যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইউক্রেন, ‘বল রাশিয়ার কোর্টে’ ঠেলল যুক্তরাষ্ট্র

শান্তি আলোচনা এগিয়ে নিতে সৌদি আরবের জেদ্দায় মঙ্গলবার বৈঠকে বসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা।
শান্তি আলোচনা এগিয়ে নিতে সৌদি আরবের জেদ্দায় মঙ্গলবার বৈঠকে বসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা।

সৌদি আরবের জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকের পর ইউক্রেন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে তারা রাজি। এমন প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, এখন তিনি এই প্রস্তাব রাশিয়ার কাছে উপস্থাপন করবেন এবং ‘এখন বল তাদের (রাশিয়ার) কোর্টে’।

বিবিসি জানিয়েছে, মঙ্গলবার জেদ্দায় অনুষ্ঠিত বৈঠকটি ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কি ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে নজিরবিহীন বাগযুদ্ধের পর দুই দেশের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক।

বৈঠকের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, এই ‘ইতিবাচক’ প্রস্তাবে রাশিয়াকে রাজি করানোর বিষয়টি এখন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করছে।

এক যৌথ বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, তারা ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান এবং নিরাপত্তা সহায়তা অবিলম্বে পুনরায় চালু করবে, যা হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প-জেলেনস্কি বাগযুদ্ধের পর স্থগিত করেছিল ওয়াশিংটন।

বিবৃতিতে বলা হয়, “উভয় প্রতিনিধি দল ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তার জন্য একটি স্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে অবিলম্বে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে।”

মঙ্গলবার রাতে জেদ্দায় এক সংবাদ সম্মেলনে রুবিও আশা প্রকাশ করেন, রাশিয়া এই প্রস্তাব গ্রহণ করবে। তিনি বলেন, ইউক্রেন ‘গুলি বন্ধ করে কথা বলতে প্রস্তুত’ এবং রাশিয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে ‘দুর্ভাগ্যবশত আমরা জানব এখানে শান্তির পথে বাধা কী’।

তিনি আরও বলেন, “আজ আমরা যুদ্ধবিরতি ও অবিলম্বে আলোচনা শুরু বিষয়ে একটি প্রস্তাব দিয়েছি, যা ইউক্রেনীয়রা গ্রহণ করেছে। আমরা এখন এই প্রস্তাব রাশিয়ার কাছে নিয়ে যাব এবং আমরা আশা করি তারা শান্তির জন্য হ্যাঁ বলবে। এখন বল তাদের কোর্টে।”

৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি জেলেনস্কির আকাশ ও সমুদ্রে আংশিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের চেয়েও বেশি। এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, “রাশিয়াকে যুদ্ধ বন্ধ করার বা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা দেখাতে হবে।”

ক্রেমলিন এখনও প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তারা মঙ্গলবার জানায়, ওয়াশিংটন থেকে বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে জানার পর তারা একটি বিবৃতি প্রকাশ করবে।

তবে প্রভাবশালী রুশ আইনপ্রণেতা কোস্তান্তিন কোসাচেভ বলেন, যে কোনো সম্ভাব্য চুক্তি “আমাদের শর্তে হবে, আমেরিকানদের নয়”। ফেডারেশন কাউন্সিলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান কোসাচেভ বলেন, “প্রকৃত চুক্তি এখনও লেখা হচ্ছে… সীমান্তে। ইউক্রেনে রুশ সেনারা অগ্রসর হচ্ছে।”

রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় সামরিক অভিযান শুরু করে। বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে।

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন, যিনি প্রস্তাবে রাজি হবেন বলেই তিনি আশা করেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে চুক্তিটি সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এ ছাড়া জেলেনস্কিকে ওয়াশিংটনে ফিরিয়ে আনতে রাজি আছেন বলেও জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads