কী বলেছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা ফজলুর রহমান যা নিয়ে এত আলোচনা

সাবেক সেনা কর্মকর্তা আ ল ম ফজলুর রহমান।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা আ ল ম ফজলুর রহমান।

পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রধান সাবেক সেনা কর্মকর্তা আ ল ম ফজলুর রহমান হঠাৎ করেই আলোচনায়।

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুধারীদের হামলা ২৬ জন নিহতের জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যখন বড় ধরনের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সর্বত্র, তখন ‘সেভেন সিস্টার্স’ হিসেবে পরিচিত ভারতের সাত রাজ্য নিয়ে তার দেওয়া একটি বক্তব্য ঘিরেই এই আলোচনার সূত্রপাত। তার ওই বক্তব্য দেশে যেমন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, তেমনি এ নিয়ে তোলপার চলছে ভারতেও।

বিষয়টি এত দূর গড়িয়েছে যে অন্তর্বর্তী সরকারকে পর্যন্ত বিবৃতি দিয়ে বলতে হয়েছে, ফজলুর রহমানের বক্তব্য সরকারের নয়, তার নিজের। কিন্তু, ঠিক কী বলেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ফজলুর রহমান, যা নিয়ে এত তোলপাড়।

ফজলুর রহমানকে নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত মূলত গত মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল), সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেইসবুকে তিনি এক পোস্ট দেওয়ার পর থেকে। ওইদিন ফেইসবুকে দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, “ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করলে বাংলাদেশের উচিৎ হবে উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্য দখল করে নেয়া। এ ব্যাপারে চীনের সাথে যৌথ সামরিক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন বলে মনে করি।”

তার এই বক্তব্য ফলাও করে প্রচার হয়েছে ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। এসব খবরে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ফজলুর রহমানের পরিচয় হিসেবে লেখা হয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে।

এ নিয়ে  যখন ব্যাপক তোলপাড় চলছে, তখন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়,ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য নিয়ে ফজলুর রহমানের বক্তব্য একেবারেই তার ‘ব্যক্তিগত’ অভিমত।

শুক্রবার দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, “বাংলাদেশ সরকার এটা পরিষ্কার করতে চায়— অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ ল ম ফজলুর রহমান তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টে যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, সেগুলো সম্পূর্ণরূপে তার ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে দেওয়া।”

বাংলাদেশ সরকার এই বক্তব্যকে সমর্থন করে না জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়,“এসব মন্তব্য বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান বা নীতির প্রতিফলন নয় এবং সে কারণে, সরকার কোনোভাবে এই বক্তব্যকে সমর্থন করে না, কিংবা প্রকাশও করে না।”

ফজলুর রহমানের বক্তব্যের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানকে না মেলানোর আহ্বানও জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, “বাংলাদেশ সব দেশের সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

এর আগে বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও সাবেক সেনা কর্মকর্তা ফজলুর রহমানের বক্তব্যকে ‘ব্যক্তিগত’ মতামত হিসেবে অভিহিত করেন।

আরও পড়ুন