যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চীনের পাল্টা শুল্ক কার্যকর

us-china-trade

যুক্তরাষ্ট্রের কিছু আমদানি পণ্যের ওপর চীনের পাল্টা শুল্ক সোমবার থেকে কার্যকর হচ্ছে। গত মঙ্গলবার চীনের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করার কয়েক মিনিট পরই বেইজিং এই পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিল।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু পণ্যে চীন পাল্টা শুল্ক আরোপ করায় বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও কয়েকটি দেশের ওপর শুল্কের আরোপের হুমকি দিয়েছেন। রবিবার, ট্রাম্প জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা সব স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন এবং এই পরিকল্পনার বিষয়ে সোমবার বিস্তারিত জানাবেন।

সুপার বোলে যাওয়ার পথে এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি অন্য দেশগুলোর ওপরও শুল্ক বসানোর পরিকল্পনা করছেন, তবে নির্দিষ্টভাবে কোন দেশগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে তা জানাননি।

এর আগে গত সপ্তাহে ট্রাম্প বিবিসিকে বলেছিলেন, তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন এবং শিগগিরই এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে।

চীনের নতুন আরোপিত শুল্কের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কয়লা ও তরল প্রাকৃতিক গ্যাস পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেল, কৃষি যন্ত্রপাতি ও বড় ইঞ্জিনের গাড়ির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

নতুন এই শুল্ক আগে গত সপ্তাহে চীনা কর্তৃপক্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগলের বিরুদ্ধে একটি অ্যান্টি-মনোপলি তদন্ত শুরু করে, অন্যদিকে কেলভিন ক্লেইন ও টমি হিলফিগার ব্র্যান্ডের মার্কিন মালিক কোম্পানি পিভিএইচ-কে বেইজিংয়ের তথাকথিত ‘অনির্ভরযোগ্য সত্তা’র তালিকায় যুক্ত করা হয়।

এ ছাড়া চীন ২৫টি বিরল ধাতুর ওপর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে, যার মধ্যে কয়েকটি অনেক বৈদ্যুতিক পণ্য এবং সামরিক সরঞ্জামের মূল উপাদান।

যুক্তরাষ্ট্রের ভয়ঙ্কর মাদক ফেন্টানিল পাচারে চীনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে দেশটির পণ্যে গত মঙ্গলবার থেকে ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করে ট্রাম্প প্রশাসন।

পরদিন বেইজিং ফেন্টানিলের বাণিজ্যে চীনের ভূমিকার বিষয়ে ‘ভিত্তিহীন ও মিথ্যা অভিযোগ’ করায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অভিযোগ জানায়, যেখানে দাবি করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি শুল্ক ‘বৈষম্যমূলক ও সুরক্ষাবাদী’ এবং এটি বাণিজ্য বিধির লঙ্ঘন।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্র একই অভিযোগ তুলে প্রতিবেশী দুই দেশ কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে কানাডা ও মেক্সিকোও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার কথা জানায়। নানা নাটকীয়তার পর যুক্তরাষ্ট্র দেশদুটির পণ্যে শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা স্থগিতের ঘোষণা দেয়।

আরও পড়ুন