শক্তিশালী দুটি ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, মিয়ানমারে ৭.৭ ও ৬.৪ মাত্রার দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে।
প্রথম কম্পনটি স্থানীয় সময় শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে সাগাইং শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ভূ-পৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানে। প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হানার ১২ মিনিট পরেই দ্বিতীয় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে ভূমিকম্পের শক্তিশালী কম্পনে সড়কগুলো ফেটে গেছে এবং ভবনগুলোর ছাদের অংশ ভেঙে পড়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিয়ানমারের প্রাচীন রাজধানী মান্ডালের প্রকাশিত ছবিতে ভেঙে পড়া ভবনের পাশাপাশি রাস্তায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। শহরটি মিয়ানমারের বৌদ্ধ ঐতিহ্যের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, লোকজনকে মান্ডালে বিমানবন্দরে চিৎকার করতে এবং রানওয়ের মাটিতে বসে থাকতে দেখা যায়। পেছনে একটি জেট বিমান দাঁড়িয়ে ছিল।
সেই সময় তাদেরকে বলতে শোনা যায়, ‘বসে পড়ো! দৌড়াবে না!’
শহরের এক প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে বলেন, “সবকিছু কাঁপতে শুরু করতেই আমরা দৌড়ে বাড়ির বাইরে বের হয়ে যাই। আমি নিজ চোখে একটি পাঁচতলা ভবন ধসে পড়তে দেখেছি। আমার শহরের সবাই রাস্তায় বেরিয়ে এসেছে, কেউই ভবনের ভেতরে ফেরার সাহস পাচ্ছে না।”
শহরের আরেক প্রত্যক্ষদর্শী হেত নাইং ওও রয়টার্সকে জানান, একটি চায়ের দোকান ধসে পড়ায় তার ভেতরে কয়েকজন আটকা পড়েছেন।
তিনি বলেন, “আমরা ভেতরে যেতে পারিনি। পরিস্থিতি খুবই খারাপ।”

ব্যাংককে বহুতল ভবনধস, জরুরি অবস্থা ঘোষণা
মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শক্তিশালী কম্পনে আতঙ্কিত বাসিন্দারা উচ্চ ভবন ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন।
সরকারি কার্যালয় হিসেবে ব্যবহারের জন্য ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছিল। ব্যাংককের উত্তরে ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছিল। ভূমিকম্পের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এটি একেবারে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ভূমিকম্পের তীব্রতায় সুইমিং পুলের পানি উপচে পড়তে দেখা গেছে।

চিয়াং মাই শহরের বাসিন্দা দুয়াংজাই এএফপিকে বলেন, “আমি শব্দ শুনে ঘুম থেকে উঠি, তখনই যতটা দ্রুত সম্ভব পায়জামা পরেই দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে যাই।”
ব্যাংককের চাতুচাক এলাকায় ৩০ তলা একটি নির্মাণাধীন ভবন ধসে পড়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে ৪৩ জন নির্মাণশ্রমিক আটকা পড়েছেন।
ব্যাংককে কিছু মেট্রো ও লাইট রেল সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।