সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নিয়ে ছড়িয়ে পড়া গুজবের জবাবে বিবৃতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
দলটি জানিয়েছে, তাদের সভানেত্রী সুস্থ ও ভালো আছেন। তিনি নিয়মিত দলের কাজকর্ম করছেন। গতকালও চাঁদপুরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। এছাড়া বেশ কয়েকটি দেশের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন।
“আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সকলকে নিশ্চিত করতে চাই, দেশবাসীর দোয়ায় ও পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার কৃপায় জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন এবং তিনি নিয়মিতভাবে সকলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা চলেছেন এবং দলীয় নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করছেন।”
হঠাৎ করে কেন এমন বিবৃতি দিতে হলো আওয়ামী লীগকে?
দলটির নেতারা বলছেন, “বাংলাদেশে একটি মহল প্রচার করছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা গুরুতর অসুস্থ এবং তাকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও গুজব।”
আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, “বাংলাদেশে প্রথমসারির নেতা-নেত্রীদের শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে গুজব নতুন নয়। সামাজিক মাধ্যমে প্রায়ই তাদের মৃত্যু সংবাদও প্রচার হয়ে থাকে। গুরুতর অসুস্থতার কথা হামেশা প্রচার করা হয়।”
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার শেখ হাসিনা বেশি ব্যস্ত ছিলেন। দুপুরে চাঁদপুরের আওয়ামী লীগ কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে ভার্চুয়াল মাধ্যমে কথা বলেন। তাদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। রাতে বেশ কয়েকটি দেশের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ বলেছে, “আমরা দেশবাসীকে এই সকল ষড়যন্ত্রকারী ও বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারীদের এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানাচ্ছি। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, ষড়যন্ত্রকারীরা যতই চেষ্টা করুক না কেন, যতই বিভ্রান্তি ছড়াক না কেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লিগ ও জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জনগণের সম্পর্কে তারা কোনও ছেদ ঘটাতে পারবে না। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত জনগণের অধিকার আদায়ের রাজনীতি করে যাবেন।”
শেখ হাসিনার শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে অপপ্রচারের নিন্দা করে দলের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, একটি কুচক্রী মহল বরাবরের ন্যায় দল এবং দলের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর, বানানো ও ভিত্তিহীন তথ্য উপস্থাপন করে যাচ্ছে। এরা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিনিধি ও তাদের দোসর। যারা সর্বদা দেশ ধ্বংসের পাঁয়তারায় লিপ্ত। কেউ বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করুক বা জনগণের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হোক এটা তারা চায় না।”
এতে আরও বলা হয়, “বিপরীতে আওয়ামী লীগ সর্বদা দেশের জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করে আসছে। আর এ দলের সভাপতি হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনা জনকল্যাণের রাজনীতিকে ব্রত ধরে সকল প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে চলেছেন। তিনি দেশের জনগণ ও দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমান্তরালভাবে যোগাযোগ করে চলেছেন। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা জনগণের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনার এই সংযোগকে ভয় পায়।”
“সুতরাং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যাতে জনকল্যাণের রাজনীতি এগিয়ে যেতে না পারে সেজন্য একটি মতলবি মহল ষড়যন্ত্র করে বিভিন্ন মনগড়া ও বানানো তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।”
আগামী রোববার ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে শেখ হাসিনা-সহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে চার্জশিট দাখিল করবে বাংলাদেশ সরকার। ওই দিন বাংলাদেশ ও দেশের বাইরে প্রতিবাদ আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগ।
গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে ভারতের দিল্লিতে আছেন শেখ হাসিনা। দিল্লির একটি প্রথমসারির সরকারি বাংলোয় আছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তার বাংলোর নাম-নম্বর কখনও প্রকাশ করা হয় না।