বুধবারের পত্রিকা : ‘শেখ হাসিনাকে দিয়েই শুরু গণহত্যার বিচার’

newspaper

দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির খবর দিয়ে বুধবার প্রধান প্রতিবেদন করেছে বেশ কয়েকটি সংবাদপত্র। এর পাশাপাশি দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার, বাংলাদেশে বায়ুদূষণ পরিস্থিতি, রাজস্ব আহরণে সরকারের উদ্যোগ, মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানিতে অনিয়ম-দুর্নীতি ও রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারে সরকারের উদ্যোগের অগ্রগতি সংক্রান্ত খবরও গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে সংবাদপত্রগুলো। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বুধবার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে।

সমকাল

মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘শেখ হাসিনাকে দিয়েই শুরু গণহত্যার বিচার’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আগামী মাসেই এ-সংক্রান্ত পৃথক দুটি প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় দাখিল করার কথা রয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের আওতায় গঠিত তদন্তকারী সংস্থা ও প্রসিকিউশনের সমন্বয়ে বৈঠকে গত সপ্তাহে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় চিফ প্রসিকিউটর ও তদন্তকারী সংস্থার প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় চলতি মাসের মধ্যে তদন্ত সংস্থাকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন তৈরিতে এক-তৃতীয়াংশ কাজ বাকি।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ বছরে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে থেকে নানা ধরনের অপরাধের প্রধান হিসেবে বিচারের প্রথম ধাপে শেখ হাসিনাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার সরাসরি নির্দেশদাতা হিসেবেও থাকছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার পৃথক দুটি প্রতিবেদন শিগগিরই প্রসিকিউশন বিভাগে দাখিল করবে তদন্তকারী সংস্থা।

কালের কণ্ঠ

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘পুলিশে শৈথিল্য, বাড়ছে বিশৃঙ্খলা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে দেশে ক্রমে বাড়ছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেও এর রাশ টানা যাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এই অবনতির নেপথ্যে ইন্ধন জোগাচ্ছে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসররা। সূত্র বলছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীতে কর্মরতদের বেশির ভাগই আওয়ামী শাসনামলে নিয়োগপ্রাপ্ত। ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থানে দেশে পটপরিবর্তন হলেও তারা ঘাপটি মেরে থেকে নেপথ্যে ইন্ধন জোগাচ্ছে কিভাবে সরকারকে বেকায়দায় ফেলা যায়। সম্প্রতি দেশে অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় এ বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। তবে আশার কথা হলো, পুলিশে সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকার যে ‘পুলিশ সংস্কার কমিশন’ গঠন করেছে এরই মধ্যে তারা প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। কমিশনের প্রস্তাব কার্যকর হলে পুলিশ বাহিনী অনেকটাই সংশোধন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে কর্তৃত্ববাদী শেখ হাসিনা সরকারের দীর্ঘ শাসনের অবসান ঘটে। ঐতিহাসিক এ গণ-অভ্যুত্থানের পর অত্যন্ত ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করে। এরপর সাত মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো থিতু হয়নি চলমান অস্থিরতা। এ অস্থিতিশীলতার নেপথ্যে আওয়ামী দোসর হিসেবে চিহ্নিত কর্মকর্তাদের ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিদেশে পালিয়ে যাওয়া পতিত সরকারের সাবেক কর্মকর্তারাও নানাভাবে উসকানি দিয়ে যাচ্ছেন, যা কার্যকর করার চেষ্টা করছে দেশে অবস্থানরত দোসররা।

প্রথম আলো

‘বৈশ্বিক বায়ুমান প্রতিবেদন ২০২৪’-এ বাংলাদেশের প্রথম দিকে থাকার তথ্য তুলে ধরে করা সংবাদ দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘বায়ুদূষণে বিশ্বে ২য় বাংলাদেশ, নগর হিসেবে তৃতীয় ঢাকা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণে ২০২৪ সালে দেশ হিসেবে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। আর নগর হিসেবে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ দূষিত নগর ছিল ঢাকা। ২০২৩ সালে বায়ুদূষণে বাংলাদেশ শীর্ষে ছিল। নগর হিসেবে ঢাকার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়।

গত বছর বায়ুদূষণে শীর্ষ দেশ ছিল আফ্রিকার চাদ। আর নগর হিসেবে শীর্ষে ছিল ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। গতকাল মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের ‘বৈশ্বিক বায়ুমান প্রতিবেদন ২০২৪’-এ এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

সার্বিকভাবে বায়ুদূষণে আগের বছরের তুলনায় গত বছর বাংলাদেশের অবস্থানের সামান্য পরিবর্তন হয়েছে। শীর্ষ অবস্থান থেকে বাংলাদেশের স্থান হয়েছে দ্বিতীয়। আর নগরীগুলোর মধ্যে ঢাকা দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় হয়েছে। তবে এই পরিবর্তনকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন না পরিবেশবাদী ও গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, দূষণ আরও বিস্তৃত হচ্ছে, এবারের প্রতিবেদন সেই বাস্তবতাকে তুলে ধরেছে। কারণ, আগে দেখা গেছে যে রাজধানীর তুলনায় দেশের সার্বিক গড় বায়ুমান কিছুটা ভালো থাকত। কিন্তু এবারের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশ এবং দেশের সবচেয়ে দূষিত নগরী ঢাকার বায়ুর মান প্রায় একই।

ইত্তেফাক

দেশে প্রকাশ্যে হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাওয়াসহ সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘খুন ডাকাতি ছিনতাই ও ধর্ষণে বাড়ছে উদ্বেগ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি দেশে প্রকাশ্যে হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে। এতে দেশ জুড়ে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা। ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় ঢাকাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শহরে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষুব্ধ কেউ কেউ অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিও তুলেছেন। যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে সারা দেশে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে একটি বিশেষ অভিযানের মধ্যে এই ঘটনাগুলো ঘটছে।

গত দুই মাসে রাজধানী ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই ও আঞ্চলিক মহাসড়কে বাস ডাকাতির মতো বেশ কয়েকটি ঘটনা আলোচনায় এসেছে। সমসাময়িক বেশকিছু হত্যাকাণ্ড নিয়ে স্থানীয় মানুষ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনা, গণপিটুনিতে হত্যা, বাড়ি থেকে ধরে। নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করারও ঘটনা রয়েছে। পুরো পরিস্থিতিতে ছড়িয়ে পড়েছে এক ধরনের অতঙ্ক।

যুগান্তর

শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিপুল সম্পদের খোঁজ মিলেছে– সরকারের প্রকাশ করা এমন তথ্যের ভিত্তিতে করা খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘হাসিনার আলাদিনের চেরাগশিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে নিজেকে প্রাণবন্ত করে সাবলীলভাবে সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের সামনে বিশ্বাসযোগ্যভাবে কিছু কথা বলতেন। তিনি প্রায়ই কবিতার ছন্দে বলতেন-‘নিঃস্ব আমি রিক্ত আমি দেবার কিছু নেই, আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই।’ পরিবারের সদস্যদের পাশে রেখে প্রায়ই বলতেন-‘সন্তানদের জন্য আমি কোনো সম্পদ করিনি, তাদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করেছি।’ দলের এবং দলের বাইরের মানুষদেরও তিনি সবক দিতেন দুর্নীতি না করার। সত্যিকার অর্থে শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে যখন দেশে ফিরে আসেন, তখন এক রকম শূন্যহাতেই ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর সামনে আসতে থাকে হতবাক করার মতো তথ্য।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার দোসরদের বিপুল পরিমাণ দুর্নীতি ও লুটপাটের তথ্য সামনে আসতে থাকে। একে একে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার সদস্য এবং দলের সব পর্যায়ের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের দুর্নীতির সম্পদও প্রকাশ্যে আসে। অনেকে গ্রেফতার হন। আত্মগোপনে ও দেশের বাইরে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন অনেকে। তবে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের এবং আশপাশের অতি ঘনিষ্ঠজনদের সম্পদ সবে চাউর হতে শুরু করেছে। প্রথমবারের মতো সোমবার সরকারের পক্ষ থেকে হাসিনা পরিবারের অবিশ্বাস্য সম্পদের ফিরিস্তি শুনে সবাই বিস্মিত হন।

বণিক বার্তা

রাজস্ব বাড়াতে সরকারের সাম্প্রতিক উদ্যোগ কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে বানানো বিশ্লেষণধর্মী খবরকে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা।  ‘স্বতন্ত্র বিভাগ গঠন করা হলেই কি রাজস্ব আহরণ বাড়বে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর ব্যবস্থার দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বাড়াতে বিশ্বের অনেক দেশই কর নীতি ও কর সংগ্রহ কার্যক্রমকে আলাদা করার পথে হেঁটেছে। বাংলাদেশেও এ উদ্যোগ শুরু হয়েছিল ২০০৭-০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে। যদিও তা পরে আর আলোর মুখ দেখেনি। দায়িত্ব গ্রহণের পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও রাজস্ব কার্যক্রম সংস্কারের আওতায় কর নীতি ও কর সংগ্রহ কার্যক্রমকে আলাদা করার উদ্যোগ নিয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের মতো বহুজাতিক দাতা সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকেও এটি বাস্তবায়নের চাপ রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ গঠনের প্রস্তাব সংবলিত একটি অধ্যাদেশের খসড়া প্রণয়ন করেছে সরকার।

তবে এ উদ্যোগের কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে প্রশাসনিক সংস্কারের নামে অতীতে বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থা গঠন করা হলেও সেক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আসেনি। ফলে কর ব্যবস্থায় বিদ্যমান দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, ডিজিটালাইজেশনের অভাবের মতো বিষয়গুলোর সমাধান না করে শুধু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কার্যক্রমকে দুটি আলাদা বিভাগের ওপর ন্যস্ত করা হলেই রাজস্ব আহরণ বাড়বে কিনা, সে বিষয়ে সন্দেহের বড় ধরনের অবকাশ রয়েছে।

নয়া দিগন্ত

মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাত করা হয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়াদিগন্ত। ‘মালয়েশিয়ায় লোক পাঠিয়ে ১১২৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত অর্থের অতিরিক্ত এক হাজার ১২৮ কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আদায় ও বিদেশে পাচারের অভিযোগে সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও তার পরিবার, সাবেক সংসদসদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এবং সাবেক সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদের প্রতিষ্ঠানসহ ১২টি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় মোট ৩৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গতকাল দুদকের মহাপরিচালক মো: আক্তার হোসেন মামলা দায়েরের বিষয় জানিয়ে বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ও অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাবেক মন্ত্রী, এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর হিসেবে, বায়রার বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনকালে সিন্ডিকেট করে বিএমইটি ও বায়রার রেজিস্ট্রেশনের শর্ত ভঙ্গ করে সরকার নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার চেয়ে ৫ গুণ অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করেন।

আজকের পত্রিকা

মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাত করা হয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকাও। ‘শ্রমিক পাঠিয়ে ১১২৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সরকার-নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছে সিন্ডিকেট। এই অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ১২টি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক, পদস্থ কর্মকর্তাসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সাবেক তিন এমপি নিজাম হাজারী, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, বেনজির আহমেদ এবং ব্যবসায়ী নুর আলী আসামি হচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুদক এসব মামলার অনুমোদন দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।

দুদক মহাপরিচালক বলেন, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সরকার-নির্ধারিত ফি ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা হলেও রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো অতিরিক্ত ৫ গুণ অর্থ আদায় করেছে। ৬৭ হাজার ৩৮০ প্রবাসীর কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার অভিযোগে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এতে ১২টি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মামলায় আসামি করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন

সংস্কারের জন্য ঐকমত্য সৃষ্টির জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ১২০ পয়েন্টে সুনির্দিষ্ট মতামত চেয়েছে সরকার– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। ‘দলগুলোর সামনে ১২০ পয়েন্ট’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংস্কারের জন্য ঐকমত্য সৃষ্টির জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ১২০ পয়েন্টে সুনির্দিষ্ট মতামত চেয়েছে সরকার। ইতিমধ্যেই ৩৪টি রাজনৈতিক দলের কাছে এ বিষয়গুলোতে অবস্থান জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। মূলত সংবিধান, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারের প্রস্তাবগুলোর ওপর ভিত্তি করে সুনির্দিষ্ট পয়েন্টগুলো তৈরি করেছে ঐক্য কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো ঐক্য কমিশনের চিঠি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের কাছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ স্বাক্ষরিত চিঠির সঙ্গে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ও সুপারিশের ফাইল এবং মতামতের জন্য আলাদা স্প্রেডশিট পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে প্রথম পর্যায়ে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশন- সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। এই প্রতিবেদনসমূহের সুপারিশের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মতামত ১৩ মার্চের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে। দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কার কার্যক্রম শুরু করবে অন্তর্বর্তী সরকার। কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিছু রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যেই ঐক্য কমিশনের কাছে বাড়তি সময় চেয়েছে। এর ফলে ১৩ মার্চের নির্ধারিত সময়ে সব রাজনৈতিক দলের মতামত ঐকমত্য কমিশনে জমা পড়ছে না।

দেশ রূপান্তর

সরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা বিমান বাংলাদেশে এয়ারলাইন্সে নানা অনিয়ম ও ব্যবস্থাপনায় নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘বিমানের আকাশে নৈরাজ্য’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিমান একটি আদর্শের প্রতীকে পরিণত হয়েছিল। ওই সময় বিমানের প্রতিটি কাজের জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা ছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের সময় বিমানের বোর্ড পুনর্গঠিত হলেও কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাবের অভিযোগ উঠেছে। কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলেও তাকে সেই দোষমুক্ত করার জন্য পছন্দের লোক দিয়ে গঠন করা হচ্ছে দ্বিতীয় তদন্ত কমিটি। গত ১৫ বছরে যাদের দোর্দ- প্রতাপে বিমানের ‘ভেঙে পড়ার’ উপক্রম হয়েছিল, তারাই নানা জায়গায় পুনর্বাসিত হচ্ছেন। গাড়িচালক থেকে শুরু করে বিমানচালকও অনিয়মে জড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ। বলা যায়, নৈরাজ্যের আকাশে ঘুরপাক খাচ্ছে ‘বিমান’।

বিমানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিমানের নিজস্ব কর্মকর্তা হওয়ায় তিনি বিমানের প্রায় সবাইকেই চেনেন। তিনি যেসব কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে পারবেন, প্রশাসন ক্যাডার থেকে এমডি এনে সে কাজ করা সম্ভব নয়। কিন্তু তার কর্মকাণ্ডে বিমানকর্মীরা নাখোশ। তিনি তেলা মাথায় তেল ঢালছেন। বিগত বছরগুলোয় যারা সুবিধা ভোগ করেছেন, তাদেরই সুবিধাজনক জায়গায় চাকরি করার সুযোগ দিচ্ছেন। সার্টিফিকেট জালিয়াতি, তেল চুরির মতো ছোটখাটো ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় বিমানে অসন্তোষের আলামত পাওয়া যাচ্ছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads