‘গেছিলাম আমল করতে, চোরেরা ব্যবসা খুঁজে নিল’

ওয়াজ করছেন মিজানুর রহমান।
ওয়াজ করছেন মিজানুর রহমান।

যশোরে মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিলে গিয়ে শত শত মোবাইল ফোন, স্বর্ণলংকার চুরি হয়েছে। কোতোয়ালি থানায় জিডি করতে রীতিমতো লাইন ধরেছেন ভুক্তভোগীরা। শনিবার বেলা ৩টা পর্যন্ত ৩শ’ জিডি হয়েছে।

আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশন আয়োজিত তিনদিনব্যাপী তাফসিরুল কুরআন মাহফিলের শেষ দিন ছিল শুক্রবার। এদিন রাতে বক্তব্য রাখেন মিজানুর রহমান আজাহারী।

এদিন মুসল্লিদের ঢল নামে সমগ্র মাহফিল এলাকায়। মাহফিল স্থান ছাপিয়ে সড়ক, মহাসড়কেও শিশু, নারী, পুরুষের ভিড় তৈরি হয়।

মাহফিল প্রাঙ্গণে পাঁচ থেকে সাত লাখ মানুষের সমাগম ঘটেছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।

মানুষের এই ভিড়ের সুযোগে একটি চক্র হাতিয়ে নেয় অসংখ্য মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার। চুরির অভিযোগে থানায় জিডি করতে শুক্রবার ভোর থেকে থানায় ভিড় করেন ভুক্তভোগিরা। ভিড় সামলাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয় পুলিশের। শেষ পর্যন্ত লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে জিডি করতে হয়েছে।

মায়ের দেড় ভরি ওজনের একটি গলার হার খোয়া যাওয়ার পর শনিবার দুপুরে জিডি করতে আসেন যশোর সদরের রুপদিয়া থেকে ইব্রাহিম হোসেন।

তিনি বলেন, “আমরা মা মহিলা প্যান্ডেলে বসে আজহারী হুজুরের ওয়াজ শুনছিলেন। এক পর্যায়ে মা গলায় হাত দিয়ে দেখেন হার নেই। তাই থানায় জিডি করতে এসেছি।”

বউয়ের গলার চেইন চুরির ঘটনায় থানায় জিডি করতে আসেন শহরতলী নওয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা হযরত হোসেন।

“এভাবে ওয়াজ মাহফিলে চুরি হওয়ার ঘটনা দুঃখজনক। কর্তৃপক্ষের আরও সর্তক ও ব্যবস্থাপনা ভালো করা উচিত ছিল।”

শহরের বেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, যশোরের ইতিহাসে এমন বড় মাহফিল হয়নি।

“ওয়াজ মাহফিলে গেছিলাম ইমান আমল ঠিক করতে। আর চোরেরা তাদের ব্যবসা খুঁজে নিল। হাজার হাজার মানুষের মোবাইল হারিয়ে যাওয়ার খবর শুনেছি মাহফিলের মাঠেই। অনেকেই দূরদুরান্ত থেকে এসেছেন, তাই জিডি করতে কাগজপত্র দেখাতে না পারায় জিডি করতে পারছে না।”

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান,  মাহফিরের ভিতরে অসংখ্যা মানুষের মোবাইল, স্বর্ণলংকারসহ মুল্যবান জিনিসপত্র হারিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। অনেকেই জিডি করছেন। কয়েকটি চুরির অভিযোগও পেয়েছি। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে।

শুক্রবার গভীর রাত থেকে শনিবার বেলা তিনটা পর্যন্ত স্বর্ণলংকার ও মোবাইল খোয়া যাওয়ার ঘটনায় ৩শ’ জিডি হয়েছে বলে জানিয়েছেন যশোর কোতয়ালি মডেল থানার ডিউটি অফিসার শারমিন আক্তার।

তিনি জানান, শনিবার সকাল থেকে জিডি করতে রীতিমতো ভিড় লেগেছে। জিডির সংখ্যা কয়েক হাজার অতিক্রম করবে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।

আরও পড়ুন