বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে প্রতিবছর রাজধানীতে হওয়া ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নামে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
শুক্রবার চারুকলা অনুষদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মঙ্গল শোভাযাত্রার নতুন নাম হবে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে কিছু করা না করার জন্য সম্প্রতি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছিল দেশের ইসলামী দলগুলো। এমন প্রেক্ষাপটে শুক্রবার পহেলা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদ্যাপনের বিভিন্ন দিক জানাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনের কথা জানানো হলো।
স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে গত শতকের আশির দশকের শেষ দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার উদ্যোগে বের হওয়া আনন্দ শোভাযাত্রাই পরে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ হিসেবে পরিচিতি পায়। ইউনেসকো ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে।
এর আগে চলতি বছরের পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যায়িত করে এবারের বৈশাখের আয়োজন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থীরা, রীতি অনুযায়ী যাদের তত্ত্বাবধানে হওয়ার কথা ছিল এবারের আয়োজন।
গত ২৬ মার্চ চারুকলার ২৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়ে জানান, এবারের বৈশাখের আয়োজনের সঙ্গে তাদের কোনো প্রকার সম্পৃক্ততা নেই।
নাম বদলের বিষয় নিয়ে নানা মহল থেকে ওঠেছে প্রশ্ন, সেই প্রশ্নে তেড়ে-ফুঁড়ে গিয়েছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দিকেও।
এ প্রসঙ্গে উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, “এই শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্যে দুটো মেসেজ (বার্তা) আছে। একটি হচ্ছে, একটি নিবর্তনমূলক স্বৈরাচারীব্যবস্থার অবসান। রাজনৈতিক ও সামাজিক নিবর্তনমূলক স্বৈরাচারীব্যবস্থার বিরুদ্ধে মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ, সেই বিষয়টি তুলে ধরা। কিছু মোটিফ সেই কাজটি করছে। আর দ্বিতীয় যে অংশটি আছে, সেটি হচ্ছে মূলত ঐক্যের ডাক, সম্প্রীতির ডাক।”