যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের কারণে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য নিয়ে অনিশ্চয়তা ‘আক্ষরিক অর্থেই সীমা ছাড়িয়েছে’, তবে এর কারণে বিশ্বব্যাপী মন্দা দেখা দেবে না বলে মনে করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
আন্তর্জাতিক সংস্থাটি বলছে, ‘বাণিজ্যিক উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে’ বিশ্বব্যাপী শেয়ারের দাম কমেছে এবং দেশগুলোর মধ্যে ‘বিশ্বাসের ঘাটতি’ তৈরি হয়েছে। তবে এর কারণে বৈশ্বিক মন্দার ঝুঁকি নেই।
আইএমএফ মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের কারণে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমবে, তবে এতে মন্দা হবে না।
এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘লিবারেশন ডে’ শুল্ক ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্টি অনিশ্চয়তার মধ্যে সংস্থাগুলো ব্যয় এবং বিনিয়োগ কমানোর কারণে এবং কিছু দেশ ট্রাম্পের শুল্কের নিজস্ব প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন সংস্থা যখন বৈশ্বিক মন্দার আভাস দিচ্ছে, ঠিক তখনই বৈশ্বিক অর্থনীতি নিয়ে আইএমএফের এই মতামত সামনে এলো।
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে স্টক মার্কেটগুলোর সূচক দ্রুত কমে যায়, যার অনেকগুলো এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। যুক্তরাজ্যের বৃহত্তম সংস্থাগুলোর এফটিএসই ১০০ সূচক এখনও এক মাস আগের তুলনায় ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কম।
গত বুধবার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) আভাস দেয়, ট্রাম্পের শুল্কের কারণে এ বছর বিশ্ব বাণিজ্য হ্রাস পাবে। এর আগে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের পক্ষ থেকে অনুরূপ ইঙ্গিত আসে, যেখানে বলা হয়, শুল্ক থেকে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনা ‘বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ও আর্থিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যমাত্রায় বাড়িয়েছে’।
এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) জানায়, ‘ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনার কারণে’ তারা তাদের মূল সুদের হার কমিয়েছে।
তবে এক্ষেত্রে আইএমএফের দৃষ্টিভঙ্গি অন্যদের চেয়ে আলাদা। বৃহস্পতিবার আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেন, “আরও ভারসাম্যপূর্ণ, আরও স্থিতিস্থাপক বিশ্ব অর্থনীতি নাগালের মধ্যে রয়েছে। এটি সুরক্ষিত করতে আমাদের অবশ্যই কাজ করতে হবে। অনিশ্চয়তার প্রতিক্রিয়ায় সব দেশকে তাদের নিজস্ব ঘর গোছানোর প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে হবে।”
তিনি বিশেষভাবে ইউরোপকে তাদের ‘অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের ওপর বিধিনিষেধ’ কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, চীনের সামাজিক সুরক্ষা জাল বাড়ানো দরকার, যাতে ‘সতর্কতামূলক সঞ্চয়’ কম হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের তাদের ঋণ কমানো দরকার।