গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন্য দেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে আছে বলে মনে করেন বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া।
বৃহস্পতিবার লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বিএনপির বর্ধিত সভায় যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, “ইতিবাচক গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে দেশের মানুষ। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সংকীর্ণতাকে ভুলে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের কাজ করতে হবে।”
গণঅভ্যুত্থানের অর্জনকে নস্যাতে ‘গভীর চক্রান্ত’ চলছে দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, “এখনো ফ্যাসিস্টদের দোসররা এবং বাংলাদেশের শত্রুরা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্জনকে নস্যাৎ করার জন্য গভীর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। ইস্পাত-কঠিন ঐক্যের মাধ্যমে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিতে হবে। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।”
দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আসুন আমরা আগামী দিনগুলোতে শহীদ জিয়ার স্বপ্নের আধুনিক, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করি এবং এত ত্যাগের বিনিময়ে প্রাপ্ত এই অর্জনকে সুসংহত এবং ঐক্যকে আরও বেগবান করি।”
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি যুক্তরাজ্য থেকে অসুস্থ অবস্থায় আপনাদের আহ্বান জানাতে চাই- আসুন জনগণকে সম্পৃক্ত করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে পূর্বের ন্যায় আন্দোলন, সংগ্রাম ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব প্রদানে আরও ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহতভাবে গড়ে তুলি।”
বর্ধিত সভায় যোগ দেওয়া দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে আহ্বান রাখতে চাই, আসুন প্রতিহিংসা-প্রতিশোধ নয়, পারস্পারিক ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে আমরা সকলে মিলে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটি বাসযোগ্য, উন্নত ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করি।”
জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল সংলগ্ন মাঠে বিএনপির বর্ধিত সভা শুরু হয় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে। সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
‘সুদৃঢ় ঐক্যই রুখে দিতে পারে সকল ষড়যন্ত্র’ স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে এবারের বর্ধিত সভা করছে বিএনপি। তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত ৬ স্তরের সাড়ে ৩ হাজার নেতা এই বর্ধিত সভায় অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সকাল ১০টায় সভা শুরুর কথা থাকলেও বেলা ১১টার দিকে এটি শুরু হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টা থেকেই আমন্ত্রিত নেতারা এলডি হল সংলগ্ন মাঠে আসতে শুরু করেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সভা শুরু হয়। এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালনের জন্য শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এরপর সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর জানায়, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সকল কর্মকর্তা ও সদস্যরা, সকল মহানগর, জেলা, থানা-উপজেলা-পৌর কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবরা বর্ধিত সভায় রয়েছেন।
এ ছাড়া বিএনপির ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবরাও আছেন। ২০১৮ সালের একাদশ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী এবং মনোনয়ন ইচ্ছুক যেসব প্রার্থী প্রাথমিক পত্র পেয়েছিলেন তারাও এই সভায় রয়েছেন।