সৌদি আরবের ক্যাম্প থেকেই ফাহামিদুল ইসলাম ইতালিতে ফিরে যাওয়ার পর থেকে একদল সমর্থক ক্ষোভ প্রকাশ করে চলেছেন। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি রাস্তাও নেমেছেন তারা।
তারা দাবি করেছেন, বাফুফেতে থাকা সিন্ডিকেটের জন্য দলে জায়গা হয়নি প্রতিভাবান এই তরুণ স্ট্রাইকারের।
এই বিষয়ে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা স্পষ্ট করেছেন, ফাহামিদুলকে এখনও জাতীয় দলের জন্য প্রস্তুত মনে হচ্ছে না তার। অবশ্য এরপরও প্রশ্ন তুলেছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বৈঠক করেছেন বাফুফে প্রধান তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে।
ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপের ম্যাচের ৩০ জনের দলে ছিলেন ফাহামিদুল। গত ১০ মার্চ সৌদি আরবে ক্যাম্পে যোগ দেন ১৭ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। সেখানে একটি ‘ক্লোজড ডোর’ প্রীতি ম্যাচে তার হ্যাটট্রিক করার খবর ছড়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
তাকে ছাড়াই সৌদি আরব থেকে দল ঢাকায় ফেরার পর বিপত্তি শুরু। কাবরেরা জানান, ‘আরও সময় প্রয়োজন’ বলে ফাহামিদুলকে ভারত ম্যাচের দলে রাখেননি তিনি। বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূইয়াও ইতালি প্রবাসী তরুণের প্রশংসা করেন।
ক্ষুব্ধ সমর্থকরা এই সংবাদ সম্মেলনের সময়ও ‘হামজার বাংলায় সিন্ডিকেটের ঠাঁই নাই’, ‘আমার-তোমার বাংলায়, সিন্ডিকেটের ঠাঁই নাই’ লেখা ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হোটেলের বাইরে অবস্থান নেন।
বিভিন্ন সময়ে সমর্থকরা কোনো কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে এমন দাবি জানান, তবে তাতে দায়িত্বশীল পদে থাকা কারোর জড়িয়ে পড়া বিরল। বিশেষ করে যাদের অবস্থানগত কারণে হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখার শঙ্কা থাকে। সেই কাজটি করলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ।
হামজা চৌধুরীকে নিয়ে বাফুফে প্রধান তাবিথ দেখা করতে গেলে এই প্রসঙ্গে হুঁশিয়ারী দেন উপদেষ্টা।
“দেশের স্বার্থেই যোগ্য খেলোয়াড়দের বঞ্চিত করার কোনো সুযোগ নেই। প্লেয়ার সিলেকশনে যেন স্বজনপ্রীতি বা সিন্ডিকেটের শিকার কেউ না হোন, সে বিষয়ে বাফুফেকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে, এ বিষয়ে দুর্নীতির প্রমাণ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার।”
অবশ্য বাফুফেতে কোনো সিন্ডিকেট থাকার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তাবিথ।
“ফুটবল ফেডারেশনে সিন্ডিকেট করার কোনো সুযোগ নেই। যোগ্যতা অনুযায়ী সবাই যার যার জায়গা করে নেবে, এমন কোনো কিছুর আভাস মিললে ব্যবস্থা নেবে ফেডারেশন।”
“সৃষ্ট সংকট কোনো সংকট নয়, ফাহামিদুলকে আমরা বাদ দিয়ে দেইনি, ও প্রতিভাবান; তবে ওকে আমরা আরও সময় দিতে চেয়েছি। আগামী জুনেই ঘরের মাঠে বাংলাদেশের ম্যাচ রয়েছে, খুব শীঘ্রই হয়তো তাকে আমরা মাঠে দেখতে পারি। সমর্থকদের এতটুকু বলবো, হতাশ হওয়ার কিছু নেই।”
উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে ফাহমিদুলকে নিয়ে নিজের ভাবনা স্পষ্ট করেন কাবরেরা।
“আমিই তাকে নির্বাচন করেছি, যেহেতু কয়েক মাস তাকে অনুসরণ করেছি, তার ক্লাব ও ক্লাব পরিচালকদের সাথে যোগাযোগ রেখেছি। ডাকার আগেই আমি তাকে ভালোভাবি জানি। সে ক্যাম্পে এলো, সে আমাদের সাথে এক সপ্তাহ ছিল, এতে করে আমরা তাকে আরও ভালোভাবে জানতে সক্ষম হলাম, কিন্তু তাকে নিয়ে যে সিদ্ধান্ত আমি নিয়েছি, তার আরও সময় প্রয়োজন এবং এটাই মূল কথা।”
“সে মেধাবী খেলোয়াড়। সে খুবই তরুণ, মাত্র ১৭ বছর বয়স। ভবিষ্যতে জাতীয় দলের খেলার মান তার আছে। এ মুহূর্তে ভারতের মুখোমুখি হতে এবং এমন ম্যাচের চ্যালেঞ্জ নিতে (তার চেয়ে) অন্যরা আরও বেশি প্রস্তুত। ফাহামিদুলকে নিয়ে নেতিবাচক কিছু নেই। সে আমাদের সঙ্গে আছে, দলের অংশ এবং এখন পরের লক্ষ্যের জন্য প্রস্তুতি নিতে তার আরও সময় প্রয়োজন। সবকিছুই ইতিবাচক। তবে, এ মুহূর্তে তার ফেরার কোনো সুযোগ নেই। সে ইতালি চলে গেছে।”
এ সম্পর্কিত আরও খবর: