ফিডব্যাকের সুর ‘চুরি’ করেছেন নচিকেতা?

Nachiketa and Sidhu

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গায়ক নচিকেতার চক্রবর্তীর ‘লাল ফিতে সাদা মোজা সু-স্কুল ইউনিফর্ম’ লিরিকের ‘নীলাঞ্জনা’ গানে দুই বাংলার কয়েক প্রজন্মের শ্রোতা বুঁদ হয়ে আছেন তিন দশক ধরে।

এবার সেই গান নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। গানটি বাংলাদেশের ব্যান্ড ‘ফিডব্যাকের’ একটি গানের ‘অনুপ্রেরণায়’ তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেছেন কলকাতার ক্যাকটাস ব্যান্ডের গায়ক সিধু রায়।

সিধুর এই দাবির প্রেক্ষিতে আনন্দবাজারকে নচিকেতা বলেন, “সিধুর যা মনে হয়েছে, সেটাই সে বলেছে।”

তবে ‘নীলাঞ্জনা’ গান নিয়ে সিধুর বক্তব্যের কোনো পাল্টা বক্তব্য নচিকেতা দেননি।

দুই বাংলাতেই স্টেজ শো, কনসার্ট বা রিয়েলিটি শো- নচিকেতা যেখানেই গেছেন সেখানেই গায়ককে ‘নীলাঞ্জনা’ গেয়ে শোনাতে হয়েছে, অথবা গানটি আলোচনায় থেকেছে। ১৯৯৪ সালের পর ‘নীলাঞ্জনা’ নিয়ে তিনটি গান তৈরি করেছেন নচিকেতা; তবে দর্শকপ্রিয়তায় শীর্ষে ধরা হয় প্রথমটি।

কেবল ‘নীলাঞ্জনাই’ নয় নচিকেতা তার বেশ কিছু গানের সুর বিভিন্ন শিল্পীর গান থেকে ‘অনুপ্রাণিত হয়ে’ বেঁধেছেন বলেও মন্তব্য করেছেন সিধু। সে সবের গানের উদাহরণ দিয়েছেন তিনি।

‘টাইম অ্যান্ড টাইড পডকাস্ট উইথ সৌরভ’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সিধু। সেখানে কথায় কথায় নচিকেতার গান নিয়ে কথা বলেন এই গায়ক।

সিধু বলেন, “‘রাজশ্রী অবশ্যই ইনফ্লুয়েন্সড। “নীলাঞ্জনা ১” মানে “হাজার কবিতা বেকার সবই তা” গানটি অবশ্যই বাংলাদেশের ফিডব্যাক ব্যান্ডের গান থেকে নেওয়া। একটা মানুষের জীবনের সবচেয়ে হিট গানটা একটা বাংলাদেশি গানের থেকে অনেকাংশে ইনফ্লুয়েন্সড।’’

এরপর ফিডব্যাকের ‘দিন যায় দিন চলে যায়, রাত যায় রাত চলে যায়, সময় যে বাধা মানে না, এই মনকে বোঝানো যে গেল না’ গানটির কয়েকটি লাইন গেয়ে শোনান সিধু।

‘দিন যায়’ গানের সঙ্গে নীলাঞ্জনা গানটির সুরের কতখানি মিল, সেটা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন তিনি।

সিধু বলেন, “‘নীলাঞ্জনা ১’ কেবল নয় শিল্পীর ‘নীলাঞ্জনা ৩’ও স্প্যানিশ গান থেকে ‘ইনফ্লুয়েন্সড’।”

স্প্যানিশ গানটির কয়েকটি লাইন গেয়েও শোনান। নচিকেতার ‘চল যাব তোকে নিয়ে’ গানের সুরও ব্রিটিশ গায়ক স্টিংয়ের একটি গান থেকে নেওয়া বলে জানিয়েছেন সিধু।

এরপর কলকাতার গায়ক অঞ্জন দত্তের প্রসঙ্গ টেনেছেন সিধু।

তিনি বলেন, “অঞ্জন দত্ত কি নেয়নি সুর? অঞ্জন দত্তও নিয়েছেন। আমার একটা সুর ভালো লাগতেই পারে, কোনো কোনো সুর এতটাই প্রিয় হয়ে যায় যে মনে হয়, এটা নিয়েই কাজ করি। কিন্তু স্বীকারোক্তি করতে কী অসুবিধা আছে? এটা উল্লেখ করে দিতে তো কোনো অসুবিধা নেই যে এই গানটা উনার দ্বারা আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি। এটা বলার মধ্যে কোনো দুর্বলতা নেই। বরং এটা ভাবমূর্তিকে অনেকটা স্বচ্ছ করতে পারে। এই একটা লাইন কেন আমি বলব না?”

পডকাস্টে সিধুর এই বক্তব্যের পর তার সঙ্গে যোগাযোগ করে কলকাতার বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার।

সিধু বলেন, “নচিদাকে প্রচণ্ড শ্রদ্ধা করি। তাকে কেন অপমান করে কথা বলতে যাব।”

সিধুর যুক্তি হল প্রসঙ্গ সূত্রে অন্য শিল্পীদের গান নিয়েও কথা উঠেছিল। সেই সময় তিনি ‘নীলাঞ্জনা’ নিয়ে বক্তব্য রাখেন।

আর নচিকেতার কথায়, “দেখুন, আমার অনেক ভক্ত। অনেকেই নিজেকে আমার অনুরাগী বলে দাবি করেন। তারা কে, কী করছেন বা বলছেন, এত কি দেখা সম্ভব? কাকেই বা বলব? আমার হাতে এত সময় নেই।”

আরও পড়ুন