‘পদ বাড়িয়ে সমঝোতার চেষ্টা নতুন দলে’

newspaper

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে গঠিত নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে বুধবার। এ সংক্রান্ত খবর বৃহস্পতিবার গুরুত্ব পেয়েছে বাংলাদেশের বেশিরভাগ সংবাদপত্রে। এ ছাড়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের আমলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি সংক্রান্ত সংবাদও গুরুত্ব পেয়েছে কোনো কোনো সংবাদপত্রে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বৃহস্পতিবার কোন সংবাদপত্রের কী শিরোনাম এসেছে।

প্রথম আলো

ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘিরে বুধবার বিক্ষোভ-হাতাহাতি হয়েছে, যে খবরটিকে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘নতুন ছাত্রসংগঠনের যাত্রা শুরু, পদ নিয়ে বিক্ষোভ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের উদ্যোগে গঠিত নতুন ছাত্রসংগঠনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’।

সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকের শিক্ষার্থী আবু বাকের মজুমদার। সদস্যসচিব করা হয়েছে আরেক সাবেক সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ আহসানকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন করে গতকাল বুধবার নতুন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি স্লোগান, বিক্ষোভ, ধস্তাধস্তি এবং পরে অন্তত দুই দফা মারামারির ঘটনা ঘটেছে। মারামারিতে আহত অন্তত দুজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিশু আলী ও আকিব আল হাসান।

কালের কণ্ঠ

ছাত্রদের নেতৃত্বে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ নিয়ে প্রধান  প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠও। ‘নতুন দলের নেতৃত্বে নাহিদ-আকতার’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আকতার হোসেনের নেতৃত্বেই আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল। এ ছাড়া দলটিতে মুখপাত্র ও মুখ্য সংগঠকের পদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমই চূড়ান্ত। তবে নতুন সৃজন করা জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব পদে পরিবর্তন আসছে বলে জানা গেছে।

নতুন দলের নেতৃত্বে নাহিদ-আকতার এই দুটি পদে শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি ও জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জোনায়েদ এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নাম আলোচনায় ছিল।

সমকাল

নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশজনিত খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকালও। ‘পদ বাড়িয়ে সমঝোতার চেষ্টা নতুন দলে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার পতন ঘটানো গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দলে প্রধান সমন্বয়কারী পদ সৃষ্টি করে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। এ টানাপোড়েনের মধ্যেই গতকাল বুধবার মারামারিতে আত্মপ্রকাশ করেছে গণঅভ্যুত্থানের সমন্বয়কদের নতুন ছাত্র সংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’। নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একচেটিয়া প্রাধান্যে বিক্ষোভ করেন গণঅভ্যুত্থানে প্রতিরোধ গড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ছাত্র সংগঠনের মতো তরুণদের রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব নিয়েও চলছে বিরোধ। এতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক দুই নেতা নতুন দলে যোগ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তাদেরসহ বিক্ষুব্ধদের ফেরানোর চেষ্টা করছেন দলের নেতৃত্ব নিতে যাওয়া সদ্য সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।

ইত্তেফাক

ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘিরে হাতাহাতি ও বিক্ষোভের ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন হিসেবে ছেপেছে ইত্তেফাকও। ‘বিক্ষোভ-সংঘাতে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আত্মপ্রকাশ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শীর্ষ পদ নিয়ে দুই পক্ষের পালটাপালটি অবস্থান, হাতাহাতি, বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন ছাত্রসংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের উদ্যোগে গঠিত এই ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হয়েছেন আবু বাকের মজুমদার। আর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন জাহিদ আহসান। গতকাল বুধবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন করে এই সংগঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়। নতুন ছাত্রসংগঠনের শীর্ষ ছয় নেতার মধ্যে পাঁচ জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জন।

যুগান্তর

দুর্নীতি প্রতিরোধে দেশের একমাত্র সংবিধিবদ্ধ সংস্থা দুর্নীতি দমন কমিশনের ‘দুর্নীতি’ সংক্রান্ত খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘দায়মুক্ত ৩ হাজার দুর্নীতিবাজ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্নীতি প্রতিরোধে দেশের একমাত্র সংবিধিবদ্ধ সংস্থা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অথচ পতিত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংস্থাটি ছিল বড় দুর্নীতিবাজদের ‘রক্ষাকবচ’। তখন ‘রাঘববোয়াল’ হিসাবে পরিচিত প্রায় তিন হাজার ব্যক্তিকে দায়মুক্তি বা ‘ক্লিনচিট’ দেওয়া হয়েছে। তাদের কারও কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে অনুসন্ধান পর্যায়ে তা নথিভুক্ত করা হয়। আবার অনেকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুর্নীতির সত্যতা পাওয়ায় মামলা করা হলেও তদন্তের পর ফাইনাল রিপোর্ট ট্রু (এফআরটি) এর মাধ্যমে দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। প্রভাবশালী অনেকেই তিন-চার দফায় দায়মুক্তির সনদ বাগিয়ে বহাল তবিয়তে ছিলেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন তাদের অনেকের বিরুদ্ধে নতুন করে অনুসন্ধান ও মামলা হচ্ছে। একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বণিক বার্তা

কৃষিপণ্যের বাজার ও এর আমদানি নির্ভরতা বিষয়ক সংবাদ দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা। ‘কৃষি খাদ্যপণ্যের বাজার প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলারের, আমদানির প্রয়োজন পড়ে ৫ বিলিয়নের’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বলা হলেও আমদানিনির্ভরতা এখনো প্রকট। পরিসংখ্যান বলছে, দেশে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের বাজারের আকার প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। তবে খাদ্য চাহিদা মেটাতে আমদানি করা হয় আরো প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের কৃষিপণ্য। সে হিসাবে দেশে মোট কৃষিপণ্যের বাজারের আকার ১৫ বিলিয়ন ডলারের মতো। ফলে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বলা কতটুকু যুক্তিসংগত, সে প্রশ্ন তুলছেন বিশ্লেষকরা। আমদানির বিকল্প হিসেবে কৃষিপণ্য উৎপাদনে আরো জোর দেয়ার তাগিদ দিচ্ছেন কৃষি অর্থনীতিবিদরা।

কৃষি খাতের বড় উদ্যোক্তারা বলছেন, দেশের চাহিদা মেটাতে ক্ষেত্রবিশেষে ৪০-৮০ শতাংশ পর্যন্ত কৃষিপণ্য আমদানি করতে হয়। সে হিসেবে খাদ্যের একটি বড় অংশই আনতে হয় বিদেশ থেকে। এর পরও দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বলাটা অযৌক্তিক বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। মূলত এ নিয়ে একটি মিথ্যা বয়ান তৈরি করা হয়েছে, যা প্রায়ই সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে শোনা যায়।

নয়া দিগন্ত

স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি বিষয়ক সংবাদ দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়াদিগন্ত। ‘স্বাধীনতার সূচকে সবচেয়ে বেশি উন্নতি বাংলাদেশের’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক স্বাধীনতার সূচকে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৪০, গেল বছর তা ৪৫-এ দাঁড়িয়েছে। স্কোরের উন্নতির ফলে ২০২৪ সালের স্বাধীনতা সূচকে সবচেয়ে বেশি উন্নতি হওয়া চার দেশের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। এ তালিকার বাকি তিনটি দেশ হচ্ছে ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও সিরিয়া।

গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন-ভিত্তিক গণতন্ত্রপন্থী গবেষণা সংস্থা ফ্রিডম হাউজের প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থাটি বলেছে, তাদের বার্ষিক ‘ফ্রিডম ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ সূচকে গত বছর বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতা হ্রাস পেয়েছে এবং ক্ষমতাসীন কর্তৃত্ববাদী শাসকরা তাদের হাত আরও শক্ত করে তুলেছে। তবে দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে স্বাধীনতা চর্চায় বেশ আশার আলো দেখা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বের ২০৮টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে ৬০টিতে রাজনৈতিক অধিকার এবং নাগরিক স্বাধীনতার অবনতি ঘটেছে। তবে এই দুই অধিকারের চর্চার উন্নতি ঘটেছে মাত্র ৩৪টি দেশ ও অঞ্চলে। গত বছর সবচেয়ে বেশি স্কোর হ্রাস পেয়েছে এল সালভাদোর, হাইতি, কুয়েত এবং তিউনিসিয়ার।

বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা প্রসঙ্গে ফ্রিডম হাউজ প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রেণীতে অবস্থান পরিবর্তন না হলেও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনের এ দুই দেশের বড় ধরনের উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশে গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি প্রায় ১৫ বছর বাংলাদেশের ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে ছিলেন। ফ্রিডম হাউজের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ও সিরিয়া প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, যদিও উভয় দেশেই সরকার পতনের পর দ্রুত নাগরিক স্বাধীনতার মান উন্নত হয়েছে। তবে রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বে এ উন্নয়ন দেখতে আরও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।

দেশ রূপান্তর

আওয়ামী লীগের আমলে খেলাপি ঋণ নিয়ে ‘কারসাজি’ সংক্রান্ত খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘কারসাজি করে খেলাপি ঋণ কম দেখাত আ.লীগ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংক থেকে লুটেরা গোষ্ঠীর লুটপাটের তথ্য আওয়ামী শাসনামলের ১৬ বছরে আড়াল করে রাখা হয়েছিল। নামে-বেনামে নেওয়া বিপুল পরিমাণ ঋণ অনেক আগেই খেলাপি হয়ে পড়েছিল। কিন্তু অবলোপন ও বারবার পুনঃতফসিলীকরণের মাধ্যমে এসবকে নিয়মিত দেখানো হচ্ছিল। রাজনৈতিক পট বদলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশিত হচ্ছে লুটপাটের প্রকৃত চিত্র। বর্তমানে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ প্রায় সাড়ে তিন লাখ কোটির কাছাকাছি চলে গেছে। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। এ সময় ডেপুটি গভর্নরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। যা মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় ২০ দশমিক ২ শতাংশ। আলোচ্য সময় শেষে ব্যাংক খাতের ঋণস্থিতি ছিল ১৭ লাখ ১১ হাজার ৪০২ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকে মোট বিতরণ করা ঋণের মধ্যে খেলাপি ঋণের হার কিছুটা বেড়েছে। এই হার আগের প্রান্তিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) থেকে কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৪২ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে এই হার ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ।

আজকের পত্রিকা

ছাত্রদের নেতৃত্বে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ এবং দেশের রাজনীতিতে এর প্রভাব সংক্রান্ত সংবাদ দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘ভোটের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের বিদায়ঘণ্টা বাজানো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জাতীয় নাগরিক কমিটির সঙ্গে এক হয়ে নতুন রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করছেন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তাদের এই নতুন দল গঠন দেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ভোটের মাঠে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর পাশাপাশি নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান নিয়ে আগ্রহ আছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদেরও।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনই এখন রাজনীতির প্রধান আলোচনা। সেই নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ভোট দূরে থাক, রাজনীতির আলোচনা থেকেই অনেকটা দূরে আছে জাতীয় পার্টি। এই অবস্থায় নতুন দলই আগ্রহের কেন্দ্রে চলে এসেছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতাদের নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হতে যাচ্ছে কাল শুক্রবার। এদিনই আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন এই দলের নাম, নেতৃত্ব ও কমিটি ঘোষণার কথা রয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা ছাত্রনেতারাই নতুন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পদগুলোয় আসছেন। নতুন দলের নেতৃত্ব দিতে এরই মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে সরে গেছেন নাহিদ ইসলাম। সব ঠিক থাকলে এই দলের আহ্বায়ক হতে যাচ্ছেন তিনিই। সদস্যসচিব পদে সমঝোতার ভিত্তিতে এই পদে আখতার হোসেনের নাম অনেকটাই চূড়ান্ত। তিনি এখন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব। দলের মুখ্য সংগঠক ও মুখপাত্র পদে দেখা যেতে পারে সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে।

ডেইলি স্টার

খেলাপি ঋণ সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যের ভিত্তিতে করা সংবাদ দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার। ‘True extent of bad loans emerges’ বা ‘খেলাপি ঋণের প্রকৃত পরিমাণ বেরিয়ে এসেছে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ রেকর্ড তিন লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকায় পৌঁছেছে ২০২৪ সালের শেষে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, মোট ঋণের ২০.২০ শতাংশ এখন খেলাপি। রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর এই সংকট আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল দুই লাখ ৮২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা, যা পরবর্তী তিন মাসে ৬০ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা বেড়ে গেছে। পুরো ২০২৪ সালে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দুই লাখ ১৩২ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, আগের সরকারের সময়ে অনেক তথ্য গোপন থাকলেও এখন প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ পেয়েছে। বিশেষ করে, সিটি ব্যাংক, সোনালী ব্যাংকসহ কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ ঋণ খেলাপি হয়েছে। শরিয়াহভিত্তিক কিছু ব্যাংকে এস আলম গ্রুপের প্রভাব ছিল, যেখানে ঋণ অনিয়মিত হয়েছে। বেক্সিমকো গ্রুপের ২৩ হাজার কোটি এবং এস আলম গ্রুপের ১০ হাজার ২০০ কোটি ঋণ এখন খেলাপি। এছাড়া, আননটেক্স এবং ক্রিসেন্ট গ্রুপও বড় খেলাপি ঋণগ্রহীতা।

আরও পড়ুন