ঢাকায় সচিবালয়ে মধ্যরাতে যখন আগুন লাগে, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তখন সাড়ে তিনশ কিলোমিটার দূরে নীলফামারীতে। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই তিনি ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট দেন। তারপর আরও জোরালভাবে ষড়যন্ত্রের কথা বলেন জুলাই আন্দোলনে তার সহযোদ্ধা সারজিস আলম।
আগুন নেভাতে দেরি হওয়ায় ষড়যন্ত্রের আলোচনাই ছড়িয়ে পড়ে সোশাল মিডিয়ায়। আগুন নেভানোর পর আবার আটতলায় কুকুরের মৃতদেহ পাওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনার (কেপিআই) নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও ওঠে প্রশ্ন।
১০ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভানো গেলেও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ধোঁয়ার মতোই ছড়াচ্ছে। তবে তরুণ উপদেষ্টা যেভাবে ষড়যন্ত্রের কথা বলেছেন, বয়সে প্রবীণ উপদেষ্টারা সেই পথে হাঁটেননি। তারা বলেছেন তদন্তের জন্য অপেক্ষা করার কথা।
শুরুতে এই অগ্নিকাণ্ড তদন্তে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ একটি কমিটি করলেও তাতে বিশেষজ্ঞদের অনুপস্থিতি জন্ম দেয় সমালোচনার। পরে তা বাতিল করে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি করে উপদেষ্টা পরিষদ। সেই কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশে জনপ্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয় গড়ে উঠেছে রমনার থানাধীন পুরানা পল্টন এলাকায় একটি কমপ্লেক্সে, যেখানে রয়েছে কয়েকটি ভবন। সুরক্ষিত এই এলাকার ৭ নম্বর ভবনে বৃহস্পতিবার প্রথম প্রহরে লাগে আগুন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবি করে আসছেন। এর মধ্যেই সচিবালয়ে আগুন লাগার পর ষড়যন্ত্রের কথাই দিনভর ছিল আলোচনায়।
মধ্যরাতে আগুন, নেভাতে গড়াল দুপুর
ঢাকা থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলোর তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন লাগে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের কয়েকশ গজ দূরেই সচিবালয়। আগুনের খবর পেয়েই সেখানে ছুটে যান অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর কর্মীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা। ১০ ঘণ্টা পর বেলা পৌনে ১২টার দিকে আগুন পুরোপুরি নেভানো হয় বলে ফায়ার সার্ভিস জানায়।
সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল সকালে সচিবালয়ের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, “রাত ১টা ৫২ মিনিটে আমরা মেসেজ পাই যে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন লেগেছে। ১টা ৫৪ মিনিটের মধ্যে আমাদের ইউনিট পৌঁছে যায়।”
৭ নম্বর ভবনের ৬, ৭, ৮, ৯ এই চারটি তলায় আগুন লেগেছে বলে জানান তিনি।
আগুন নেভাতে দেরি নিয়ে নানা কথার জবাবে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক জাহেদ কামাল বলেন, সচিবালয়ের ফটকগুলো দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের বড় গাড়িগুলো ঢোকাতে বেগ পেতে হয়। সেই কারণে সামনের ফটক ভাঙতে হয়েছিল তাদের।
সচিবালয়ে ঢোকার মোট পাঁচটি ফটকের মধ্যে দুটি ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢোকার জন্য হলেও সেই দুটি দিয়েও বড় বাড়ি ঢোকানো যাচ্ছিল না।
আবার ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বলেন, আগুন নেভানোর জন্য দুটি টার্নটেবল ল্যাডার (টিটিএল) ভেতরে ঢোকাতে পেরেছিলেন তারা। আরও বেশি টিটিএল ঢোকাতে পারলে আগুন আরও আগে নেভানো যেত।
মন্ত্রণালয়গুলোতে সৌন্দর্যবর্ধনের নানা কাজ চলছিল। সেখানে কাঠের ব্যবহার বেশি ছিল বলে আগুন দ্রুত ছড়িয়েছিল।
আগুন লাগার কারণ কিংবা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলেনি।
তবে বাহিনীর মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহেদ কামাল বলেছেন, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এই অগ্নিকাণ্ড হতে পারে, যদিও তা এখনও তিনি নিশ্চিত নন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, তিনটি জায়গায় একসাথে আগুন দেখা গেছে। যখন স্পার্কিং হয়, যদি বিদ্যুৎ লাইনের শর্ট সার্কিট হয়, এটা হতে পারে। কিন্তু এটা হয়েছে, তা আমরা বলব না। আমরা এটা এখনও নিশ্চিত বলব না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা তদন্ত শেষ করছি।”
আগুন লাগার খবর পেয়েই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ছুটে গিয়েছিল সচিবালয়ে। কাজ করার সময় রাস্তা পার হতে গিয়ে বাহিনীর একজন কর্মীর মৃত্যু ঘটে। নিহত সোয়ানুর জামান নয়ন (২৪) ফায়ার ফাইটার হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। একটা পাইপ নিয়ে সচিবালয়ের দিকে আসছিলেন, রাস্তা পার হচ্ছিলেন, এ সময় একটা ট্রাক তাকে ধাক্কা দেয়।”
ষড়যন্ত্রের সন্দেহ
সচিবালয়ে ৭ নম্বর ভবনের যে পাঁচটি মন্ত্রণালয় আগুনে পুড়েছে, তার দুটির (স্থানীয় সরকার ও যুব ও ক্রীড়া) দায়িত্বে রয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। আগুন লাগার খবর শুনেই ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট দেন তিনি।
জুলাই অভ্যুত্থানের এই ছাত্রনেতা লেখেন, “স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের বিগত সময়ে হওয়া অর্থ লোপাট, দুর্নীতি নিয়ে আমরা কাজ করছিলাম। কয়েক হাজার কোটি টাকা লুটপাটের প্রমাণও পাওয়া গিয়েছিল।
“আগুনে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এখনও জানা যায়নি। আমাদেরকে ব্যর্থ করার এই ষড়যন্ত্রে যে বা যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না।”
এরপর হেলিকপ্টারে ঢাকায় ফিরেই সচিবালয়ে যান আসিফ; আগুনে পোড়া নিজের মন্ত্রণালয় বিমর্ষ মুখে ঘুরে দেখেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলমও ষড়যন্ত্রের কথা ফেইসবুকে লেখেন, “বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের যারা চাটার দল ছিল, তাদের মধ্যে অন্যতম স্টেকহোল্ডার ছিল আমলাদের বৃহৎ একটা অংশ। এদের উপর ভর দিয়েই হাসিনা এই দেশে তার ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছিল।
“যখনই বিপ্লবীরা হাসিনার অপকর্ম, চুরি, লুটপাট, দুর্নীতির দিকে নজর দিয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে, তখনই সচিবালয়ে ঘাপটি মেরে থাকা হাসিনার দালালেরা বিভিন্ন অপকর্মের ফাইলগুলোকে আগুনে পুড়িয়ে দিল।”
জুলাই আন্দোলনের মধ্য থেকে গড়ে ওঠা নাগরিক কমিটিও এক বিবৃতিতে বলে, “সচিবালয়ের মতো একটি নিরাপত্তাবেষ্টিত স্থানে এ ধরনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তিদের ষড়যন্ত্র বলেই আমরা মনে করি।”
রাতে আগুন নেভাতে গিয়ে সচিবালয়ের সামনের সড়কে ট্রাকের চাপায় একজন ফায়ার ফাইটারের মৃত্যু ঘটে। ওই সময় কেন সড়ক আটকানো হলো না, তার পেছনেও ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাচ্ছেন কেউ কেউ।
আবার আগুন নেভানোর পর ওই ভবনের অষ্টম তলায় একটি কুকুরে মরদেহ পাওয়ার কথা জানান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক জাহেদ কামাল।
ফায়ার সার্ভিসের আরেক কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদারকে উদ্ধৃত করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম বলেছে, “সাত নম্বর ভবনের সপ্তম কিংবা অষ্টমতলা থেকে আগুনে পুড়ে যাওয়া একটি কুকুরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুড়ে গেছে ও ফুলে ছিল মৃত কুকুরটি।”
সুরক্ষিত একটি ভবনের অষ্টম তলায় একটি কুকুর কীভাবে উঠতে পেরেছিল, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। কেউ কেউ বলছেন, তবে কি নিরাপত্তায় এতই গলদ ছিল।
অভিযোগ করা হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিগত সরকারের দুর্নীতির যে অনুসন্ধান চালাচ্ছে, তা বিঘ্নিত করতেই নথিপত্র পুড়িয়ে দিতে এই আগুন লাগানো হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাবেক মহাপরিচালক আলী আহমেদ খান আগুনের রকমফের দেখে ঢাকা পোস্টকে বলেন, “এটা স্যাবোটাজ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আগুনটা শর্ট সার্কিট থেকে হলে একসঙ্গে ৩-৪ জায়গায় লাগার কথা নয়। দুর্বৃত্তদের লাগানো আগুনেই এমনটা হয়।
“দুর্বৃত্তরা যখন আগুন লাগায়, তখন একসঙ্গে একাধিক স্থানে আগুন লাগে। এমন দুর্বৃত্তায়নের আগুন আমি আগেও দেখেছি। এখানেও তাই হয়েছে।”
অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, “সচিবালয় তো রাষ্ট্রের ‘কি পয়েন্ট’, কেপিআইভুক্ত এলাকা। যদিও এখানে আগেও একাধিকবার আগুন লেগেছে। পিডব্লিউ কাজও করেছে। আবার কেন তাহলে আগুন লাগল?”
সচিবালয়ের অগ্নিকাণ্ডকে নাশকতার অংশ মনে করছেন ফায়ার সার্ভিসের সাবেক আরেক মহাপরিচালক আবু নাঈম মো. শাহিদউল্লাহও।
তিনিও ঢাকা পোস্টকে বলেন, “এই আগুন স্যাবোটাজ, অবশ্যই এটা সন্দেহের শুরুতে রাখতে হবে। লাগানো আগুন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এই আগুনের মোটিভ কী হতে পারে? এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে সচিবালয়ের চারটা ফ্লোরে আগুন, যেখানে চারটা কমিশন চলছে। যেখানে বিভিন্ন ধরনের নথিপত্রের প্রয়োজন হবে।
“এই আগুনের টার্গেটই হচ্ছে সেই গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়িয়ে দেওয়া। কারণ কমিশনের জন্য বিভিন্ন সময় নথিপত্রের প্রয়োজন হবে। যে উচ্চপদস্থ কমিটি গঠন করা হয়েছে, তাদের সবকিছুর আগে বিবেচনায় রাখতে হবে যে এটা স্যাবোটাজ। যদি প্রথমেই স্যাবোটাজ না ধরে তদন্ত করা হয়, তাহলে ভুল হবে।”
সচিবালয়ে বাইরের কারও যাওয়ার সুযোগ থাকে না- বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “আগে দেখতে হবে সেখানে মানুষ ছিল কি না? সেখানে মশার কয়েল, রান্না হিটার বা সিগারেট ছিল কি না? মানুষ না থাকলে এসব থাকার কথা নয়। মানুষ না থাকলে তো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকার কথা। সেটা বন্ধ করা না থাকলে ইনটেনশনটা বুঝতে হবে।”
আবু নাঈম বলেন, “যেসব কার্যালয়ে আগুন লেগেছে, সেখানে ডানে-বায়ে কীভাবে ভবনের প্রান্তে চলে যায়? আবার নিচেও আগুন দুই কোনায় পৌঁছে যাওয়া অবিশ্বাস্য। এখানে বারুদের ব্যবহার হতে পারে। সেটা তদন্তে খুঁজতে হবে।”
ফায়ার সার্ভিসের সাবেক পরিচালক শাকিল নেওয়াজ দাবি-দাওয়া নিয়ে সচিবালয়ে কর্মকর্তাদের আন্দোলনের দিকে ইঙ্গিত করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, “সেখানে বাইরের মানুষের প্রবেশের সুযোগ নেই। এরমধ্যে একটা পক্ষের ৪০ ঘণ্টার আল্টিমেটাম চলছে। কারা আল্টিমেটাম দিয়েছে, তাদের ধরতে হবে।”
তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি
নানা ষড়যন্ত্রের আলোচনা চললেও সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সরাসরি কিছু বলতে চাননি।
তিনি সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “এটা ইনভেস্টিগেশনের আগে আমি তো বলতে পারব না। ইনভেস্টিগেশনের পরে আপনাদের আমরা জানাব।”
এত সুরক্ষিত জায়গায় আগুন লাগার কারণ নিয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “অ্যাক্সিডেন্ট তো সব জায়গায় হতে পারে, এজন্যই তো অ্যাক্সিডেন্ট বলে। সচিবালয়ের ভেতরেও তো হতে পারে। এজন্য তো সচিবালয়ের ভেতরে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি রাখা হয়।”
বিকালে উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এলে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকেও একই প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। সংবাদ সম্মেলনে তার পাশে আসিফ মাহমুদও ছিলেন।
সচিবালয়ের অগ্নিকাণ্ড দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত- এই প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা বলেন, “সরকার তো ধারণা করতে পারে না। আমরা আপনাদের বলতে পারি, আমরা খুব গুরুত্বের সাথে এই ঘটনাকে দেখছি। এটা আমাদের সবার নিরাপত্তার বিষয়। এখানে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ নথি থাকে। তাই আমরা তিন দিনের মধ্যে প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্ট দিতে বলেছি।”
সকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা একটি কমিটি গঠনের কথা বলার পর সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সেই কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন) মোহাম্মদ খালেদ রহীমকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিতে একজন সদস্য-সচিব এবং পাঁচজন সদস্য রাখা হয়। সদস্য হিসাবে রাখা হয়- জননিরাপত্তা বিভাগের প্রতিনিধি (যুগ্মসচিব পদমর্যাদার নিচে নয়), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি (যুগ্মসচিব পদমর্যাদার নিচে নয়), স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতিনিধি (যুগ্মসচিব পদমর্যাদার নিচে নয়), ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের প্রতিনিধি।
তবে বিকালে উপদেষ্টার পরিষদের জরুরি বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে রিজওয়ানা হাসান উচ্চ ক্ষমতার তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান। এই কমিটিতে বিশেষজ্ঞদেরও রাখা হয়েছে।
এই কমিটির নেতৃত্বে থাকছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক থাকছেন সদস্য সচিব।
আইজিপি, সশস্ত্র বাহিনীর একজন বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞও এই কমিটিতে থাকবেন।
সরকারের অনেক তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখে না, এবারও কি দেখবে- এই প্রশ্নে রিজওয়ানা বলেন, “আমরা খুব দ্রুত চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি করব। আমরা কথা দিচ্ছি, সাংবাদিকদের সাথে শেয়ার করা হবে।”