বিশ্বের ৪৩টি দেশের নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা ভাবছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এ–সংক্রান্ত একটি খসড়া তালিকা তৈরি করেছেন। চূড়ান্ত প্রস্তাবে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে।
একাধিক সূত্র ও অভ্যন্তরীণ এক নথির বরাত দিয়ে এ তথ্য দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তাদের দেখা নথিটিতে তিনটি পৃথক গ্রুপে মোট ৪৩টি দেশের নাম আছে।
তিনটি পৃথক গ্রুপে মোট ৪১টি দেশের নাম আছে।
খসড়া প্রস্তাবে ১১টি দেশকে ‘লাল’ তালিকায় রাখা হয়েছে।এই দেশগুলো হলো আফগানিস্তান, ভুটান, কিউবা, ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা ও ইয়েমেন।
লাল তালিকার মানে হলো এসব দেশে সব ধরনের ভ্রমণ নিষিদ্ধ। অর্থাৎ এসব দেশের নাগরিকেরা কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারবেন না।
১০টি দেশকে ‘কমলা’ তালিকায় রাখা হয়েছে। এই ১০টি দেশ হলো বেলারুশ, ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিয়েরা লিওন, দক্ষিণ সুদান ও তুর্কমেনিস্তান।
কমলা তালিকার মানে হলো, এসব দেশের নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি থাকবে, তবে ভিসা একেবারে বন্ধ থাকবে না। এ ক্ষেত্রে ধনী ব্যবসায়ীদের ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হতে পারে। কিন্তু অভিবাসী বা পর্যটন ভিসায় কাউকে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে না।
২২টি দেশকে ‘হলুদ’ তালিকায় রাখা হয়েছে। এ তালিকায় আছে অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, বেনিন, বুরকিনা ফাসো, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, কেপ ভার্দে, চাদ, রিপাবলিক অব কঙ্গো, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, ডমিনিকা, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, গাম্বিয়া, লাইবেরিয়া, মালাউই, মালি, মৌরিতানিয়া, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সাও তোমে অ্যান্ড প্রিন্সিপে, ভানুয়াতু ও জিম্বাবুয়ে।

‘হলুদ’ তালিকায় থাকা দেশগুলোকে তাদের ত্রুটি সংশোধনের জন্য ৬০ দিন সময় দেওয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে তারা যদি ত্রুটি কাটিয়ে উঠতে না পারে, তবে তাদের লাল বা কমলা তালিকার অন্তর্ভুক্ত করার হুমকি দেওয়া হবে।
প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প প্রথমে দুটি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে চাইলে আদালত তাতে বাধা দেয়। তবে পরে সুপ্রিম কোর্ট একটি পুনর্লিখিত নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য ট্রাম্প প্রশাসনকে অনুমতি দিয়েছিল। আটটি দেশের ওপর ওই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতেই, চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি এক নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি শনাক্তে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ইচ্ছুক সব বিদেশির ক্ষেত্রে নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই জোরদারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ওই নির্দেশে ‘নিরাপত্তা যাচাই-বাছাই সংক্রান্ত পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া যাবে না’ এমন দেশগুলো শনাক্তে করে সেগুলোর মধ্যে কোনগুলোর ওপর পূর্ণাঙ্গ, কোনগুলোর ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যায় তার তালিকা ২১ মার্চের মধ্যে জমা দিতে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যকে বলাও হয়েছিল।
এ দফায় ক্ষমতায় আসার পর রিপাবলিকান ট্রাম্প অভিবাসনবিরোধী একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছেন।
এসব বিষয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিক থেকে সাড়া পায়নি রয়টার্স।