‘জামায়াত’কে রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে বলেছে এনসিপি

jamat-ncp

একাত্তরে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান করেছিল এবং যাদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে- তাদের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে বলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি।

সোমবার এক বিবৃতিতে এনসিপি বলছে, “যারা ১৯৭১ সালে এই জনপদের মানুষের জনযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছিল এবং যাদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে, আমরা চাই তারা নিজেদের সুস্পষ্ট রাজনৈতিক অবস্থান জাতির সামনে ব্যাখ্যা করে জাতীয় সমঝোতা ও ঐক্যকে সুদৃঢ় করবে এবং চব্বিশের অভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নে সহযোগী হবে।”

জামায়াতে ইসলামীর নাম না নিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, এনসিপি মনে করে, বাংলাদেশের মানুষের ঐতিহাসিক সংগ্রামের অধ্যায় তথা, ১৯৪৭, ১৯৭১ এবং ২০২৪ এর যথাযথ স্বীকৃতি এবং মর্যাদা বাংলাদেশে ‘রাজনীতি করার পূর্বশর্ত’।

নতুন এই রাজনৈতিক দল বলছে, “যারা ১৯৭১ সালে এই জনপদের মানুষের জনযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছিল এবং যাদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে, আমরা চাই তারা নিজেদের সুস্পষ্ট রাজনৈতিক অবস্থান জাতির সামনে ব্যাখ্যা করে জাতীয় সমঝোতা ও ঐক্যকে সুদৃঢ় করবে এবং চব্বিশের অভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নে সহযোগী হবে।”

“আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছি জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপির কোনো সদস্য সাম্প্রতিক আন্দোলনে দলীয় স্লোগান কিংবা এই জনপদের মানুষের সংগ্রাম ও ইতিহাসবিরোধী কোনো স্লোগান দেয়নি।”

দলটি বলছে, “এনসিপিকে এর সাথে জড়ানো সম্পূর্ণ অহেতুক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। বরং এনসিপি সদস্যদের বক্তৃতা ও স্লোগানে এই জনপদের মানুষের ঐতিহাসিক সংগ্রামের অধ্যায়সমূহ তথা ১৯৪৭, ১৯৭১, এবং ২০২৪ এর প্রতিফলন ছিল।”

জাতীয় সংগীত বিতর্কে এনসিপি বলছে, “আন্দোলনকারীরা জাতীয় সংগীত পরিবেশনার সময় একটি পক্ষ আপত্তি জানালেও তারা দৃঢ়তার সাথে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে।”

এনসিপি বলছে, “যেসব আপত্তিকর স্লোগান নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, তার দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট পক্ষটিকেই বহন করতে হবে।”

এনসিপির আন্দোলনে সঙ্গী হওয়া সংগঠনগুলোর উদ্দেশে দলটির ভাষ্য, “বিগত ফ্যাসিবাদী জমানায় নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে বাংলাদেশের নাগরিকদের পক্ষে চব্বিশের অভ্যুত্থানে যারা ভূমিকা পালন করেছেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে তাদেরকে আবশ্যিকভাবে ‘বাংলাদেশপন্থি’ ভূমিকা পালন করে যেতে হবে।”

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লার ডাকে গত বৃহস্পতিবার রাতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। প্রথমে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা, পরে মিন্টো রোডের প্রবেশমুখের ফোয়ারা এবং সবশেষ গত শুক্রবার বিকাল থেকে শাহবাগ চত্বর দখল করে আন্দোলন চলে।

পরে শনিবার রাতে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত হলে আন্দোলনের সফল সমাপ্তি ঘটে।

এই আন্দোলনের দ্বিতীয় দিন শাহবাগের গণজমায়েত থেকে- ‘গোলাম আজমের বাংলায়- আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই। সাঈদীর বাংলায়, আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই’

স্লোগান দেওয়া হয়, যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

আর শনিবার আন্দোলনের বিজয় ঘোষণার প্রাক্কালে এনসিপি নেতারা জাতীয় সংগীত গাইতে শুরু করলে কিছু যুবক চিৎকার করে বলতে থাকে– ‘জাতীয় সংগীত হবে না’। গান থামাতে ব্যর্থ হয়ে তারা ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগান দেয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads