আলিফ হত্যার হুকুমদাতা চিন্ময় কৃষ্ণ, অভিযোগপত্র দিল পুলিশ

সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী
সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী

সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। এতে মোট ৩৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আলিফ হত্যার আগের দিন চিন্ময় কৃষ্ণকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল।

মঙ্গলবার চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালী) মাহফুজুর রহমান।

তিনি বলেন, “মোট ৩৮ জনকে আসামি করে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি চিন্ময় দাস ব্রহ্মচারী।”

তদন্ত কর্মকর্তা জানান, এ মামলার এজাহারে যে ৩১ জনের নাম ছিল, তাদের মধ্যে তিনজনকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, “এজাহারে থাকা বাকি ২৮ জনকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়েছে। পাশাপাশি তদন্তে যাদের নাম এসেছে এমন আরো ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।”

গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। পরে এ মামলায় চিন্ময়সহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২৬ নভেম্বর চিন্ময়ের জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ হলে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন।

আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাসকে কারাগারে নিয়ে যায়।

সে সময় বিক্ষোভকারীরা আদালত সড়কে রাখা বেশ কিছু মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাঙচুর করে। আদালতের সাধারণ আইনজীবী ও কর্মচারীরা মিলে তখন তাদের ধাওয়া করে।

ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়।

ঘটনার সময় পুলিশ হেফজতে থাকা চিন্ময়কে কেন প্রধান আসামি করা হল, সেই ব্যাখ্যায় তদন্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান বলেন, “সেদিন জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার পর তিনি আদালত প্রাঙ্গণে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন। তার বক্তব্যের কারণে অন্য আসামিরা উত্তেজিত হয়ে আইনজীবীর উপর হামলা চালায় বলে তদন্তে উঠে এসেছে।”

“হুকুমদাতা হিসেবে চিন্ময় দাস এই মামলার প্রধান আসামি। ইতোপূর্বে গ্রেপ্তার আসামিদের জবানবন্দি ও জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে হামলার ঘটনায় যারা জড়িত ছিল তাদের অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়েছে।”

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘সারাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে’ সেদিন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়।

অভিযোগপত্রে যে ৩৮ জনকে আসামি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২০ জন গ্রেপ্তার আছে। বাকি ১৮ জন পলাতক।

আইনজীবী আলিফ হত্যার পর গত বছরের ২৯ নভেম্বর তার বাবা জামাল উদ্দিন নগরীর কোতোয়ালি থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

সেখানে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫/১৬ জনকে আসামি করা হয়। তারা সবাই রঙ্গম কনভেনশন হল সংলগ্ন বান্ডেল সেবক কলোনির বাসিন্দা।

গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত আসামি চন্দন দাস, রাজীব ভট্টাচার্য্য ও রিপন দাশ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads