বাংলাদেশ থেকে ১৭ হাজার ৭৭৭ শ্রমিকের মালয়েশিয়ায় না যাওয়ার দায় রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর ওপর বর্তায় বলে জানিয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
একইসাথে, হাইকোর্ট মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা ১৭ হাজার ৭৭৭ শ্রমিকের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে সরকারের নেয়া ব্যবস্থা জানতে চেয়েছে।
রোববার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
পরে রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরও যেতে না পারাদের টাকা ফেরত দেওয়া এবং তাদের মালোয়েশিয়ায় যাওয়ার বিষয়ে অগ্রগতি ২৭ আগস্টের মধ্যে জানাতে বলেছেন উচ্চ আদালত।
ভুক্তভোগী শ্রমিকদের অর্থ ফেরত দেয়া হয়েছে কিনা এবং মালয়েশিয়ায় যাওয়ার প্রক্রিয়ায় কোন অগ্রগতি হয়েছে কিনা তাও জানতে চেয়েছে আদালত।
আগামী ২৭ আগস্টের মধ্যে প্রবাসী কল্যাণ সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বছরের ২৪ জুন মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর ঘটনায় ভুক্তভোগীদের জীবন ধ্বংসের জন্য কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা ও খামখেয়ালিপনাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা ১৭,৭৭৭ শ্রমিকের টাকা সুদসহ ফেরত কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে, ঘটনার অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতি তিন মাস অন্তর আপডেট রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশনা দেয় আদালত।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে ,মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করা দরকার। যাতে চাহিদাপত্র ইস্যু থেকে কর্মীর বিদেশ গমন ও পরবর্তী পরিস্থিতি তদারকি করা যায়। এই সিস্টেমে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ, বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসমূহ এবং রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহ সংযুক্ত থাকতে পারে।
মন্ত্রণালয় হতে নিয়োগানুমতি গ্রহণের পর বিএমইটি’র ক্লিয়ারেন্স কার্ড গ্রহণ এবং কর্মী প্রেরণের বিষয়টি নির্দিষ্টকরণ করা। রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহ কর্তৃক অভিবাসী কর্মীদের নিকট থেকে অভিবাসন ব্যয় গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং ই-ভিসা প্রাপ্ত যে সকল কর্মী মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে পারেননি, তাদের বিষয়ে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্তৃক সে দেশের সরকারের সাথে কূটনৈতিক যোগাযোগ অব্যাহত রাখা।
দীর্ঘদিন বন্ধের পর ২০২২ সালের আগস্টে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের পথ উন্মুক্ত হয়।
২০২৪ সালের ৩১ মে পর্যন্ত ১০১টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে পৌনে পাঁচ লাখ কর্মী দেশটিতে পাড়ি দেন। তবে টিকিট জটিলতায় যেতে পারেননি প্রায় সাড়ে ১৭ হাজারেরও বেশি শ্রমিক।