চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ছনখোলা এলাকায় ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে দুইজন নিহত হয়েছে। এ সময় আক্রান্তরা পাল্টা গুলি চালালে স্থানীয় পাঁচজন এলাকাবাসী গুলিবিদ্ধ হয়। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার রাত ১২টার দিকে উপজেলার কাঞ্চনা ছনখোলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়, নেজাম উদ্দিন ও আবু সালেহ দীর্ঘদিন এলাকার বাইরে ছিল। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এলাকায় ফিরে আসে। সাংগঠনিক পদে না থাকলেও দু’জনেই জামায়াতের নেতা হিসাবে পরিচিত ছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী বলেন, নেজাম ও সালেহ এলাকায় ফেরার পর পুলিশ-প্রশাসন দু’জনকে সমীহ করে চলতো। কারণ দু’জনই চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামির সাবেক আমির শাহজাহান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ।
এই সুযোগে তারা এলাকায় চাঁদাজাজি ও বিভিন্ন জমি-বাড়ি দখল করতে থাকে। এওচিয়া গ্রামে দখলের জন্য সোমবার সামবার রাত ১০টার দিকে বিশাল বাহিনী নিয়ে সেখানে এসে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করে নেজাম ও সালেহ ।

চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামির সাবেক আমির শাহজাহান চৌধুরীর সঙ্গে সোমবার রাতে গণপিটুনিতে নিহত নেজাম।
বিপদ বুঝতে পেরে স্থানীয় মসজিদের মাইকে গ্রামে ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। বিপদের কথা শুনে দলে দলে গ্রামবাসী জড়ো হতে থাকেন। কিন্তু গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে নেজাম বাহিনী গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। অন্যদিকে, গ্রামবাসীরা চারপাশ থেকে সেই বাহিনীকে ঘিরে ফেলে। এক সময় তাদের গোলা-বারুদ শেষ হয়ে গেলে গ্রামবাসী গণপিটুনি শুরু করে। তাতে ঘটনাস্থলে দু’জন নিহত হয়।
ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল এবং ৮ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, গণপিটুনিতে নিহত দুজনের মরদেহ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গুলিবিদ্ধ অন্তত পাঁচজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন, “নিরাপত্তা বাহিনী আমাকে জানায় যে, ডাকাতরা যখন ডাকাতির চেষ্টা করে, তখন গ্রামবাসী মসজিদের লাউড স্পিকার ব্যবহার করে তাদের উপস্থিতি ঘোষণা করে। এ সময় ডাকাতরা পালানোর চেষ্টা করলে দুজনকে ধরে ফেলে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।”