ঋতু পরিবর্তনের সময় ভাইরাসজনিত সংক্রমণের কারণে জ্বর হওয়া সাধারণ ঘটনা। চিকিৎসার জন্য ওষুধের প্রয়োজন যতোটা তার চেয়ে কাজে আসতে পারে খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন।
গবেষণায় দেখা গেছে প্রতি ডিগ্রি অতিরিক্ত তাপমাত্রার জন্য বিপাকক্রিয়া প্রায় ৭ শতাংশ বেড়ে যায়। ফলে শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তির চাহিদাও বেড়ে যায়। তাই এ সময় চাই পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য খাবার। এ সময় খাদ্যতালিকায় এমন খাবার রাখতে হবে, যা উচ্চ ক্যালরির পাশাপাশি মুখের রুচি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।
সেজন্য জ্বর হলেই চিকিৎসকের শরণাপণ্ন হওয়ার চেয়ে খাদ্য ব্যবস্থাপনায় দৃষ্টি দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
আসুন জেনে নেই সাধারণ জ্বরের ভাইরাল জ্বরের সময় খাদ্য তালিকায় যেসব খাবার রাখা যেতে পারে:
১. ডাবের পানি
ডাবের পানি প্রাকৃতিক ইলেকট্রোলাইট সমৃদ্ধ একটি পানীয়। এটি শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে এবং জ্বরের কারণে শরীর থেকে হারিয়ে যাওয়া খনিজ পূরণ করে। এছাড়াও, এর প্রদাহনাশক গুণাগুণ শরীরকে আরাম দেয়।
২. চিকেন স্যুপ
চিকেন স্যুপ সহজে হজমযোগ্য প্রোটিন শরীরে সরবরাহ করে, যা টিস্যু মেরামত ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গরম স্যুপ গলা ব্যথা ও সর্দি উপশমেও কার্যকর।
৩. সাইট্রাস ফল
কমলা, মাল্টার মতো সাইট্রাস ফল ভিটামিন সি-তে সমৃদ্ধ। এগুলি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণের তীব্রতা কমায়। একই সঙ্গে, এগুলি হাইড্রেশন বাড়ায় ও গলা ব্যথা কমায়।
৪. আদা চা
আদা প্রাকৃতিকভাবে প্রদাহনাশক এবং ভাইরাস প্রতিরোধী। জ্বরের মুখে আদা চা খেলে বমি বমি ভাব দূর হয়, রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়।
৫. কলা
কলা নরম, সহজপাচ্য এবং প্রচুর শক্তি সরবরাহ করে। এর মধ্যে থাকা পটাশিয়াম শরীরের ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং জ্বরের কারণে হওয়া পেশির টান কমাতে সাহায্য করে।
৬. হলুদ-দুধ
হলুদের মধ্যে কারকিউমিন নামক উপাদান থাকে, যা শক্তিশালী প্রদাহনাশক এবং ভাইরাসবিরোধী। গরম দুধে হলুদ মিশিয়ে খেলে গলা ব্যথা কমে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
৭. ডালিয়া
ডালিয়ার খিচুড়ি একটি হালকা এবং সহজপাচ্য খাবার। এটি শরীরে শক্তি জোগায় এবং হজমশক্তির উপর কম চাপ ফেলে। এর সঙ্গে লবন ও লেবুর রস মেশালে এর স্বাদ বাড়ে।
৮. শাকসবজির স্যুপ
শাকসবজির স্যুপ পুষ্টিতে ভরপুর এবং সহজে হজম হয়। এটি শরীরকে হাইড্রেট রাখে এবং হারিয়ে যাওয়া ভিটামিন ও খনিজ পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে।
৯. মধু
মধু প্রাকৃতিক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল। এটি গলা ব্যথা উপশম করে এবং কাশি কমায়। গরম পানীয় বা হার্বাল চায়ে মধু যোগ করলে এর কার্যকারিতা বেড়ে যায়।
১০. দই
প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ দই অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। যেহেতু অন্ত্রের সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার গভীর সম্পর্ক রয়েছে, তাই দই খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এতে থাকা প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামও দ্রুত আরোগ্য লাভে সহায়ক।
ডিসক্লেইমার: এই পরামর্শ কোনোভাবেই চিকিৎসকের মতামতের বিকল্প নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য সর্বদা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। দ্য সান ২৪ এই তথ্যের দায় নেবে না।