বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ বাড়িয়েছে নয়াদিল্লি। ভারতের আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই বিষয়টি করা হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির একাধিক সংবাদ মাধ্যম।
ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, দিল্লির ‘ফরেন রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (এফআরআরও)’ শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের অনুমতির মেয়াদ আরও বাড়িয়েছে।
তবে তাদের কোনো কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করেননি এবং তারা তথ্যটির বিস্তারিতও জানাননি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো নিজস্ব কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ফরেন রিজিয়নাল রেজিস্ট্রেশন অফিসে আসা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনাকে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
এর আগেও এফআরআরওর মাধ্যমেই শেখ হাসিনাকে ভারতে থাকার বৈধতা দেওয়া হয়। দেশটিতে উদ্বাস্তু সংক্রান্ত আইন না থাকায় এমন পদক্ষেপে নেওয়া হয়।
দু’দিন আগেই হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরানোর জন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাসিনা এবং সহঅভিযুক্তদের ট্রাইব্যুনালের সামনে হাজির হতেও বলা হয়।
আর একদিন আগেই জুলাই-আগস্ট গণহত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করে বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকার। এতে ফের শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
এদিকে আনন্দবাজার প্রত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি ‘কূটনৈতিক’ নয়, ‘আইনি’। কোনও অন্তর্বর্তী সরকার অন্য রাষ্ট্রের স্থায়ী সরকারের কাছে কোনও রাজনৈতিক নেতার প্রত্যর্পণ চাইলে, তার সমস্ত আইনি দিক খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলেই বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে। ফলে, হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের পাঠানো কূটনৈতিক বার্তার (নোট ভার্বাল) উত্তর অবশ্যই দেওয়া হবে ‘যথাসময়ে’। কিন্তু তার জন্য কোনও তাড়াহুড়ো করা হবে না।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রের উদ্ধৃত করে পত্রিকাটি আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশের বার্তার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে জবাব দিতে কয়েক মাসও লেগে যেতে পারে। আর সে কারণেই হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
দিল্লির ‘ফরেন রিজিয়নাল রেজিস্ট্রেশন অফিসের’ (এফআরআরও) মাধ্যমে আবেদন করিয়ে ভারতে থাকার কাগজ বৈধ করে নেওয়া হয়েছে।
শুধুমাত্র একটি ‘নোট ভার্বাল’ দিয়েই দিল্লির কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়েছিল ঢাকা।
সাউথ ব্লকের একটি সূত্রের বক্তব্য, এই দাবিকে পোক্ত করতে সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এই ধরনের প্রত্যর্পণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আইনি দিক থাকে। দিল্লির দাবি, সেই খুঁটিনাটির দিকে নজর দেওয়া হয়নি।