বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর’ বক্তব্য দেওয়ার রোশে কক্সবাজারে ভাঙচুর হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশস্থল। বাধার মুখে কক্সবাজার ও চকরিয়ায় সমাবেশ না করে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় কক্সবাজার ছাড়ে দলটির নেতাদের।
শনিবার ঘটনার সূত্রপাত হয় দুপুরে কক্সবাজারের শহীদ দৌলত ময়দানে সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সংগঠক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর এক বক্তব্যকে ঘিরে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমদকে ইঙ্গিত করে সেখানে তিনি বলেন, “আগে আওয়ামী লীগের আমলে নারায়ণগঞ্জে বিখ্যাত গডফাদার শামীম ওসমান ছিল। এখন শুনছি কক্সবাজারে নব্য গডফাদার শিলং থেকে এসেছেন। তিনি ঘের দখল করছেন; মানুষের জায়গা জমি দখল করছেন; চাঁদাবাজি করছেন।”
এই বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু করেন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে চকরিয়ায় পথ সমাবেশ করার জন্য নির্ধারিত সমাবেশস্থলে ভাঙচুর করে মঞ্চ দখলে নেয় বিএনপির নেতাকর্মীদের। পরে অবশ্য ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
কক্সবাজারের সমাবেশ শেষ করে যাত্রাপথে সেখানে সমাবেশ করার কথা ছিল এনসিপির।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুর থেকে মাইকিং করা হচ্ছিল। হঠাৎ বিকেল পৌনে চারটার দিকে কিছু লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মঞ্চে হামলা করলে এনসিপির কর্মীরা পালিয়ে গিয়ে বিভিন্ন ভবনে আশ্রয় নেয়।
পুলিশ ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দিলে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে বিএনপির নেতাকর্মীরা।
কক্সবাজারেও এনসিপির সমাবেশ ঘিরে লাগানো ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে সড়কে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে এদিন। বিকালে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করতে দেখা গেছে।
পর পর দুটি উপজেলায় সমাবেশ করতে ব্যর্থ হয়ে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায় কক্সবাজার থেকে বান্দরবানের পথে রওয়ানা দেয় এনসিপি নেতাকর্মীরা।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব এস এম সুজা উদ্দিন শনিবার বিকেল ৫টায় বলেন, তারা চকরিয়া পার হয়েছেন, কিন্তু কিছু লোক আটকা পড়ে গেছেন।
এর আগে ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে সমাবেশ করতে যাওয়ার আগেও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার জের ধরে স্থানীয়দের তোপের মুখে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে সেখানে থেকে ফিরতে হয়েছিল এনসিপি নেতাদের। ওই সমাবেশকে কেন্দ্র করে সেনা ও পুলিশ সদস্যদের গুলিতে অন্তত পাঁচ জন প্রাণ হারান; গুলিবিদ্ধ হন অর্ধশতাধিক।
রণক্ষেত্রে রূপ নেওয়া জেলাটিতে গত তিন দিন ধরে জারি রয়েছে কারফিউ।