প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট ‘ডেডলাইন’ পেতে বৈঠকে বসেছিল বিএনপি। তবে সেরকম কোনো ইঙ্গিত দেননি আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর প্যারিস থেকে উড়ে এসে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত মুহাম্মদ ইউনূস।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসে বলেছেন, তারা ইউনূসের কথায় একেবারেই সন্তুষ্ট নয়।
বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করে বিএনপির প্রতিনিধিদল। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল দলটির সাত সদস্যের এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
বিএনপির প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দীন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সালাহউদ্দিন আহম্মেদ ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, তারা নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট ডেডলাইন চেয়েছিলেন; তারা সংস্কারের বিষয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন; ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে রাজনৈতিক গতিপথ কেমন হতে পারে তা নিয়ে তাদের অভিমত প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেছেন।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা কোনো সুনির্দিষ্ট ডেডলাইন দেননি, বরং ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা আবারও বলেছেন, বলে জানান তিনি।

তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তারা এই আলোচনায় সন্তুষ্ট কি না- জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট নই। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, ডিসেম্বর মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।”
মির্জা ফখরুল তাদের অসন্তুষ্টির কথা বললেও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের দাবি, বিএনপির প্রতিনিধি দলকে দেখে তার কাছে অখুশি মনে হয়নি।
যমুনার সামনে পৃথক বিফ্রিংয়ে তিনি বলেন, “ডিসেম্বর থেকে জুন মাস, মানে আমরা ইচ্ছা করেই দেরি করে মে মাসে নির্বাচন করব, এমনটা নয়। ডিসেম্বর থেকে জুন মানে হচ্ছে ডিসেম্বরের পর থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন করা। আমরা অকারণে এক মাস, দুই মাস বেশি থাকলাম, মোটেও এমনটা নয়। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন হবে।”
আসিফ নজরুলের দাবি করে বলেন, “বিএনপি মন খুলে কথা বলেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু কিছু সিদ্ধান্ত তাদের প্রতিকূলে গেছে বলে তারা বলেছেন। আমরা তাদেরকে উদাহরণ দিয়েছি, অনেকগুলো সিদ্ধান্ত তাদের অনুকূলে গেছে। রাজনৈতিক ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারে বিলম্ব হচ্ছে। গত তিন মাসে ৭ হাজারের অধিক মামলা প্রত্যাহার হয়েছে। বিএনপি আরেকটা ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা বলেছে। আমরা বলেছি যে আমরা এই লক্ষ্যে কাজ করছি।”
“ঐকমত্য কমিশনের যেসব প্রস্তাব আছে, সেসব বিষয়ে বিএনপি অত্যন্ত পজিটিভ। তারা বলেছে দু-তিন দিনের মধ্যে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বসবে। অধিকাংশ সংস্কার প্রস্তাবের সঙ্গে তারা ঐকমত্য পোষণ করে। জুলাই চার্টার খুব দ্রুত প্রণীত হয়ে যাবে,” যোগ করেন তিনি।