অবশেষে বোলিং অ্যাকশনে থাকা নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেয়েছেন বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। ইংল্যান্ডের লাফবোরো বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে তৃতীয়বারের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি এখন যেকোনো পর্যায়ের ক্রিকেটে বোলিং করার ছাড়পত্র পেয়েছেন।
গত বছর সেপ্টেম্বরে কাউন্টি ক্রিকেটে সারের হয়ে খেলার সময় সাকিবের বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটি ধরা পড়লে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) তার বোলিংয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর লাফবোরোর ল্যাবে প্রথম পরীক্ষায় ব্যর্থ হন তিনি। পরে চেন্নাইয়ের শ্রী রমাচন্দ্র সেন্টার ফর স্পোর্টস সায়েন্সে দ্বিতীয় পরীক্ষাতেও আসেনি সফলতা।
এরপর নিবিড় অনুশীলনের পর বোলিং অ্যাকশন শুধরে তৃতীয় দফায় আবার ইংল্যান্ডের লাফবোরো বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবেই পরীক্ষায় অবতীর্ণ হন ৩৭ বছর বয়সী সাকিব। গত ৯ মার্চ লাফবোরোতে তৃতীয় পরীক্ষায় মোট ২২টি ডেলিভারি করেন তিনি। এরপর গতকাল আসা পরীক্ষার ফলে জানা যায়, পাস করেছেন সাকিব, তার বোলিং অ্যাকশন এখন বৈধ।
বোলিং অ্যাকশন ত্রুটিমুক্ত হওয়ায় আবারও অলরাউন্ডার হিসেবে ক্রিকেটে ফেরার পথ তৈরি হলো সাকিবের জন্য। তবে আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, ভবিষ্যতে বোলিং অ্যাকশনে আবার ত্রুটি ধরা পড়লে এক বছরের নিষেধাজ্ঞায় পড়বেন তিনি।
জানা গেছে, রাজনৈতিক কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে থাকা সাকিবকে আবারও দলে নেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে কাউন্টি দল সারে। এ জন্য সাকিবের বোলিং অ্যাকশন শোধরাতে তাকে সহায়তাও দিয়েছে সারে। তবে সাকিব সারেতে ফিরবেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়।
বিদেশি লিগ খেলার কারণে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের সরকার পতনের আগে থেকেই বিদেশে ছিলেন সাকিব। এরপর থেকে আর দেশে ফেরা হয়নি মাগুরা থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচিত সাবেক এই সংসদ সদস্যের।
এর মধ্যে গত ২২ আগস্ট দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় আসামি করা হয় সাকিবকে। পরে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতেও আসে তার নাম। সর্বশেষ গত জানুয়ারিতে ‘চেক ডিজঅনার’-এর একটি মামলায় সাকিবের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। ফলে দেশে ফিরলে গ্রেপ্তার হতে পারেন তিনি।
মাঝে গত সেপ্টেম্বরে ভারতে টেস্ট সিরিজ খেললেও এরপর থেকেই জাতীয় দলের বাইরে আছেন সাকিব আল হাসান। ওই সিরিজের মাঝপথে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণাও দেন তিনি। সে সময় জানিয়েছিলেন, অক্টোবরে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে শেষবারের মতো মাঠে নামতে চান তিনি, অবসর নিতে চান ঘরের মাঠ থেকে।
তবে সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি দীর্ঘ সময়জুড়ে বিশ্বে অলরাউন্ডার হিসেবে সব ফরমেটে শীর্ষস্থান দখলে রাখা সাকিব আল হাসানের। নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় থাকায় সে সময় দেশে ফিরতে পারেননি সাকিব। যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাই এসে আবার ফিরে যেতে হয় তাকে।
সর্বশেষ ফ্র্যাঞ্জাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্ট নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন সাকিব। এর মধ্যে বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটি ধরা পরার পর আইসিসির নিষেধাজ্ঞা থাকায় সব ধরনের ক্রিকেট থেকে বিরত ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় এই তারকা।
অ্যাকশন ত্রুটিমুক্ত হওয়ায় এখন আবার সব ধরনের ক্রিকেটেই ফেরার পথ তৈরি হলো তার। তবে দেশের জার্সিতে আর ফিরবেন কি-না তা নিশ্চিত করে জানেন না কেউই।