এ যেন সিনেমার দৃশ্য! একটি প্রাইভেট কারের পেছনে, গাড়ির দুই পাশে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়া হচ্ছে। গুলিতে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পেছনের কাচ। এভাবে গোলাগুলিতে নিহত হয় ওই প্রাইভেট কারের দুই আরোহী। এর মধ্যে ছিলেন প্রাইভেট কারের চালক।
সিনেমার দৃশ্যের মতো শোনা গেলেও এমন ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামে। প্রাইভেট কারে এলোপাতাড়ি গুলিতে দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুজন।
শনিবার রাত পৌনে তিনটার দিকে নগরীর চকবাজার থানার চন্দনপুরায় বাকলিয়া এক্সেস রোডের মুখে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহতরা হলেন, বখতেয়ার উদ্দিন মানিক ও মো. আবদুল্লাহ। তাদের বয়স আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এদের মধ্যে মানিকের বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ও আবদুল্লাহ’র বাড়ি হাটহাজারী উপজেলায়। মানিক প্রাইভেট কারটি চালাচ্ছিলেন।
আহতরা হলেন, রবিন ও হৃদয়। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রুপালি রঙের একটি প্রাইভেট কার কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে বাকলিয়া এক্সেস রোডে আসতে থাকে। গাড়িটি এক্সেস রোডের মুখে প্রবেশের পরপর পেছন দিকে তিন থেকে চারটি মোটরসাইকেল সেটিকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। প্রাইভেট কারের ভেতর থেকে মোটরসাইকেল আরোহীদের লক্ষ্য করে কয়েকটি গুলি ছোড়া হয়। তবে মোটরসাইকেল আরোহীদের কাছে অস্ত্রের সংখ্যা ছিল বেশি। সবার মাথায় ছিল হেলমেট। প্রতিটি মোটর সাইকেলে দুজন করে ছিল। তারা প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে অনবরত গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে কারটিকে ধাওয়া দেয়। এসময় কারের আরোহীদের বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকে।’

নগরীর চকবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহেদুল কবীর জানান, রাজাখালী এলাকা থেকে প্রাইভেট কার লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে ধাওয়া করা হয়। কারটি বাকলিয়া এক্সেস রোড দিয়ে ঢোকে। মোটর সাইকেল থেকে অনবরত ছোঁড়া গুলির মুখে একপর্যায়ে এক্সেস রোডের অপরপ্রান্ত চন্দনপুরায় এসে কারটি থেমে যায়।
তখন গুলিতে কারের আরোহীদের মধ্যে দুজন নিহত ও দুজন আহত হন বলে ওসি জানান।
ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, চট্টমেট্রো-গ ১২-৯০৬৮ নম্বরের সিলভার রঙের প্রাইভেট কারটি সড়কের একপাশে রাখা আছে। কারের পেছনের অংশে গুলির দাগ। এছাড়া চালকের আসনে রক্তের দাগ দেখা গেছে।
গত ১৫ মার্চ ঢাকার বসুন্ধরা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ এবং তার প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলার অনুসারীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে।
সাজ্জাদকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়া বাবলার এক অনুসারীকে হত্যার উদ্দেশ্যে ওই প্রাইভেট কারে হামলার বিষয়টি শোনা গেলেও ওসি জাহেদুল কবীর তদন্তের আগে এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।
ঘটনাস্থলে এসে সিআইডির ক্রাইম সীন ইউনিট আলামত সংগ্রহ করেছে।