শনিবারের পত্রিকা: ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ন্ত্রণহীন বিশৃঙ্খলা’

newspaper

দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন মহলের শঙ্কার খবর দিয়ে শনিবার প্রধান প্রতিবেদন সাজিয়েছে সংবাদপত্রগুলো। এর মধ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতার খবর বেশি গুরুত্ব পেয়েছে কয়েকটি সংবাদপত্রে। এ ছাড়া দেশের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ এবং মিয়ানমারকে মানবিক করিডোর দেওয়ার বিষয়ে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন মহলের শঙ্কার খবর গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে সংবাদপত্রগুলো। এর বাইরে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশৃঙ্খল ও নিয়ন্ত্রণ পরিস্থিতির সৃষ্টি, ‘গণহত্যার বিচারে আরও একটি ট্রাইব্যুনাল গঠনে সরকারের উদ্যোগ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য তৈরি করতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কর্মতৎপরতা, ইঞ্জিন-কোচ সংকটে দেশজুড়ে ৭০টি ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়া, কাশ্মীরের হামলা ঘিরে ভারত ও পাকিস্তানের পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ,  চরম গ্যাস-সংকটে শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়া এবং গণমাধ্যমের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন অধ্যাদেশ জারির উদ্যোগের খবরও গুরুত্ব পেয়েছে সংবাদপত্রগুলোতে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক শনিবার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে বা প্রথম পাতায় গুরুত্বের সঙ্গে ছেপেছে।

মানবজমিন

শিক্ষার্থীদের বেপরোয়া আচরণে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্র বিশৃঙ্খল ও নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে মানবজমিন। ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ন্ত্রণহীন বিশৃঙ্খলা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজেদের মধ্যে একের পর এক সংঘর্ষ-মারামারিতে জড়াচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের বেপরোয়া আচরণে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্র বিশৃঙ্খল ও নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা। পান থেকে চুন খসলেই শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়াচ্ছেন। প্রতিষ্ঠান প্রধান বা প্রশাসনকে জিম্মি করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছেন। বিভিন্ন দাবি আদায়ের আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম। বিশিষ্টজনরা বলছেন- সমাজের মধ্যকার অস্থিরতারই বহিঃপ্রকাশ শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলা এই অস্থিরতা। এর পেছনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরও ব্যর্থতা রয়েছে।

প্রথম আলো

গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে অন্তর্বর্তী সরকার আরও একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে যাচ্ছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘গণহত্যার বিচারে আরও একটি ট্রাইব্যুনাল হচ্ছে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আরও একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিষয়ে শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করবে আইন মন্ত্রণালয়। এই ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম চলবে বর্তমান ট্রাইব্যুনালের পাশের ভবনে। এ লক্ষ্যে পুরোনো হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে একটি ভবনের সংস্কারকাজ এখন পুরোদমে চলছে।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। এখন এই ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারও চলছে। পাশাপাশি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম, খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার এই ট্রাইব্যুনালে করা হচ্ছে। তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার এখন বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে ট্রাইব্যুনালে। এ বিচার কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

সমকাল

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের একটি সাক্ষাৎকার দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘বিএনপি সমঝোতা চায়, ক্ষমা ও আওতা ঠিক হবে পরে’ শিরোনামে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে বলা হয়েছে, সংসদের বাইরে সংবিধান সংস্কার আইনানুগ হবে না বলে মনে করছে বিএনপি। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমিয়ে রাষ্ট্রে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হোক– তাও কাম্য নয় দলটির। আওয়ামী লীগের বিচার চায় বিএনপি; তবে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ নয়। সমকালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজনীতির জরুরি সব বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বিক্ষোভ সমাবেশের খবরটিও প্রথম পাতায় গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে সমকাল। ‘এনসিপির বিক্ষোভ সমাবেশ: আ’লীগের বিচার ও সংস্কারের আগে নির্বাচন হবে না’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিচারের আগে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে সারাদেশে জেলা, ইউনিয়ন, পাড়া-মহল্লায় যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। বিচার, সংস্কার এবং শহীদ পরিবারের যথাযথ পুনর্বাসন না করে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

শুক্রবার রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি’তে সমাবেশে দলটির নেতারা এসব কথা বলেন। তারা আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন, শাহবাগে সমাবেশ করবেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার ঘোষণা দেন, দক্ষিণ গেটে হবে কর্মসূচি।

কালের কণ্ঠ

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীসহ পাঁচজনের ‘লুটপাটের কারণে’ বিদ্যুৎ খাত ধ্বংস হয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘পঞ্চপাণ্ডবে ধ্বংস বিদ্যুৎ খাত’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ খাতে তাঁরা পরিচিত ছিলেন পঞ্চপাণ্ডব নামে। এই পাঁচজনই ছিলেন বিদ্যুৎ খাতের অর্থ লেনদেনের মূল নিয়ন্ত্রক। প্রকল্প গ্রহণ, কারো পদায়ন বা বিদ্যুত্সংক্রান্ত কোনো আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতেন তাঁরা। তাঁদের হাতেই চলত দেশের বিদ্যুৎ খাত। তাঁরা লুটেছেন বিপুল অর্থ। পঞ্চপাণ্ডবের গডফাদার ছিলেন তিনজন। গডফাদারদের কমিশন দিতেন বলে তাঁদের অপকর্মের জবাব দিতে হতো না। এককথায় তাঁরা ছিলেন জবাবদিহির ঊর্ধ্বে। বিদ্যুৎ খাতে এই পঞ্চপাণ্ডব ছিলেন সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, শেখ হাসিনার সাবেক মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এসডিজিবিষয়ক সমন্বয়ক এবং সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, সামিট গ্রুপের আজিজ খান ও এস আলম। এই পাঁচজনই বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত সর্বনাশের হোতা। বিদ্যুৎ খাতে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সব কিছু করা হয়েছে তাঁদের লুটপাটের নীতিকে মুখ্য রেখে। বিদ্যুতে যেখানেই তাঁরা লুটপাটের সুযোগ পেয়েছেন, সেখানেই তাঁরা চেটেপুটে খেয়েছেন। বিদ্যুতের স্বয়ংসম্পূর্ণতার ঢোল বাজিয়ে আসলে বিদ্যুৎ খাতের বারোটা বাজিয়েছেন তাঁরা।

ইত্তেফাক

বাংলাদেশে নতুন করে ১ লাখ ১৫ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘আরও ১ লাখ ১৫ হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবারও সীমান্ত দিয়ে অবাধে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঘটছে। কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া এলাকার স্থানীয় সূত্রগুলো দাবি করছে, প্রতিদিন গড়ে ১শ’রও বেশি রোহিঙ্গা ঢুকছে। এরই মধ্যে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে গিয়ে বিজিবি সদস্য সিপাহী মোহাম্মদ বেলাল হোসেন নাফ নদে ডুবে মারা গেছেন। যদিও শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার বলছেন, দিনে গড়ে ৩০ জন করে অনুপ্রবেশ হচ্ছে। নতুন করে এ পর্যন্ত ১ লাখ ১৫ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। অন্যদিকে নতুন করে আসা ১ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গার বসবাসের জায়গা করে দিতে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর) বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দিয়েছে।

যুগান্তর

প্রতিমাসে সাড়ে ৬ হাজারের মতো রোহিঙ্গার বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঘটছে। নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় এবং মানবিক করিডর দিতে জাতিসংঘের আহ্বানকে কেন্দ্র করে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘মাসে ৬ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ও মানবিক করিডর: নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির জান্তা সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) যুদ্ধ যতই তীব্র হচ্ছে, ততই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ বেড়ে চলেছে। সংঘর্ষের মধ্যে দুই পক্ষের হামলার মূল লক্ষ্য হয়ে উঠছে সাধারণ রোহিঙ্গা জনগণ। আর এ কারণে অনেকেই জীবন বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, প্রতিমাসে সাড়ে ৬ হাজারের মতো অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে। নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় এবং মানবিক করিডর দিতে জাতিসংঘের আহ্বানকে কেন্দ্র করে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। সবমিলিয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ফের বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক চাপ ও চক্রান্তের শিকার হতে পারে। এতে আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি-এমন আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

বাংলাদেশ প্রতিদিন

সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কর্মতৎপরতার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। ‘পথ খুঁজছে ঐকমত্য কমিশন’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সব রাজনৈতিক দলের সম্মতি নিয়ে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এরই অংশ হিসেবে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক চলছে। বৈঠকের টেবিলে দলগুলোর পক্ষ থেকে বিকল্প নানা প্রস্তাব আসছে। পাশাপাশি সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে দলগুলো একাধিক বিকল্পের কথা বলছে।

উল্লেখযোগ্য যেসব বিষয়ে বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সেসবের মধ্যে রয়েছে- দেশের সাংবিধানিক নাম, সংসদ, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, রাষ্ট্রের মূলনীতি, বিচারপতি নিয়োগ, প্রার্থী হওয়ার বয়সসীমা, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন প্রক্রিয়া, নতুন দলের কার্যক্রম পরিচালনার ফর্মুলা ইত্যাদি। এসব বিকল্প প্রস্তাব সম্পর্কে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, ‘আমাদের দেওয়া সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবের বাইরে অনেক রাজনৈতিক দল বিভিন্ন ইস্যুতে নানা ধরনের বিকল্প প্রস্তাব দিচ্ছে। এসব নিয়ে আমরা ভাবছি। পথ খুঁজছি।’

বণিক বার্তা

ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ) ও কোচ সংকটের কারণে সারা দেশে ৭০টি ট্রেন বন্ধ আছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা। ইঞ্জিন-কোচ সংকটে দেশজুড়ে বন্ধ ৭০ ট্রেন’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ) ও কোচ সংকটের কারণে সারা দেশে ৭০টি ট্রেন বন্ধ আছে। এর মধ্যে ৩৩টি কমিউটার ট্রেন, ২১টি লোকাল, ১০টি মিশ্র, চারটি মেইল ও দুটি শাটল ট্রেন। বন্ধ থাকা ট্রেনগুলোর বেশির ভাগই চলাচল করত স্বল্প ও মাঝারি দূরত্বে, যা ভূমিকা রাখত দৈনন্দিনের পাশাপাশি স্বল্প আয়ের মানুষের যাতায়াতে। ইঞ্জিন ও কোচ সংকট এবং জনবল স্বল্পতার কারণে সেগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান রেলওয়ের কর্মকর্তারা।

সান্তাহার-পঞ্চগড় রুটের উত্তরবঙ্গ মেইল বন্ধ হওয়া ট্রেনগুলোর একটি। ২০২০ সালে করোনা মহামারীর সময় সারা দেশেই ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এরপর অন্যগুলো চালু হলেও এ ট্রেনটি তখন থেকেই বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, উত্তরবঙ্গ মেইল ট্রেনটি নিম্ন আয় ও শ্রমজীবী মানুষের অল্প খরচে যাতায়াতের একমাত্র যানবাহন ছিল। ট্রেনটি বন্ধ হওয়ায় তাদের যাতায়াত খরচ ও ভোগান্তি—দুই-ই বেড়েছে।

নয়া দিগন্ত

কাশ্মিরের পেহেলগামে হামলাকে কেন্দ্র করে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তোলার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়া দিগন্ত। ‘পাল্টাপাল্টি অভিযোগ হুমকি’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতশাসিত কাশ্মিরের পহেলগামে হামলার পেছনে কারা জড়িত তা নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান। ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে সীমিত পরিসরে সামরিক হামলার আভাসও মিলছে। দু’দেশই রণপ্রস্তুতি নিয়ে পরস্পরকে হুমকি-হুঁশিয়ারি অব্যাহত রেখেছে। এতে ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধাবস্থার মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেও একই পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা-আইএসআই ও কট্টরবাদী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার যোগশাজস রয়েছে বলে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা-ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) প্রাথমিক প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে এমন খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। যা মূলত অনুমাননির্ভর। অন্য দিকে হামলার পেছনে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ জড়িত বলে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ টেলিগ্রামে ফাঁস হওয়া গোপন নথির উদ্ধৃতি দিয়ে দাবি করেছে পাকিস্তানের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম। ওই নথির সত্যতাও স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

আজকের পত্রিকা

গ্রীষ্মে লোডশেডিং কমাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোয় শিল্পকারখানায় চরম গ্যাস-সংকট দেখা দিয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘বিদ্যুতে গ্যাস দিলে শিল্পে টান’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের শিল্পকারখানায় চরম গ্যাস-সংকট দেখা দিয়েছে। গ্যাস না থাকায় অনেক স্থানে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। আবার কোথাও কোথাও উৎপাদন নেমে এসেছে তিন ভাগের এক ভাগে। শুধু শিল্প নয়, বাসাবাড়ি ও সিএনজি স্টেশনেও চলছে গ্যাসের জন্য হাহাকার। গ্রীষ্মে লোডশেডিং কমাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোয় এই সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশীয় গ্যাসের উত্তোলন কমতে থাকায় সামনের দিনে সংকট আরও তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে দৈনিক ৩৮০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। ৩০০ থেকে ৩২০ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া গেলেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়। কিন্তু এই চাহিদার বিপরীতে ২৮ এপ্রিল গ্যাস সরবরাহ করা হয় ২৭০ কোটি ঘনফুট। সেখান থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রে দেওয়া হয় প্রায় ১১০ কোটি ঘনফুট। বাকি ১৬০ কোটি ঘনফুট গ্যাস দিয়ে শিল্পকারখানা, বাসাবাড়ি ও সিএনজি স্টেশনের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে শিল্প-কারখানাগুলোকে।

দেশ রূপান্তর

গণমাধ্যমের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন অধ্যাদেশ জারির উদ্যোগের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘গণমাধ্যমের জন্য আসছে নতুন অধ্যাদেশ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘সম্প্রচার আইন ২০১৮’ এর খসড়া চূড়ান্ত করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। প্রস্তাবিত সেই আইনে ‘অনলাইন নিউজ পোর্টাল’, ‘রেডিও’, ‘টেলিভিশন’ এবং মাল্টিমিডিয়া-ভিত্তিক ‘সম্প্রচার প্ল্যাটফর্ম’ নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি ৭ বছরের কারাদ- এবং ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার একটি প্রস্তাবনা ছিল। এবার সেই ধারাসহ বেশ কয়েকটি সংশোধনী এনে নতুন অধ্যাদেশ জারির উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বাংলাদেশের মানবিক করিডোর দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তে সম্পর্কে আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামতের ভিত্তিতে করা আরেকটি প্রতিবেদন প্রথম পাতায় গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে দেশ রূপান্তর। ‘জাতিসংঘ আসিয়ান চীন-ভারতের সমন্বিত সহায়তা প্রয়োজন শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সশস্ত্র সংঘাত ও সেখানে বেসামরিক প্রাণহানির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সম্প্রতি ‘মানবিক করিডর’ গঠনের প্রস্তাবের বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এখনো করিডর নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত কোনো ঘোষণা আসেনি। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, জাতিসংঘের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে শর্ত ঠিক হয়নি।

আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই করিডর দেওয়ার বিষয়টি নতুন নয়। এর আগেও বিভিন্ন দেশে মানবিক করিডর দেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ভালো-মন্দ দুদিকই আছে। তবে তারা মনে করেন, রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক করিডর কার্যকর করতে হলে জাতিসংঘ, আসিয়ান এবং চীন-ভারতের মতো আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সমন্বিত সহায়তা প্রয়োজন। নতুবা এটি রাজনৈতিক বক্তব্য হয়েই সীমাবদ্ধ থাকতে পারে। বাংলাদেশ দাবি করছে, রাখাইন অঞ্চলে আটকে পড়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদে সহায়তা পৌঁছাতে একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবিক করিডর প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন রয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads