প্রথম প্রহরে একুশের বেদীতে শ্রদ্ধার অর্ঘ্য

প্রথম প্রহরে একুশের বেদীতে ফুল দেওয়ার অপেক্ষায় সাধারণ মানুষজন।
প্রথম প্রহরে একুশের বেদীতে ফুল দেওয়ার অপেক্ষায় সাধারণ মানুষজন।

একুশের প্রথম প্রহরে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। রাষ্ট্রপতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে চলে যাওয়ার পর সেখানে উপস্থিত হন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস।  

রাত ১২টার পর বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি। এরপর রাত ১২টা ১০ মিনিটে আসেন ইউনূস। তিনি যখন শহীদ মিনারের বেদীতে শ্রদ্ধার অর্ঘ্য অর্পণ করেন তখন ঘড়ির কাটাতে ১২টা বেজে ১২ মিনিট।

এর আগে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান।

অতীতে রাষ্ট্রপতি শহীদ মিনারে পৌঁছানোর আগেই প্রধানমন্ত্রী সেখানে উপস্থিত থাকতেন। ২০২৪ সালে ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাত ১২টা বাজার ৭ মিনিট আগে তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এসেছিলেন। এর তিন মিনিট পর রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছান।

তবে এবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শহীদ মিনার প্রাঙ্গন ত্যাগ করার পর সেখানে আসেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা চলে যাওয়ার পর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদসহ আপিল বিভাগ ও হাই কোর্টের বিচারপতিরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

তারা ফুল দেওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা একসঙ্গে শহীদদের বেদীতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।

এরপর ঢাকায় দায়িত্বরত রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক, হাই-কমিশনাররা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন ও কমিশনাররা ভাষা শহীদদের বেদীতে এরপর ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।

প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে এরপর তিন বাহিনীর প্রধানদের মধ্যে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান ও বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন ফুল দেন।

এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ফুল দিতে আসেন শহীদদের বেদীতে।

ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে এরপর একে একে শ্রদ্ধা জানান পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলমসহ বিভিন্ন আইনশঙ্খলা বাহিনীর প্রধানরা।

সহকর্মীদের নিয়ে এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা শ্রদ্ধা জানান।

তাদের পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে রাত ১২টা ৪০ মিনিট থেকে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ অন্যরা শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসেন।

তবে প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুপস্থিত ছিল বিএনপি।

জুলাই-অগাস্টে ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে একুশে ফেব্রুয়ারিতে এবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর আয়োজনে রয়েছে সেই অভ্যুত্থানের ছাপ। প্রতিবছর শহীদ মিনার এলাকার দেয়ালে বিভিন্ন স্লোগান, কবিতা ও গানের লাইন লেখা হলেও এবার ভিন্ন প্রেক্ষাপটে সেখানে জায়গা করে নিয়েছে গ্রাফিতি।

কোনো কোনো দেয়ালের উপরে ব্যানার বসানো হয়েছে, যেগুলোতে বিভিন্ন গান ও কবিতার লাইন কিংবা নানা স্লোগানে একুশকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

আরও পড়ুন