ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া সংশোধিত ‘ওয়াকফ’ বিলের বিরোধিতা করেছে বিএনপি। দলটি মনে করে, এই বিলের মাধ্যমে ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের অধিকার খর্ব করা হয়েছে। এই বিলটি পুনর্বিবেচনা করতে ভারত সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
রোববার বিকেলে বিএনপির গুলশানের কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এই দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “গত কয়েক দিন আগে ভারতের পার্লামেন্টে মুসলিম ওয়াক্ফ (সংশোধন) বিল ২০২৫ নামে একটি আইন পাস করা হয়। আইনটির বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ করে আমরা দেখেছি যে, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের অধিকার খর্ব করা এবং বৈষম্যমূলক আচরণের চেষ্টা করা হয়েছে এই আইনে। ভারতে মুসলমানরা এবং বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন এই বিলকে অসাংবিধানিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।”
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “ভারতের জনসংখ্যার ১৪% অর্থাৎ প্রায় ২০ কোটি মুসলমানদের ধর্মীয় ঐতিহ্য, অধিকার, সংস্কৃতি ও স্বার্থবিরোধী এই আইনকে অপব্যবহারের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে, যা ইসলামি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যাপক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। ভারতে ওয়াক্ফ বোর্ডগুলোর অধীনে প্রায় ১০ লাখ একর সম্পত্তির মধ্যে অধিকাংশই ব্যবহৃত হয় মসজিদ, মাদরাসা, কবরস্থান ও এতিমখানার মতো জনকল্যাণ মূলক কাজে। নতুন আইনে পরিচালনা বোর্ডে অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে, যার ফলে মুসলিম নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে।”
মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকারে হস্থক্ষেপের কারণে এবং বৈষম্যমূলক আচরণের ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের আশংকা দেখা দিতে পারে এ রকম কোনো পদক্ষেপ রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে গ্রহণ করা সমীচীন নয় বলে মনে করে বিএনপি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “নতুন আইনে অমুসলিম সদস্যদের এই সম্পত্তিসমূহের ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে যে এখতিয়ার প্রদান করা হয়েছে তা মুসলিম নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল।”
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ‘ল’ বোর্ডের মতো সংগঠনগুলোর মতে এই আইন ইসলামি ওয়াক্ফ ব্যবস্থার মূল চেতনার পরিপন্থী। তাদের মতে ওয়াক্ফ বোর্ডের পরিচালনা মুসলমানদের দ্বারাই হওয়া উচিত। তারা একে মুসলিম নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল বলে অভিমত দিয়েছেন।”
ভারত সকল ধর্মাবলম্বী নগরিকদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় ভারত সরকার আইনটি পুনর্বিবেচনা করবে আশাবাদ জানান সালাহউদ্দিন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।