প্রায় ছয় কোটি ভোটার চার বছরের জন্য সংসদে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন ২৩ ফেব্রুয়ারি। কেমন হবে এ নির্বাচন? কোন দলের জেতার সম্ভাবনা কতটকু, কিংবা কার হাতে থাকবে জার্মানির ‘নাটাই’। মিলিয়ে নিন বাংলাদেশের সঙ্গে জার্মানির নির্বাচনের মিল ও অমিল কোথায়।
কোন দল জিতবে?
বার্লিনভিত্তিক নির্বাচন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনফ্রাটেস্ট ডিমাপ পরিচালিত সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, মধ্য ডানপন্থি খ্রিস্টীয় গণতন্ত্রী দল (সিডিইউ) এবং তাদের বাভারিয়ান সহযোগী দল খ্রিস্টীয় সামাজিক দল (সিএসইউ) এগিয়ে রয়েছে।
এই ইউনিয়ন দলগুলো কট্টর ডানপন্থি জার্মানির জন্য বিকল্প (এএফডি)-র তুলনায় ১০ ভাগ এগিয়ে রয়েছে।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, এএফডি জার্মানির পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সাক্সনি, থুরিঙ্গিয়া এবং ব্রান্ডেনবুর্গের আঞ্চলিক নির্বাচনে বেশ ভালো করেছে।
সরকারে থাকা সামাজিক গণতন্ত্রী দল (এসপিডি) এবং সবুজ দল তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে৷ আগের সরকারের ত্রিদলীয় জোটের অংশ মুক্ত গণতন্ত্রী দল (এফডিপি) তালিকার শেষের দিকে রয়েছে।
কে হবেন চ্যান্সেলর।
ভোটাররা সরাসরি চ্যান্সেলর নির্বাচনকরেন না৷ বরং, তারা বুন্ডেসটাগ বা সংসদের নিম্নকক্ষের সদস্যদের নির্বাচন করেন। যদি কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়, তাহলে সর্বাধিক আসনপ্রাপ্ত দল একটি সরকার গঠনের চেষ্টা করে। সাধারণত সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী জোটের প্রধান দল তাদের চ্যান্সেলর প্রার্থীকে সরকার প্রধান হিসেবে মনোনীত করে।
বর্তমানে সিডিইউ-সিএসইউর চ্যান্সেলর প্রার্থী ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস এই লড়াইয়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন৷ তবে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে মূলত বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস (এসপিডি) এবং ভাইস চ্যান্সেলর রবার্ট হাবেক (সবুজ দল)-এর জনপ্রিয়তা হ্রাসের কারণে।
জার্মান চ্যান্সেলর কীভাবে নির্বাচিত হন?
প্রতিটি দল নির্বাচনের আগে তাদের শীর্ষ প্রার্থী মনোনীত করে। নির্বাচনের পর দলগুলো সরকার গঠনের জন্য জোট গঠনের চেষ্টা করে।
জার্মান প্রেসিডেন্ট সংসদে চ্যান্সেলর পদের জন্য একজন প্রার্থী মনোনীত করেন৷ সংসদ সদস্যদের গোপন ভোটে নির্ধারিত হয় চ্যান্সেলর।
জার্মানির নির্বাচন ব্যবস্থা কেমন?
জার্মানির নির্বাচন ব্যবস্থা গণতন্ত্র ও আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব-এর সমন্বয়ে গঠিত৷ প্রত্যেক ভোটার দুটি ভোট দেন:
প্রথম ভোট : সরাসরি একজন সংসদ সদস্য নির্বাচনের জন্য। দ্বিতীয় ভোট : একটি রাজনৈতিক দলের জন্য। দ্বিতীয় ভোটই মূলত সংসদে দলগুলোর অনুপাত নির্ধারণ করে৷ কোনো দল যদি ৫% বা তার বেশি ভোট পায়, তবে তারা নিশ্চিতভাবে সংসদে আসন পায়।
জার্মানির এই নির্বাচনের ফলাফল ভবিষ্যৎ ইউরোপীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।