ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ‘বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে’ এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
বাংলাদেশের একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে সম্পর্কের নানা দিক ছাড়াও ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর বাংলাদেশের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
জেনারেল ওয়াকার মনে করিয়ে দিয়েছেন, সাধারণ মানুষ যেন মনে না করেন যে বাংলাদেশের উপর ভারত কর্তৃত্ব করছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মাস দুয়েক আগে ২০২৪ সালের ২৩ জুন পদোন্নতি পেয়ে ১৮তম সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেন ওয়াকার-উজ-জামান। এর আগে তিনি চীফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) এর দায়িত্বে ছিলেন।
প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী রাষ্ট্র। বাংলাদেশ অনেক বিষয়েই ভারতের উপর নির্ভর করে। আবার ভারতও কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের থেকে সুবিধা পায়।
ওয়াকার বলেন, এটা একটা দেওয়া–নেওয়ার সম্পর্ক। পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে সম্পর্ক এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ প্রতিবেশীদের বিষয়ে সচেতন মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রতিবেশীদের সঙ্গে এমন কিছু করবে না, যা সেই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থের পরিপন্থী।
পাশাপাশি প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোকেও এবিষয়ে সচেতন থাকার তাগিদ দেন সেনাপ্রধান।
সরাসরি কোনও প্রতিবেশী দেশের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, “সীমান্তে আমাদের লোকজনকে হত্যা করবে না। আমরা প্রাপ্য পানি পাব। এতে তো কোনও অসুবিধা নেই।”
পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন ওয়াকার।
“ভারতের অনেকেই বাংলাদেশে কাজ করছেন। আবার বাংলাদেশ থেকেও অনেকে চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। ভারত থেকে পণ্যও কিনছে বাংলাদেশ। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার সঙ্গে ভারতের স্বার্থ জড়িত রয়েছে।”
বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের জেরে গত ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগের সরকারের। তার পর থেকে হাসিনা ভারতে রয়েছেন। এরই মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কয়েকশ’ মামলা হয়েছে। জারি হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা।
সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘুদের উপর, বিশেষ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপর সহিংসতাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে দেখা দিয়েছে টানাপড়েন, যদিও ইউনূস প্রশাসন বরাবরাই সহিংসতার কথা অস্বীকার করে আসছে।