তৃতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার কোনো ইচ্ছা তার নেই বলে জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এনবিসির মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে ক্রিস্টেন ওয়েলকারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করা কারও তৃতীয় মেয়াদে একই দায়িত্বে ফেরার সুযোগ নেই— এমনটি বিশেষজ্ঞরা মনে করলেও এর আগে ট্রাম্প একাধিকবার তৃতীয় বা চতুর্থ মেয়াদের প্রেসিডেন্ট হওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমি আট বছরের প্রেসিডেন্ট হব, দুই মেয়াদের প্রেসিডেন্ট হব। আমি সবসময় ভেবেছি এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।” ফ্লোরিডার বাসভবনে শুক্রবার রেকর্ড করা এই সাক্ষাৎকারটি রোববার প্রচার করা হয়।
ট্রাম্প এর আগে বলেছিলেন, তৃতীয় বা এমনকি চতুর্থ মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার তার ইচ্ছা কোনো ‘কৌতুক নয়’। পরে অবশ্য তিনি বলেন, তার ওই মন্তব্যগুলো ‘ভুয়া সংবাদ মাধ্যমকে’ ট্রল করার জন্য ছিল।
তার কোম্পানি, দ্য ট্রাম্প অর্গানাইজেশন ‘ট্রাম্প ২০২৮’ লেখা টুপি বিক্রি করছে, যা জল্পনা বাড়িয়েছিল যে তিনি ২০২৯ সালের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও ক্ষমতায় থাকতে চাইতে পারেন।
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ক্ষমতায় থাকার বিষয়ে বিবেচনা করতে অনেকেই তাকে অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, “এত মানুষ চায় আমি এটা করি।” দ্বিতীয় মেয়াদে ১০০ দিন পূর্তি উদযাপনের কয়েকদিন পর তিনি এই মন্তব্য করেন।
ট্রাম্প আরও বলেন, “আমার জানামতে, এটা করার অনুমতি নেই। আমি জানি না এটা সাংবিধানিক কি না যে তারা আপনাকে এটা করতে দিচ্ছে না বা অন্য কিছু।”
‘ট্রাম্প ২০২৮’ লেখা টুপি বিক্রি করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অনেকেই ২০২৮ লেখা টুপি বিক্রি করছে। তবে আমি এমন কিছু করতে যাচ্ছি না।”
এই পর্যায়ে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও-সহ রিপাবলিকানদের নাম উল্লেখ করেন, যারা তার স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২২তম সংশোধনীতে বলা হয়েছে, “কোনো ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হবেন না।”
সংবিধান পরিবর্তন করতে সিনেট এবং হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস উভয়ের দুই-তৃতীয়াংশ অনুমোদন এবং দেশের তিন-চতুর্থাংশ রাজ্য সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন।
তবে ট্রাম্পের কিছু সমর্থক মনে করেন, সংবিধানে একটি ফাঁক রয়েছে, যা এখনও আদালতে পরীক্ষিত হয়নি। এই তত্ত্বগুলো নিয়ে কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কিনা জানতে চাইলে ট্রাম্প বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং বলেন, “বড় সমর্থক হিসেবে অনেকেই অনেক কথা বলেছে।”
২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন। পরের নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে হেরে গেলেও সেই পরাজয় আজ পর্যন্ত মেনে নেননি ট্রাম্প।
সর্বশেষ গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সেই বাইডেনকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর গত ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি।