যা আগে কখনও ঘটেনি জুলাই অভ্যুত্থানের পর তা দেখল বাংলাদেশ। ক্ষমতা হারিয়ে দেশ ছাড়লেন শেখ হাসিনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সদর্পে প্রকাশ্যে এল ইসলামী ছাত্রশিবির। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর ডাকসু নির্বাচন হলো, তাতে ভূমিধস বিজয় হলো জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠনটির। স্বাধীনতা সংগ্রামের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাত্তরে স্বাধীনতাবিরোধীদের জয়ে অভিনন্দন বার্তা এল পাকিস্তান থেকে।
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের নিরঙ্কুশ জয় অবাক করেছে অনেককে। বদলে যাওয়া বাংলাদেশে এই নির্বাচনে একাত্তরে হানাদার বাহিনীর দোসর ইসলামী ছাত্র সংঘের উত্তরাধিকার ছাত্রশিবির বেশ কিছু পদ পাবে বলে ধারণা করা গেলেও এত বিশাল ব্যবধানে জিতবে, তা বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলও আশা করেনি।
তাই ভোটের ফল দেখে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলে বসলেন, তলে তলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে ছাত্রলীগের সব ভোট নিয়ে নিয়েছে শিবির।
আসলে কি তাই? ভোটের হিসাব কী বলে? ডাকসুর নির্বাচন কমিশন হিসাব দেখাচ্ছে, প্রায় ৭৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ শিক্ষার্থী এবার ভোট দিয়েছেন, যে হার আগের নির্বাচনগুলোর তুলনায় বেশ বেশি।
ছাত্রশিবিরের প্যানেলের বিজয়ী সব প্রার্থীই ১০ হাজারের আশপাশে ভোট পেয়েছেন। তার মধ্যে ভিপি পদে জয়ী সাদিক কায়েম ১৪ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন। ভিপি পদে অন্য সব প্রার্থীর ভোট যোগ করলে তার চেয়ে মাত্র ১১০০ ভোট বেশি হয়।
বিভিন্ন পদে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের প্রার্থীদের ভোট ৫ থেকে ৬ হাজারের ঘরে। এথেকে ধারণা করা যায় যে ছাত্রদল শুধু তাদের সমর্থকদের ভোটই পেয়েছে।
কিন্তু অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধীদের সংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, অভ্যুত্থানের নেতা উমামা ফাতেমা নেতৃত্বাধীন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেল, বামদের একাংশের প্রতিরোধ পর্ষদের ভিপি ও জিএস প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান বেশ কৌতূহলের উদ্রেক ঘটায়। গতবারের ভিপি নুরুল হক নুরের সংগঠন ছাত্র পরিষদ পূর্ণ প্যানেল দিলেও নামমাত্র ভোট পেয়েছে।
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদার যেখানে ২১৩১ ভোট পেয়েছেন, সেখানে এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের ভোট পেয়েছেন ১১০৩ ভোট।
উমামা ফাতেমা ভিপি পদে যেখানে ৩৩৮৯ ভোট পেয়েছেন, সেখানে তার প্যানেলের জিএস প্রার্থী আল সাদি ভূইয়া পেয়েছেন ২৭১ ভোট।
তেমনি প্রতিরোধ পর্ষদের জিএস প্রার্থী মেঘমল্লার বসু যেখানে ৪৯৪৯ ভোট পেয়েছেন, সেখানে এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি পেয়েছেন মাত্র ৬৮ ভোট। অথচ এই ইমি ২০১৯ সালের নির্বাচনে ছাত্রলীগকে হারিয়ে শামসুন্নাহার হলের ভিপি হয়েছিলেন।
এই প্যানেলগুলোর ভিপি ও জিএস প্রার্থীর ভোটের ফারাকের সঙ্গে ছাত্রলীগের সমর্থকদের ভোট কোথায় গেল, সেই প্রশ্নও আসছে। তবে সংগঠনটির নেতারা বলছেন, এই বিরূপ সময়ে ছাত্রলীগের কারও ভোট দিতে যাওয়ার সুযোগই ছিল না।
ছাত্রলীগের সভাপতি, বিগত ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন প্রবাসে থেকে এক ভিডিও বার্তায় ডাকসুর এই গোটা নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যানের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এবারের ডাকসু নির্বাচন হয়েছে একটি ‘সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়ায়’, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘দখলদার সরকারের’ অনুগত হয়ে প্রার্থীদের তালিকা নির্ধারণ করে দিচ্ছে।
শিবিরকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ায় এই নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাদ্দাম বলেছেন, তারা থাকাকালে ২০১৯ সালের ডাকসুতে ধর্মভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলেও এবারের নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত এবং মৌলবাদী সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়েছে, যা দুই যুগ আগে পরিবেশ পরিষদে গৃহীত জাতীয় মতৈক্যেরও পরিপন্থী।
গত শতকের ‘৮০ এর দশকে ডাকসু নির্বাচনে প্যানেল দিলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবির সেভাবে কখনও প্রকাশ্য তৎপরতা চালাতে পারেনি। অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে শেখ হাসিনা সরকার জামায়াতের সঙ্গে ছাত্রশিবিরকেও নিষিদ্ধ করেছিল।
কিন্তু মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এসেই সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। এরপর ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি নিয়ে প্রকাশ্য হলে শিক্ষার্থীরা অবাক হয়ে দেখতে পান, যাদের এক বছর আগেও ছাত্রলীগের মিছিলে দেখা যেত, তারা আসলে শিবিরেরই নেতা।
গত বছর যখন ছাত্রশিবির সাদিক কায়েমকে তাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করে, তখন ছাত্রলীগের সঙ্গে ‘নৌকা-নৌকা’ স্লোগান দিতে থাকা একটি পুরনো ভিডিও ফিরে আসে ফেইসবুকে। ডাকসুতে জিএস পদে জয়ী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বর্তমান সভাপতি এস এম ফরহাদও ছাত্রলীগের কবি জসীম উদদীন হল শাখার পদধারী নেতা ছিলেন বলে প্রকাশ পায়।
সেই ছাত্রশিবিরের এমন বিজয়ে কী ছিল ‘ফ্যাক্টর’, তার অনুসন্ধানে গিয়ে বিবিসি বাংলা খুঁজে পেয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানের মূল পরিকল্পনা থেকে মাঠ পর্যায়ের সব নেতৃত্বে শিবির ছিল, এমন ন্যারেটিভই ডাকসুতে তাদের জয়ী হওয়ার বড় কারণ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অভ্যুত্থানে ছাত্রশিবির নেতাদের ভূমিকা তেমন ছিল না বললেও এই সংগঠনটির নেতারা বরাবরই দাবি করছেন, তারা নেপথ্যে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন বিবিসি বাংলাকে বলেন, গত এক বছরে জুলাইয়ের গণ অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের যে ন্যারেটিভ দাঁড় করানো হয়েছে, তা ভোটারদের প্রভাবিত করেছে।
“গণ অভ্যুত্থানের মালিকানা নিয়ে যে বাহাস ছিল, সেখানে শিবির বলেছে, গণ অভ্যুত্থানের মূল পরিকল্পনা থেকে আন্দোলনের নেতৃত্বের সব কিছুতে যেমন – প্রোফাইল লাল করা, এক দফার দাবি, স্লোগান সবকিছুর মূলে ছিল তারা।”
ডাকসুর সাবেক জিএস, বাংলাদেশ জাসদের নেতা মুশতাক হোসেন মনে করেন, স্বাধীনতার পর থেকে যে ধারার রাজনীতি প্রচলিত তার থেকে বর্তমান প্রজন্ম আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। বিভিন্ন দলকে দেখার পর এবার ধর্মভিত্তিক সংগঠনকে সুযোগ দেওয়ার কথা তরুণ প্রজন্ম বিবেচনা করেছে।
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদে ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার পর সংগঠনটি গোপনে রাজনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছিল। গত এক দশকে শিবির নেতারা ছাত্রলীগের পদ-পদবী নিয়ে নিজেদের সংগঠিত করার পুরো সুবিধা ভোগ করেন বলে মন্তব্য করেন মুশতাক।
ছাত্রলীগের অনুপস্থিতে ছাত্রশিবিরের বিপক্ষে আদর্শভিত্তিক শক্তিশালী কোনও সংগঠন না থাকার বিষয়টিও আসছে। যে সুযোগ ছিল ছাত্রদলের জন্য, তারা চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে বিতর্কিত হয়ে পড়ে বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন।
সরকার ও প্রশাসনের ওপর জামায়াতের প্রভাবও ছাত্রশিবিরের ভোট বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন তিনি।
“কারা সরকারের ওপর অদৃশ্য প্রভাব রাখছে, সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে, এসব বিষয় মাথায় রেখেছেন ভোটাররা। কারণ এদেশে ভোটাররা চিন্তা করেন, কে ক্ষমতায় আসতে পারবে? আমার একটা ভোট নষ্ট করবো না?”
ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছাত্রশিবির তার দীর্ঘ দিনের প্রস্তুতি, রাজনৈতিক কৌশল ও ইস্যু নির্ধারণে সঠিক অবস্থানে থাকায় ডাকসুতে এই ফল পেয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর শ্বিবিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক স্নিগ্ধা রেজওয়ানা ডয়চে ভেলেকে বলেন, “আমি মনে করি না ডাকসুতে শিবিরের এই জয় কোনো আকস্মিক ঘটনা বা হঠাৎ করে হয়েছে। এটা আসলে অনুমান করা যাচ্ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ১০-১৫ বছরে তাদের প্রভাব এবং অবস্থান অনেক বেড়েছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি। এবার ৪ হাজারের মতো ভোটার ছিলেন মাদ্রাসা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা। ছাত্রশিবিরের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম, ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খানও মাদ্রাসা থেকে উঠে আসা।
অধ্যাপক রেজওয়ানা বলেন, “২০১০-১১ সালের দিকে তখনকার সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনক্লুশনের নামে ১০-২০ ভাগ ছাত্র মাদ্রাসা থেকে নেওয়ার নির্দেশনা দেয়। ফলে এই সময়ে বিপুল পরিমাণ মাদ্রাসার ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরেছে। আর ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি আধুনিক নয়। মুখস্থনির্ভর পরীক্ষা পদ্ধতিও তাদের সুযোগ করে দিয়েছে।”
আরেকটি কারণ দেখিয়ে তিনি বলেন, “নানাভাবে বিগত কয়েক বছর ধরে, পর্দা, হিজাব বা বোরখাকে সামনে এনে একটা সাংষর্ষিক মনোভাব তৈরি করা হয়েছে। এটা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটা পলিটিক্যাল ইস্যু তৈরি করা হয়। বিগত সরকার আবার এই ইস্যুতে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। এটাকে সে পুঁজি করার চেষ্টা করে। এইসব বিষয়গুলো দক্ষিণপন্থিদের উত্থানের চিন্তা থেকে মনোযোগ অন্যদিকে সরিয়ে নেয়।”
এবার ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের গুছিয়ে উঠতে না পারা, বামসহ বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে বিভক্তিও ছাত্রশিবিরকে সুযোগ করে দিয়েছে।
অধ্যাপক রেজওয়ানা বলেন, “প্রকাশ্যে বা পরিচয় গোপন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের মতো সংগঠিত আর কোনো ছাত্রসংঠন নাই। ছাত্রদল না, ছাত্রলীগ তো নাই, বামপন্থিরা তো ১৪ ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। শিবির তার সংগঠন ছাড়াও অন্য সংগঠনে আছে, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনে আছে। প্রকাশ্য এবং গোপন নেটওয়ার্ক তাদের অনেক বড়।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, “এবারের ডাকসু নির্বাচনে আর যারা ছিল তারা একটি অ্যান্টি-শিবির ন্যারেটিভ তৈরি করে প্রচার চালিয়েছে। একদিকে শিবির, আরেক দিকে অ্যান্টি-শিবির। কিন্তু এই অ্যান্টি-শিবির ন্যারেটিভ যারা তৈরি করেছে, তারা বহু প্যানেলে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল।”
পাশাপাশি ভুরি ভুরি প্রার্থী দাঁড় করানোর কৌশলও ছাত্রশিবির নিয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।
উমামা ফাতেমা এক ফেইসবুক পোস্টে দাবি করেন, “ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলের ভোটকেন্দ্রের বাইরে এই লিফলেটগুলা দেয়া হচ্ছে। যার এক প্রান্তে ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীদের তালিকা, আর অপর প্রান্তে হলের স্বতন্ত্র পরিচয়ে নির্বাচন করা প্রার্থীদের তালিকা।”
জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্রশিবিরের সঙ্গে আন্দোলনে থাকা সাবেক এই বাম নেতা ভোট শেষের পরপরই ফেইসবুকে লেখেন, “অভিনব পন্থায় নির্বাচন কারচুপি হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসের কালো রাত হয়ে থাকবে। নিজেদের হীনস্বার্থের জন্য ইসলামী ছাত্রশিবির কি পরিমাণ বেঈমানি করেছে জাতির সাথে, তা ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে।”
ভোট গণনার সময় সেই কক্ষে শিবির নেতাদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ছাত্রদলসহ বিভিন্ন প্যানেল কারচুপির অভিযোগ তুললেও এখনও কোনো শক্ত প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
ছাত্রশিবির প্রচার ও ভোট টানার কৌশলেও অন্যদের চেয়ে এগিয়ে ছিল বলে মনে করেন অধ্যাপক সাব্বির। তিনি বলেন, “প্রার্থী নির্বাচন থেকে শুরু করে কৌশল নির্ধারণে শিবির এগিয়ে ছিল। তারা ছাত্রদের বাড়ি বাড়ি পর্যন্ত গিয়েছে। সংগঠনটির অর্থও আছে অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। তাদের দীর্ঘদিনের কৌশল পরিকল্পনার ফল তারা পেয়েছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের এর আগে প্রকাশ্য কাজ না থাকায় চট্টগ্রাম কিংবা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সরাসরি তাদের বিরুদ্ধে কোনো নেগেটিভ প্রচার করা কঠিন ছিল বলে মনে করেন অধ্যাপক সাব্বির।
সাবেক ডাকসু জিএস মুশতাকও বলেন, “শিবিরকে যারা ভোট দিয়েছেন, তারা যে সবাই শিবিরের আদর্শ চিন্তা করে ভোট দিয়েছেন তা নয়, তারা ক্যাম্পাসে দখলদারীর ছাত্র রাজনীতির আশঙ্কা থেকে ভোট দিয়েছেন। কারণ তারা অতীতে অনেক ছাত্র সংগঠনের দখলদারিত্বের রাজনীতি দেখেছেন, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের রাজনীতি দেখেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের সেই রেকর্ড নাই।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দক্ষিণপন্থিদের উত্থান নিয়ে অধ্যাপক সাব্বির বলেন, “এটা তো স্পষ্ট যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নির্বাচনের মাধ্যমে দক্ষিণপন্থিদের উত্থান হয়েছে। কিন্তু এখন দেখার বিষয় তারা কী করে? এটা কিন্তু বিএনপির জন্য একটা ওয়েক আপ কল।”