বাংলাদেশ নিয়ে ‘ভয়াবহ বিপদের’ সতর্কতা বিশ্ব ব্যাংকের

বিশ্ব ব্যাংক। ছবি: বিজনেস রেকর্ডার
বিশ্ব ব্যাংক। ছবি: বিজনেস রেকর্ডার

পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবে সরাসরি ভুক্তভোগী হতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব ব্যাংক।

এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটির মোট জনসংখ্যার অন্তত তিন ভাগের এক ভাগ ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হতে পারে।

২৪ নভেম্বর (রোববার) এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন এসেছে বিশ্ব ব্যাংকের ওয়বসাইটে।

সেখানে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশে সাম্প্রতিক সময়ে অস্বাভাবিকভাবে বন্যা দেখা দিয়েছে। একই সাথে পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধির প্রভাবেও বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন উপকূলের বাসিন্দারা।

জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বিশ্বের যেসব অঞ্চল মারাত্মক হুমকির মধ্যে আছে দক্ষিণ এশিয়া তাদের মধ্যে অন্যতম। আর দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে বাংলাদেশ।

বিশ্ব ব্যাংকের এই সতর্কবার্তা এমন একটি সময়ে এল যখন সাম্প্রতিক একাধিক ভূমিকম্পের ফলে এখনও আতঙ্কে দেশের মানুষ, বিশেষ করে রাজধানী ঢাকা শহরের বাসিন্দারা।

শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকা। মুহুর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে দেশের নানান প্রান্তে। ভূমিকম্পের সময়কার বিভিন্ন ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিভিন্ন স্থানে মারা যান অন্তত ১০ জন।

এরপর শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আরও তিনবার কেঁপেছে দেশের বিভিন্ন এলাকা। আগের দিন ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদী। আর শনিবার সকালের কম্পনের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর পলাশ; সন্ধ্যায় দুবারের একটি রাজধানীর বাড্ডা, আরেকটি নরসিংদীতেই।

এমন অবস্থায় আরও বড় ও ভয়াবহ ভূমিকম্পের সতর্কতা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বারবার এবং ছোট ছোট ভূমিকম্প বড় ভূমিকম্পের লক্ষণ।

‘ফ্রম রিস্ক টু রেজিলিয়েন্স: হেল্পিং পিপল অ্যান্ড ফার্মস অ্যাডাপ্ট ইন সাউথ এশিয়া’ শিরোনামে ওই প্রতিবেদনে বিশ্ব ব্যাংক বলছে, জলবায়ু পরিবর্তেনের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে আছে বসত-বাড়ি এবং ফসলি জমি।

আগামী ১০ বছরের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ বসত-বাড়ি এবং কৃষি জমি আবহাওয়াজনিত বিপর্যয়ের কারণে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

বাংলাদেশের ২৫০টি উপকূলীয় গ্রামে পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ এলাকায়ই জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ অবকাঠামো নেই। এসব অঞ্চলের ৫৭ ভাগ বসতবাড়িতে কোন রকমের সুরক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই। অন্যদিকে বৈরি আবহাওয়ার মোকাবেলায় যে ধরণের আর্থিক সচ্ছলতা প্রয়োজন তা নেই উপকূলের অন্তত ৫৬ ভাগ মানুষের।

গবেষকরা বলছেন, এই সব এলাকায় যেসব বিপর্যয় ঘটবার সম্ভাবনা আছে সেগুলো শুধুই প্রাকৃতিক নয়, বরং মানবিকও। কারণ অপেক্ষাকৃত দরিদ্র এবং কৃষিনির্ভর জনগোষ্ঠীই এতে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads