ফিলিস্তিনিদের গাজা ভূখণ্ড থেকে স্থানান্তরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবের সমালোচনা করেছেন সৌদি শুরা কাউন্সিলের এক সদস্য। তিনি ব্যঙ্গ করে বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ইসরায়েলিদের আলাস্কা ও গ্রিনল্যান্ডে স্থানান্তর করাই হবে আরও ভালো সমাধান।
ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন এবং দাবি করেছেন, তিনি গাজাকে পুনর্গঠনে একটি অসাধারণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন।
তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের এমন প্রস্তাব বিশ্বজুড়ে কঠোর নিন্দার মুখে পড়ে। ফিলিস্তিন ও আরব দেশগুলোর পাশাপাশি কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশ এই প্রস্তাবের কঠোর নিন্দা জানায়।
সৌদি আরবও এই প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়ে বলে, পৃথক ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করা না হলে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে হাঁটবে না তারা।
এরপর গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি সার্বভৌমত্বের ধারণা পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেন। উল্টো বিদ্রুপ করে তিনি বলেন, “সৌদিরা সৌদি আরবেই একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন করতে পারে; তাদের সেখানে প্রচুর জমি রয়েছে।”
নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গত শুক্রবার সৌদি সংবাদপত্র ওকাজ-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে শুরা কাউন্সিলের সদস্য ইউসুফ বিন ত্রাদ আল-সাদউন বলেন, “যদি ট্রাম্প সত্যিই শান্তির নায়ক হতে চান এবং মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি আনতে চান, তবে তিনি যেন তার প্রিয় ইসরায়েলিদের প্রথমে আলাস্কায় এবং পরে গ্রিনল্যান্ড দখল করে সেখানে স্থানান্তর করেন।”
এ সময় ফিলিস্তিনিদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান সৌদি শুরা কাউন্সিলের এই সদস্য। একইসঙ্গে সতর্ক করে তিনি বলেন, “সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি এখনো আসেনি।”
সাদউন সৌদি আরবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনে যে প্রস্তাব নেতানিয়াহু দিয়েছে সেটাও প্রত্যাখ্যান করেন।
তিনি বলেন, “জায়নবাদী ও তাদের মিত্ররা অবশ্যই বুঝতে পারবে যে তারা সৌদি নেতৃত্বকে মিডিয়ার ফাঁদ ও মিথ্যা রাজনৈতিক চাপে ফেলে তারা সফল হতে পারবে না।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদ্ধতির কঠোর সমালোচনা করে সৌদি শুরা কাউন্সিলের এই সদস্য আরও বলেন, “যারা সংগৃহীত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে উপেক্ষা করে এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করতে অস্বীকার করে, তারা সবসময়ই ভুল সিদ্ধান্ত নেয়।”
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নীতিরও সমালোচনা করে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক পররাষ্ট্রনীতি এখন অবৈধভাবে সার্বভৌম ভূখণ্ড দখল এবং এর জনগণের জাতিগত নির্মূলের দিকে ধাবিত হচ্ছে– যা ইসরায়েলের পদ্ধতি এবং এটি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।”
সৌদি শুরা কাউন্সিল দেশটির বাদশাহর নিয়োগপ্রাপ্ত সদস্যদের দ্বারা পরিচালিত হয়। আইন প্রণয়নের ক্ষমতা না থাকলেও, এই কাউন্সিল নীতি ও আইন সংক্রান্ত পরামর্শ দিয়ে থাকে।