।

হাইকমিশনার আরও বলেন, বাংলাদেশ পাকিস্তানে আনারস, পাট, ওষুধ ও পোশাক রপ্তানি করতে পারে। হাইকমিশনার মনে করেন, “দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও বাণিজ্য বাড়ানোর সম্ভাবনার কোনো সীমা নেই।”

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পাকিস্তান তার জাতীয় ক্যারিয়ারের মাধ্যমে প্রায় দুই দশক পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে ২৬ হাজার মেট্রিক টন চালের প্রথম চালান রপ্তানি করেছে। চলতি মাসের শুরুতে চূড়ান্ত হওয়া নতুন চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ পাকিস্তানের ট্রেডিং করপোরেশন থেকে প্রতি টন ৪৯৯ ডলারে সাদা চাল কিনছে। এই চাল দুই পর্যায়ে সরবরাহ করা হবে, বাকি ২৫ হাজার টন আগামী মার্চের শুরুতে পৌঁছাবে। তবে ভিয়েতনাম থেকে প্রতি টন ৪৭৪.২৫ ডলারে আমদানি করা চালের তুলনায় পাকিস্তানের চালের দাম বেশি।

বাংলাদেশ চালের বাজার স্থিতিশীল করতে সংগ্রাম করছে, কারণ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চালের দাম ১৫-২০ শতাংশ বেড়েছে। মাঝারি মানের চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি প্রায় ৮০ টাকায় (০.৬৬ ডলার)। চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাজার থেকে টেন্ডারের মাধ্যমে বেশি চাল আমদানি করছে এবং আমদানি শুল্ক তুলে দিয়েছে।

আরও পড়ুন