হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে হিযবুত তাহরীর মিছিল, টিয়ারশেল-সাউন্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ

কালিমা খচিত ব্যানার নিয়ে রাজধানীতে হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল

নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীর কোনও কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল পুলিশ। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় ঠিকই মিছিল করেছে হিযবুত তাহরীর। মিছিলটি বিনা বাধায় পল্টন হয়ে বিজয়নগরের যায়। পরে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে মিছিলটি ছাত্রভঙ্গ করে দেয়।

কালিমা খচিত ব্যানার নিয়ে রাজধানীতে হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল

শুক্রবার জুমার নামাজের পর হঠাৎ হিযবুতের একদল সদস্য বায়তুল মোকাররমের উত্তর ফটকের সামনের সড়কে ব্যানার খুলে দাঁড়িয়ে যান। তাদের লাল-কমলা রঙের ব্যানারে লেখা ছিল- নবুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠার দাবিতে মার্চ ফর খিলাফত। এছাড়া ‘মুক্তির এক পথ-খিলাফত খিলাফত’ লেখা আরেকটি ব্যানারও ছিল মিছিলে।

কালিমা খচিত ব্যানার নিয়ে রাজধানীতে হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল

মুহূর্তেই সেই ব্যানারের পেছনে শ খানেক লোক দাঁড়িয়ে যান। পুলিশ গিয়ে সামনে থেকে বাধা দিলেও তারা সেই বাধা ঠেলে মিছিল নিয়ে এগোনো শুরু করে। সাদা, কালো, কমলা কাপড়ে কলেমা লেখা পতাকা ছিল মিছিলকারীদের হাতে।

বায়তুল মোকাররমের উত্তর ফটকের সামনে হিযবুত তাহরীর মিছিলে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ

মিছিলটি পল্টন থেকে বিজয় নগরের দিকে এগোনের কিছুক্ষণ পর চড়াও হয় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ধাওয়া করে মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন তারা। মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেডও ছোড়া হয়। মিছিল থেকে কয়েকজনকে ধরে নিতেও দেখা যায়।

নিষিদ্ধঘোষিত হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ

ধাওয়ার মুখে পল্টনের বিভিন্ন গলিতে ঢুকে যান মিছিলকারীরা। গলিতে ঢুকেও তল্লাশি চালাতে দেখা যাচ্ছে পুলিশ সদস্যদের।

হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড

মিছিল থেকে কতজনকে আটক করা হয়েছে, সে বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিক কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ সদস্যরা পল্টন এলাকায় হ্যান্ড মাইক দিয়ে সবাইকে সরে যেতে বলছিলেন।

নিষিদ্ধঘোষিত হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল থেকে কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ

পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার শাহরিয়ার আলী বলেন, “হিযবুতের মিছিল ছত্রভঙ্গে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে, টিয়ারশেল ছুঁড়েছে। কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।”

ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার স্লোগান তুলে সংগঠিত হিযবুত তাহরীর একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন। বাংলাদেশে ২০০০ সালের দিকে সংগঠনটির তৎপরতা শুরু হয়।

কালিমা খচিত ব্যানার নিয়ে রাজধানীতে নিষিদ্ধঘোষিত হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল

উগ্রবাদী তৎপরতার কারণে মুসলমানপ্রধান বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ হওয়ার পর ২০০৯ সালে বাংলাদেশেও হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ করা হয়।

এরপর বিভিন্ন সময় পোস্টার আর অনলাইনে প্রচারেই সীমিত ছিল সংগঠনটির কার্যক্রম। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সংগঠনটি প্রকাশ্য হয়। গত ৭ আগস্ট সংসদ ভবনের সামনে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশও করে তারা।

কালিমা খচিত ব্যানার নিয়ে রাজধানীতে নিষিদ্ধঘোষিত হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল

তখন হিযবুতের তৎপরতা নিয়ে আলোচনা উঠলেও পুলিশ তথা অন্তর্বর্তী সরকারের কোনও পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

নতুন করে সমাবেশ ডাকার পর বৃহস্পতিবার ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বেআইনি সংগঠন হিসাবে হিযবুতের যেকোনো তৎপরতা প্রতিরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন