রোববারের পত্রিকা: ‘বিএনপিতে হচ্ছেন তিন মহাসচিব’

newspaper

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফরে আসা এবং অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার বৈঠকের খবর দিয়েই রোববার প্রধান প্রতিবেদন করেছে বেশিরভাগ সংবাদপত্র। এর পাশাপাশি বিএনপিতে সাংগঠনিক পরিবর্তন, ক্ষমতাচ্রুত আওয়ামী লীগের আমলে ঋণ জালিয়াতি, কৃষিপণ্যে দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে কমে যাওয়ার কারণ ও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির নিয়ে করা সংবাদও গুরুত্বের সঙ্গে ছেপেছে সংবাদপত্রগুলো। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক রোববার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন

দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক দল বিএনপিতে মহাসচিবের তিনটি পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সংবাদপত্রটি। ‘বিএনপিতে হচ্ছেন তিন মহাসচিব’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপিতে মহাসচিব হবেন তিনজন। একজন হবেন সাংগঠনিক বিষয়ক মহাসচিব, আরেকজন আন্তর্জাতিক বিষয়ক মহাসচিব এবং অন্যজন দায়িত্ব পালন করবেন প্রশাসনিক বিষয়ক মহাসচিব হিসেবে। দলের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে কিংবা চেয়ারপারসনের গঠনতান্ত্রিক ক্ষমতা বলে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে মহাসচিবদের। এ ছাড়াও দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির কাঠামোতে আরও বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। যুক্ত হতে পারে কো-চেয়ারম্যান পদ। তবে এটি শুধু দলের জাতীয় সম্মেলন/জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমেই হতে পারে। এসব বিষয়ে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দলীয় হাইকমান্ড তারেক রহমান সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের সদস্যদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেছেন। সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রথম আলো

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর এবং রাজনৈতিক দল ও সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার বৈঠকের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্যের ওপর জোর’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান সংস্কারপ্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত হলেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ প্রত্যাশা করে সংস্কারে সহায়তার কথাও জানালেন তিনি। তবে কাজটি দেশের রাজনৈতিক দল ও সরকারকেই করতে হবে বলে মনে করেন তিনি। এ জন্য ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

গতকাল শনিবার দুপুরে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে জাতিসংঘ ঢাকা কার্যালয়। এতে সরকারের প্রতিনিধি, সংস্কার কমিশনের প্রধানেরা এবং রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। বৈঠকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও সংস্কারপ্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে পাঁচটি সংস্কার কমিশনের প্রধানেরা তাঁদের নিজ নিজ সংস্কার প্রতিবেদনের সংক্ষিপ্তসার তুলে ধরেন। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা তাঁদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। কোনো কোনো রাজনৈতিক দল লিখিত বক্তব্য জমা দেয়।

কালের কণ্ঠ

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর এবং রাজনৈতিক দল ও সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার বৈঠকের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠও। ‘সংলাপে সহায়তায় প্রস্তুত জাতিসংঘ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে জাতীয় সংলাপ, শান্তি, আস্থা ও নিরাময়কে উৎসাহিত করতে সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত রয়েছে জাতিসংঘ। গতকাল শনিবার ঢাকায় একটি হোটেলে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘দেশ যখন গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার এবং পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে চাই যে জাতিসংঘ শান্তি, জাতীয় সংলাপ, আস্থা ও নিরাময়কে উৎসাহিত ও সহায়তা করতে প্রস্তুত।’

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনও বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্য পদ লাভের ৫০তম বার্ষিকীর সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিবের রমজান সংহতি সফর বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ—উভয়ের জন্যই একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। কারণ মহাসচিব নিজেই জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সর্বোচ্চ ত্যাগের পর একটি নতুন বাংলাদেশের গঠনমূলক পর্যায় প্রত্যক্ষ করছেন। ওই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ছিল একটি ন্যায়সংগত, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন। জাতিসংঘ মহাসচিবের এই সফর সরকার এবং ভবিষ্যতের বাংলাদেশের জন্য উল্লেখযোগ্যভাবে অর্থবহ বলেও তিনি জানান।

প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, মায়ানমারে ব্যাপক সংঘাত চলছে। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসন সম্ভব নয়।

সমকাল

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর এবং রাজনৈতিক দল ও সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার বৈঠকের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকালও। ‘দলগুলোর নানা মত, গুতেরেস চান ঐক্য’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকে সংস্কার এবং নির্বাচন নিয়ে দলীয় অবস্থান তুলে ধরেছে রাজনৈতিক দলগুলো। সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছে বিএনপি। জামায়াতে ইসলামী জানিয়েছে, টেকসই গণতন্ত্র এবং সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এনসিপির চাওয়া গণপরিষদের সংবিধান সংস্কার। সংস্কার কমিশনগুলো বৈঠকে সংস্কারের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘সংস্কার প্রয়োজনীয়। জাতিসংঘ এতে পাশে থাকবে। সংস্কার কীভাবে, কতটুকু হবে, তা জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে একমত হয়ে করতে হবে।’ পর্তুগালের উদাহরণ দিয়ে তিনি আশাবাদ জানিয়েছেন, জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলো মিলে এই পথ পাড়ি দিতে পারবে।

ইত্তেফাক

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর এবং রাজনৈতিক দল ও সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার বৈঠকের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাকও। ‘ঐকমত্য হলে সহায়তা দেবে জাতিসংঘ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়েছেন বিএনপি, জামায়াত ও তরুণদের নেতৃত্বে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সহ সাতটি রাজনৈতিক দলের নেতা এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা (যারা পাঁচটি সংস্কার কমিশনের প্রধান)। গতকাল শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট, সংস্কারের প্রত্যাশা ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছেন, সংস্কার-নির্বাচন ইস্যুতে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারলে জাতিসংঘ সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

জাতিসংঘ ঢাকা অফিসের উদ্যোগে আয়োজিত এই গোলটেবিল বৈঠক বেলা ২টায় শুরু হয়ে চলে ৩টা পর্যন্ত। বৈঠকে শুধু নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কারগুলো শেষ করে দ্রুত সংসদ নির্বাচনের কথা বলেছে বিএনপি। জামায়াতের পক্ষ থেকে নির্বাচনের পাশাপাশি সংস্কারের ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচারে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। একই সঙ্গে দলটি সংবিধান সংশোধনে গণপরিষদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে করার ওপরও গুরুত্ব দিয়েছে।

যুগান্তর

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে অবিশ্বাস্য রকমের জালিয়াতি হয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘অবিশ্বাস্য ঋণ জালিয়াতিশিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের বিরুদ্ধে অবিশ্বাস্য জালিয়াতির তথ্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। গ্রুপটির নামে এতদিন যে খেলাপি ঋণের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে বাস্তবে তা দ্বিগুণের বেশি। অর্থাৎ খেলাপির অঙ্ক গোপন রেখে অর্ধেকের কম দেখানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত সম্পন্ন হওয়া তদন্তে বেক্সিমকো গ্রুপের নামে-বেনামে ৫৩ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণের তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। এটি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

শুধু তাই নয়, আমদানি-রপ্তানির আড়ালে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার হিসাব এখনও মিলছে না। এসব টাকা পাচার হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে ১ হাজার ১৪০ কোটি টাকা পাচারের তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে। আর সব মিলিয়ে মোট ৬১ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ, লেনদেন স্থগিত বা আটক করা হয়েছে। বিদেশে ৫টি শেল কোম্পানির (প্রকৃত মালিকের পরিচয় গোপন করে বেনামি কোম্পানি) অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এছাড়া পিতা (সালমান) পুত্রের মতো চাচা (সালমান) ভাতিজা মিলেও টাকা পাচার করেছেন।

বণিক বার্তা

আকস্মিকভাবে হিমাগারের ভাড়া বেড়ে যাওয়ার কারণে কৃষিপণ্যের দাম উৎপাদন খরচের নিচে নেমে এসেছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা।  ‘হিমাগারের আকস্মিক ভাড়া বৃদ্ধিতেই দাম পড়েছে কৃষিপণ্যের’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৃষক পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি টমেটো উৎপাদনে তাদের ব্যয় হয় ১২-১৩ টাকা। আর পণ্যটি রাজধানীর বাইরে বিক্রি হচ্ছে স্থান ও মানভেদে প্রতি কেজি ৮ থেকে ১৮ টাকায়। পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যয় কেজিতে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। কোনো কোনো স্থানে তা ৩৫ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে।

এসব কৃষিপণ্যের দাম উৎপাদন ব্যয়ের নিচে নেমে আসার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা দায়ী করছেন আকস্মিকভাবে হিমাগারের ভাড়া বেড়ে যাওয়াকে। তাদের ভাষ্যমতে, গত মৌসুমে আলুর ভালো দাম পাওয়ায় এবার দেশে আলুর আবাদ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি জমিতে। উৎপাদনও ১ কোটি ২০ লাখ টন ছাড়ানোর আশা করা হচ্ছে। যদিও কৃষক পর্যায়ে আলুর উৎপাদন খরচও উঠছে না এখন। কৃষি খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত হিমাগার ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়ায় আলু সংরক্ষণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। তাই ছয় মাস বাড়তি ভাড়া দিয়ে আলু সংরক্ষণের ঝুঁকি না নিয়ে মাঠেই কম দামে আলু বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এতে ভরা মৌসুমে আলুর দাম খুচরা বাজারে কেজিতে ২০ টাকার নিচে নেমে এলেও মৌসুম শেষে বাজার চড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনার অভাবে একই অবস্থা পেঁয়াজ ও টমেটোর বাজারেও।

কালবেলা

আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে জামায়াতে ইসলামীর গ্রহণযোগ্যতা ও গুরুত্ব বেড়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালবেলা। ‘কূটনীতিকপাড়ায় গুরুত্ব বেড়েছে জামায়াতের’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর গ্রহণযোগ্যতা ও গুরুত্ব বেড়েছে। সংগঠনটির নেতারাও প্রভাবশালী এবং উন্নত রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কোন্নয়নে মনোযোগী হয়েছেন। গত সাত মাসে তারা অন্তত ১৫টি দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও কূটনীতিকদের সঙ্গে নিবিড় বৈঠক করেছেন। চীনসহ প্রভাবশালী পাঁচটি দেশ সফর করেছেন জামায়াতের আমির ও সেক্রেটারি জেনারেল। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বদরবারে নিজেদের নতুনভাবে তুলে ধরছে জামায়াত। তারা প্রমাণ করতে চাইছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় জামায়াত প্রসঙ্গে যেসব বার্তা বিশ্বদরবারে দেওয়া হয়েছে, সেগুলো ‘সম্পূর্ণ ভুল, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’ সংগঠনের নেতারা নিজেদের পজিটিভ ইমেজ বিশ্বদরবারে তুলে ধরার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এর মাধ্যমে জামায়াত আন্তর্জাতিকভাবে নিজেদের পক্ষে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার যখনই সুযোগ পেয়েছে, তখনই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে বিশ্বদরবারে ‘জঙ্গি, উগ্রবাদী, মানবতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী’সহ নানা নেতিবাচক বিশেষণ উপস্থাপন করে ভুল বার্তা দিয়েছে। এসব প্রোপাগান্ডার মুখে সংগঠনটিকে কোণঠাসা রাখার নীতি ছিল সরকারের। ধীরে ধীরে ওইসব অপপ্রচারের সমুচিত জবাব দিচ্ছে জামায়াত। এরই মধ্যে শক্তিশালী করা হয়েছে জামায়াতের কূটনৈতিক উইংকে। এই উইংয়ের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর তাদের সংগঠন পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। অভ্যন্তরীণ রাজনীতির মাঠ গোছানোর পাশাপাশি কূটনৈতিক পাড়ায়ও যোগাযোগ বাড়িয়েছেন তারা।’

নয়া দিগন্ত

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর এবং রাজনৈতিক দল ও সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার বৈঠকের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়া দিগন্তও। ‘সংলাপে সহায়তা দিতে প্রস্তুত জাতিসঙ্ঘশিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সংস্কার ও রূপান্তরের গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিবাহিত করছে মন্তব্য করে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, একটি ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও উন্নত ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টার সমর্থনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ভূমিকা রাখতে হবে। আমি নিশ্চিয়তা দিচ্ছি যে, জাতীয় সংলাপে আস্থা, শান্তি ও ক্ষত পূরণে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে জাতিসঙ্ঘ প্রস্তুত থাকবে। সবার জন্য একটি টেকসই ও বৈষম্যহীন ভবিষ্যৎ গঠনে জাতিসঙ্ঘ বাংলাদেশের জনগণের অবিচল অংশীদার হিসেবে কাজ করে যাবে।

গতকাল দিনব্যাপী ব্যস্ত কর্মসূচি শেষে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন। সকালে গুলশানে নতুন ‘জাতিসঙ্ঘ অভিন্ন প্রাঙ্গণ’ পরিদর্শনের মাধ্যমে তৃতীয় দিনের কর্মসূচি শুরু করেন অ্যান্তোনিও গুতেরেস। এরপর তিনি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও সংস্কার কমিশনের প্রধানদের সাথে মতবিনিময় করেন। একই স্থানে তিনি যুব সম্প্রদায় ও নাগরিক সমাজের সাথে বৈঠক করেন। সন্ধ্যায় তার সম্মানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেয়া ইফতার ও নৈশভোজে যোগ দেন।

আজকের পত্রিকা

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর এবং রাজনৈতিক দল ও সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার বৈঠকের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকাও। ‘সংস্কার কখন কতটুকু হবে সিদ্ধান্ত নেবে দলগুলো’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সংস্কার খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মনে করেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, সংস্কারপ্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে পারে জাতিসংঘ। তবে কতটুকু সংস্কার করা হবে এবং তার কতটা নির্বাচনের আগে এবং কতটা পরে হবে, দেশের জনগণের সঙ্গে আলোচনা করে রাজনৈতিক দলগুলোকেই তা ঠিক করতে হবে।

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল শনিবার রাজনৈতিক দল এবং তরুণ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলাদা বৈঠকে এসব কথা বলেন জাতিসংঘের মহাসচিব। পরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনেও সংস্কারপ্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের সহায়তার কথা বলেন তিনি।

জাতিসংঘের ঢাকা অফিসের উদ্যোগে গতকাল দুপুরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক করেন আন্তোনিও গুতেরেস। বৈঠকের মূল অ্যাজেন্ডায় ছিল সংস্কার কর্মকাণ্ড। এতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, নাগরিক ঐক্য, সিপিবি, এবি পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন ও এনসিপির নেতারা অংশ নিয়ে সংস্কার বিষয়ে তাঁদের মতামত তুলে ধরেন। বাংলাদেশে চলমান সংস্কার কার্যক্রমে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সহায়তার আশ্বাস আসে বৈঠক থেকে।

দেশ রূপান্তর

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর এবং রাজনৈতিক দল ও সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার বৈঠকের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তরও। ‘সন্ধিক্ষণে সহায়তায় প্রস্তুত জাতিসংঘ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার গুরুত্বপূর্ণ পর্বে রয়েছে। বাংলাদেশের এই সন্ধিক্ষণে শান্তি, সংলাপ ও ঐকমত্যে সহায়তার জন্য জাতিসংঘ তৈরি আছে।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন গুতেরেস। চার দিনের বাংলাদেশ সফরের তৃতীয় দিনে তিনি আজ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। আজ রবিবার সকালে  ইউএনএসজি গুতেরেসের ঢাকা থ্যাগ করার কথা।

বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় জাতিসংঘ শান্তি, জাতীয় সংলাপ, আস্থা ও পুনর্মিলনের ক্ষেত্রে সহায়তা করতে প্রস্তুত বলে জানান জাতিসংঘের মহাসচিব। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের পাশে থেকে জাতিসংঘ সকলের জন্য টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যৎ গড়তে সহায়তা করবে।

আরও পড়ুন