একাত্তরে বৃহত্তর রংপুরে গণহত্যা চালিয়ে ‘১৪ শর বেশি মানুষকে হত্যা, বহু নারীকে ধর্ষণ ও অপহরণ, নির্যাতনের’ অভিযোগ ছিল এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সেসময় তিনি ছিলেন ইসলামী ছাত্র সংঘের জেলা কমিটির সভাপতি ও ‘আলবদর বাহিনীর রংপুর শাখার কমান্ডার’।
এটিএম আজহারুল ইসলামের জন্ম ১৯৫২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার বাতাসন লোহানীপাড়া গ্রামে। বাবার নাম নাজির হোসাইন, মা রামিসা বেগম।
১৯৬৮ সালে রংপুর জিলা স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করে পরের বছর তিনি ভর্তি হন রংপুর কারামাইকেল কলেজে। একত্তরে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, আজহার তখন জামায়াতের সেই সময়ের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের জেলা কমিটির সভাপতি ছিলেন বলে এ মামলার নথিপত্রে উল্লেখ করা হয়।
সেখানে বলা হয়, ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতাযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের আগে আগে আজহার দেশত্যাগ করেন এবং চলে যান সৌদি আরবে।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর আজহার আবার দেশে ফেরেন এবং ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেন।
জিয়াউর রহমানের আমলে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফেরার পর দলের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন আজহার। ১৯৯১ সালে তিনি ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমিরের দায়িত্ব পান এবং ২০০৫ সালে কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হন।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ যুদ্ধাপরাধ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর কিছুদিনের জন্য ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন আজহার। ২০১২ সালের ২২ অগাস্ট তিনিও একই অভিযোগের মামলায় গ্রেপ্তার হন।
ওই বছর ১৫ এপ্রিল এটিএম আজহারের যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। যুদ্ধাপরাধের ছয় ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর আজহারের বিচার শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আপিল বিভাগ খালাস দেওয়ায় সেসব অভিযোগ থেকেও অব্যাহতি পেলেন জামায়াত নেতা আজহার।