শনিবারের পত্রিকা : ‘আমরা গভীর সংকটের দ্বারপ্রান্তে’

newspaper

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফরে আসা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শনের খবর শনিবার প্রকাশিত প্রায় সব সংবাদপত্রেই গুরুত্ব পেয়েছে। এর পাশাপাশি ভারতের ঋণে দুই সড়ক নির্মাণের লাভ-ক্ষতি, দেশে সামাজিক অপরাধ বেড়ে যাওয়া, নবগঠিত রাজনৈতিক দল এনসিপির সংবিধান পরিবর্তনের প্রচেষ্টা ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কেমন চলছে দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যক্রমসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে করা সংবাদও গুরুত্বের সঙ্গে ছেপেছে সংবাদপত্রগুলো। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক শনিবার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে।

কালের কণ্ঠ

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর এবং কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘আমরা গভীর সংকটের দ্বারপ্রান্তে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিশ্ব একটি গভীর সংকটের দ্বারপ্রান্তে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারে এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি আজ অনেকের সঙ্গে দেখা করেছি, কথা বলেছি এবং তাদের সাহস দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি। তাদের দৃঢ়সংকল্প দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘অনেকেই মায়ানমারে তাদের নির্যাতন এবং এখানে তাদের আসার মর্মান্তিক বিবরণ শুনিয়েছে।’

আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘তারা বাড়ি ফিরে যেতে চায়। মায়ানমার তাদের মাতৃভূমি। নিরাপদে, স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদাপূর্ণভাবে ফিরে যাওয়াই এই সংকটের প্রাথমিক সমাধান।’

প্রথম আলো

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর এবং প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তার বৈঠকে আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন নিয়ে হওয়া আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘বড় সংস্কার হলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরে কিংবা আগামী বছরের জুনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি ‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ’ নিয়ে একমত হয়, তবে নির্বাচন ডিসেম্বরেই হতে পারে। তবে তারা যদি ‘বৃহৎ সংস্কার প্যাকেজ’ গ্রহণ করে, তাহলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গতকাল শুক্রবার ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে এ কথা বলেন। বৈঠকে বাংলাদেশে সংস্কার উদ্যোগের প্রতি জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন গুতেরেস। তিনি বিশ্বে ‘সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার জনগোষ্ঠী’ রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। গুতেরেস চার দিনের সফরে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে এসেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে সংস্কারপ্রক্রিয়া সম্পর্কে জাতিসংঘের মহাসচিবকে অবহিত করেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের বিষয়ে ইতিমধ্যে প্রায় ১০টি রাজনৈতিক দল তাদের মতামত জমা দিয়েছে। তিনি বলেন, দলগুলো ছয়টি কমিশনের সুপারিশগুলোর সঙ্গে একবার একমত হলে তারা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে; যা দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পাশাপাশি রাজনৈতিক, বিচারিক, নির্বাচনসংক্রান্ত, প্রশাসনিক, দুর্নীতি দমন এবং পুলিশ সংস্কারের একটি রূপরেখা হবে।

সমকাল

ভারতের ঋণের টাকায় বাংলাদেশে দুটি সড়কের নির্মাণ কাজ চলমান থাকলেও তাতে বাংলাদেশ কতটা লাভবান হবে, সেই প্রশ্ন তুলে করা একটি খবরকে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘ভারতের ঋণে দুই সড়ক, বাংলাদেশের লাভ নিয়ে প্রশ্ন’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় ঋণে (এলওসি) আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল, কসবা, ধরখার হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের মহাসড়ক নির্মাণ চলছে। ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এ রাস্তা ভারতের ত্রিপুরার আগরতলাকে আশুগঞ্জ নৌবন্দরের সঙ্গে যুক্ত করবে। এ ছাড়া ৭ হাজার ১৮৮ কোটি টাকায় কুমিল্লার ময়নামতি থেকে ধরখার সড়কও চার লেনে উন্নীত করা হবে ভারতীয় ঋণে। এতে চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস করা পণ্য ত্রিপুরা ও আসামে পরিবহন সহজ হবে। ১২ হাজার ৯৭৯ কোটি টাকার এই দুই সড়কে ভারতের ফায়দা হলেও, বাংলাদেশের কী লাভ, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) কর্মকর্তারা বলেছেন, মহাসড়ক দুটি চার লেনে উন্নীত হলে আগরতলার বাণিজ্য বাড়বে। সিলেট ও চট্টগ্রামের যোগাযোগ সহজ হবে। বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশই লাভবান হবে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির সমকালকে বলেন, কেন এই মহাসড়ক প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছিল, বাংলাদেশের আদৌ লাভ আছে কিনা, খতিয়ে দেখা হবে। ময়নামতি-ধরখার মহাসড়ক প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা হবে। বাংলাদেশের স্বার্থের অনুকূলে না হলে সরকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে না।

ইত্তেফাক

দেশে প্রতিনিয়ত সামাজিক অপরাধ বাড়ছে– খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘সামাজিক অপরাধ বেড়ে চলেছে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে প্রতিনিয়তই বাড়ছে সামাজিক অপরাধ। নারী নির্যাতনের পাশাপাশি শিশু ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দেশ জুড়ে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২ হাজার ৮৭০টি। আর মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৮৫টি। ধর্ষণের পর চার জনকে হত্যা করা হয়েছে আর একজন আত্মহত্যা করেছে। ফেব্রুয়ারিতে ধর্ষণের শিকার ৫৭ জনের মধ্যে ১৬ জন শিশু, ১৭ জন কিশোরী রয়েছেন। অন্যদিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তিন জন কিশোরী ও ১৪ জন নারী, ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন দুই জন নারী। এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা ১৯টি, যৌন হয়রানি ২৬টি, শারীরিক নির্যাতনের ৩৬টি ঘটনা ঘটেছে এ মাসে।

সামাজিক অবক্ষয়ের কারণগুলো চিহ্নিত করতে গিয়ে সমাজবিজ্ঞানী ও অপরাধ বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ও অপরাধ বিশ্লেষক ড. মো. তৌহিদুল হক বলেন, সামাজিক অপরাধ বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হচ্ছে আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকা। ব্যক্তির অনৈতিক সম্পর্ক, মাদকাসক্তি, পারিবারিক কলহের জের, জমিজমার বিরোধ এবং নৈতিক অবক্ষয়ের কারণেই সামাজিক অপরাধ বাড়ছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ পেতে হলে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে আরো কঠোর হতে হবে।

যুগান্তর

দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলেও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সবকিছু পুরোনো ধারায় চলছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘অনুসন্ধানে অনীহা দুদকেরশিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের সাত মাস চলে গেলেও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাজে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। সবকিছু চলছে পুরোনো ধারায়। একদিকে পতিত সরকারের দোসরদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে অনুসন্ধান ও মামলা করা হলেও দায়ের হচ্ছে গৎবাঁধা এজাহার। যা আইনের দৃষ্টিতে খুবই দুর্বল। ফলে আদালতে প্রমাণ করে আসামিদের শাস্তি নিশ্চিত করা কঠিন হবে। অন্যদিকে একটি বিশেষ ক্যাডারের সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তফশিলভুক্ত অপরাধের অভিযোগ পেয়েও তা অনুসন্ধানে অনীহা দেখাচ্ছে সংস্থাটি। এক্ষেত্রে অভিযোগ যাচাই-বাছাই কমিটির (যাবাক) ভূমিকা মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। দুদক আইন ও বিধিভঙ্গ করে তফশিলভুক্ত অপরাধ অনুসন্ধান না করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে পাঠানো হচ্ছে ব্যবস্থা নিতে। একাধিক সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বণিক বার্তা

দেশে সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত কর্মীদের গড়ে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ প্রতিদিনই কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা।  ‘কর্মস্থলে উপস্থিত থাকে না সরকারি স্বাস্থ্যসেবার ৪০-৫০% কর্মী’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারা দেশের সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত কর্মীদের বিভাগভিত্তিক দৈনিক উপস্থিতি বা হাজিরার হার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ড্যাশবোর্ডে নিয়মিতভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে। এ পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দেশে সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত কর্মীদের গড়ে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ প্রতিদিনই কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকছে।

সাপ্তাহিক কর্মদিবসের শেষদিন গত বৃহস্পতিবারের (১৩ মার্চ) তথ্য অনুযায়ী, এদিন সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের কর্মী সবচেয়ে বেশি উপস্থিত ছিল সিলেট বিভাগে। সেদিন কর্মস্থলে উপস্থিত ছিল বিভাগটির ৬১ দশমিক ৭৪ শতাংশ কর্মী। সবচেয়ে কম ছিল রংপুরে। বিভাগটির ৪৭ দশমিক ১৬ শতাংশ কর্মী সেদিন কর্মস্থলে হাজিরা দিয়েছে। এছাড়া বরিশালে ৫৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৫৭ দশমিক ৫৪, ঢাকায় ৫১ দশমিক ৭৪, খুলনায় ৫৯ দশমিক ৪১, ময়মনসিংহে ৫৮ দশমিক ৭৬ ও রাজশাহীতে ৪৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ কর্মী উপস্থিত ছিল। ওইদিন সারা দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট ৯২ হাজার ৫৫৩ স্বাস্থ্যকর্মীর তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ৪১ হাজার ৭২৪ জন বা ৪৫ শতাংশের কিছু বেশি।

কালবেলা

নবগঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তন করতে চায়– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালবেলা। ‘সংবিধান পাল্টাতে গণপরিষদ চায় এনসিপি’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফের জোরালো আলোচনায় আসছে গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধান ইস্যু। নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের দিন থেকেই ‘গণপরিষদ নির্বাচন’-এর দাবি করে আসছে। দলটির নেতারা বলছেন, বারবার ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরতন্ত্র ফিরে আসা চিরতরে বন্ধ করা, সংবিধান পুনর্লিখন ও শাসন কাঠামোর আমূল পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন ‘গণপরিষদ’। সেই গণপরিষদ নতুন সংবিধান তৈরি করবে এবং সেই সংবিধানের অধীনে হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তবে সব পক্ষ চাইলে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণপরিষদ নির্বাচন একসঙ্গেও হতে পারে। এনসিপি নেতাদের দাবি ও বক্তব্যের কঠোর বিরোধিতা করছে দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। দলটির হাইকমান্ড মনে করছে, এই প্রক্রিয়ার ফলে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পিছিয়ে যাবে। তাই তারা সবার আগে চায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

নয়া দিগন্ত

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর এবং কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়াদিগন্ত। ‘রোহিঙ্গাদের পাশে থাকবে জাতিসঙ্ঘ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণসহায়তা কমানো ঠেকাতে জাতিসঙ্ঘ যথাসাধ্য সবকিছু করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। গতকাল শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ায় বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থীশিবির ঘুরে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিজ চোখে দেখে তিনি এই আশ্বাস দেন। তিনি কক্সবাজারে বসবাসরত ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া সফররত জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে নেয়া সংস্কার কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।

উখিয়ার ক্যাম্পে ব্রিফিংয়ে গুতেরেস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো তাদের মানবিক সহায়তার বরাদ্দ ‘নাটকীয়ভাবে’ কমিয়ে দিয়েছে, আর সে কারণেই রোহিঙ্গাদের রেশন বরাদ্দ কমে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, তহবিলের অভাবে মানুষের যেন আরো বেশি কষ্ট পেতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে আমি বিশ্বের সব দেশকে আহ্বান জানাব, যারা আমাদের সহায়তা করতে পারে। গুতেরেস বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আমি জোর গলায় বলব, আমাদের জরুরি ভিত্তিতে আরো সহায়তা প্রয়োজন, কারণ এই জনগোষ্ঠীর মর্যাদার সাথে বাঁচার জন্য এই সহায়তা খুবই জরুরি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন

বাংলাদেশ প্রতিদিনের ১৬ বছরে পদার্পণের খবর দিয়েই প্রধান প্রতিবেদন করেছে সংবাদপত্রটি। ‘সাহসী সাংবাদিকতায় অবিচল’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাহসী সাংবাদিকতার অঙ্গীকার নিয়ে দেড় দশক পেরিয়ে আজ ১৬ বছরে পদার্পণ করল দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ও বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক আফরোজা বেগম। এ সময় বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান উপস্থিত ছিলেন।

জাতিসংঘ মহাসচিবের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের খবরটিকে দ্বিতীয় প্রধান প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। ‘সংস্কারে পাশে জাতিসংঘ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা হ্রাসের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। গতকাল তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে তিনি এসব কথা জানান।

অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, আমি সংস্কার কর্মসূচির প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করতে চাই। আমরা আপনাদের সংস্কার প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিতে এখানে এসেছি। আমরা সর্বোত্তম সফলতা কামনা করি। সংস্কারের জন্য আমরা কী করতে পারি, তা জানান।

আজকের পত্রিকা

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর এবং কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকাও। ‘সংস্কারে জাতিসংঘের সমর্থন’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের শুরু করা সংস্কারপ্রক্রিয়ার প্রতি সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। গতকাল শুক্রবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে গুতেরেস বলেন, ‘আমি আমাদের সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি জানাতে চাই। আমরা এখানে আপনাদের সংস্কারকে সমর্থন করতে এসেছি। আমরা আপনাদের সর্বোচ্চ মঙ্গল কামনা করি। আমরা যা করতে পারি, জানাবেন।’

সংস্কারের প্রক্রিয়া জটিল হতে পারে, এমনটি উল্লেখ করে জাতিসংঘের মহাসচিব আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সংস্কারগুলো একটি মুক্ত ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং দেশের ‘বাস্তব রূপান্তর’ নিশ্চিত করবে।

অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের প্রধানকে জানান, রাজনৈতিক দলগুলো কম সংস্কার চাইলে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর বেশি সংস্কার চাইলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

চার দিনের সফরে গুতেরেস গত বৃহস্পতিবার ঢাকা পৌঁছান। গতকাল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

দেশ রূপান্তর

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর এবং কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তরও। ‘সংস্কারে সমর্থন গুতেরেসের’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে নেওয়া সংস্কার কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেছেন এবং দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কক্সবাজারে বসবাসরত ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব গতকাল শুক্রবার ঢাকার তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে সংস্কার এজেন্ডার জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বিশ্বব্যাপী ‘সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার জনগোষ্ঠী’ রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি চার দিনের সফরে গতকাল ঢাকায় আসেন।

ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব অধ্যাপক ইউনূসকে বলেন, ‘আমি সংস্কার কর্মসূচির প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করতে চাই। আমরা আপনাদের সংস্কার প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিতে এখানে এসেছি। আমরা আপনাদের সর্বোত্তম সফলতা কামনা করি। যেকোনো সহযোগিতা লাগলে আমাদের জানান।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই সংস্কার প্রক্রিয়া একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং দেশের একটি ‘বাস্তব রূপান্তর’ নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, ‘আমি জানি যে সংস্কার প্রক্রিয়াটি জটিল হতে পারে’।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads