ছায়ানটের সভাপতি ও সংগীতজ্ঞ সন্জীদা খাতুন মারা গেছেন। এক সপ্তাহ ধরে তিনি হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন।
মঙ্গলবার বেলা ৩টা ১০ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সন্জীদা খাতুনের পুত্রবধূ ও ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সন্জীদা খাতুন ডায়াবেটিস, নিউমোনিয়া এবং কিডনির রোগে ভুগছিলেন। গত এক সপ্তাহ ধরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এর আগেও একই অসুস্থতায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন বলে জানান লাইসা আহমদ লিসা।
ছায়ানট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রয়াত সন্জীদা খাতুনের প্রতি সর্বজনের শ্রদ্ধা নিবেদন বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় রাজধানীর ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে অনুষ্ঠিত হবে।
সন্জীদা খাতুনের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৪ এপ্রিল। তার বাবা কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক। মা সাজেদা খাতুন গৃহিণী। সন্জীদা খাতুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৪ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক, ১৯৫৫ সালে ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর এবং ১৯৭৮ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষকতা দিয়েই তাঁর কর্মজীবন শুরু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে দীর্ঘকাল অধ্যাপনা করেছেন তিনি।
সন্জীদা খাতুনকে জীবনের শুরু থেকেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছিলেন প্রতিবাদী ভূমিকায়। দেশের যে কোনো সংকটে সোচ্চার ছিলেন এই বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। যখন তিনি কলেজের শিক্ষার্থী, তখন থেকেই পড়াশোনা, আবৃত্তি ও অভিনয়ের পাশাপাশি গানের চর্চা করেছেন। পাশাপাশি কিছু সাংগঠনিক কাজেও যুক্ত হয়েছেন।
শিল্পী কামরুল হাসানের নেতৃত্বে সন্জীদা খাতুন ব্রতচারী আন্দোলনে যোগ দেন। তার প্রথম গানের গুরু ছিলেন সোহরাব হোসেন। তার কাছে তিনি শিখেছিলেন নজরুলসংগীত, আধুনিক বাংলা গান ও পল্লিগীতি। পরে রবীন্দ্রসংগীত শিখেছেন হুসনে বানু খানমের কাছে। পরে আরও অনেকের কাছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন শৈলজারঞ্জন মজুমদার, আবদুল আহাদ, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলিমা সেনসহ কয়েকজন।