লিবিয়ার উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টারত একটি অভিবাসীবাহী নৌকা উল্টে ১৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন, জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ১৮ বাংলাদেশিসহ ৯০ জনকে।
লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে প্রায় ৭৬ কিলোমিটার পশ্চিমে উপকূলীয় শহর সাবরাথার রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, সোমবার রাতে অভিবাসীবাহী নৌকাটি উল্টে যাওয়ার খবর পাওয়ার পরই উদ্ধার অভিযান শুরু হয়।
সংস্থাটি জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। মরদেহগুলো সুরমান বন্দরের কাছাকাছি উপকূল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
রেড ক্রিসেন্ট প্রকাশিত কিছু ছবিতে দেখা গেছে, স্বেচ্ছাসেবীরা মরদেহগুলো উদ্ধারের পর সাদা প্লাস্টিক ব্যাগে রাখছেন এবং অ্যাম্বুলেন্সে তুলছেন। জীবিত উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন রেড ক্রিসেন্টের কর্মীরা।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, লিবিয়ার আল জাওইয়া থেকে যাত্রা করা কাঠের নৌকাটি সমুদ্রে ভাসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উচ্চ ঢেউয়ের কারণে উল্টে যায়। এতে ১৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন।
জীবিতদের মধ্যে ১৮ বাংলাদেশি
রেড ক্রিসেন্টের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জীবিত উদ্ধার হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা ৯০ জন।
অবশ্য আইওএমের তথ্য অনুযায়ী, জীবিত উদ্ধার হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা ৬৪। এই ৬৪ জনের মধ্যে ১৮ জন বাংলাদেশি।
এছাড়া সুদানের নাগরিক রয়েছেন ৩১ জন, তাদের একজন নারী ও এক শিশু। অন্যদের মধ্যে ১২ জন পাকিস্তানি ও তিন জন সোমালিয়ান।
যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক আছেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে তিউনিশিয়ার সীমান্তের কাছে লিবিয়ার জুওয়ারা ও রাস ইজদির শহরের মধ্যবর্তী উপকূলীয় এলাকা থেকে দুই সপ্তাহে অন্তত ৬১ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় পথটি বিশ্বের অন্যতম প্রাণঘাতী অভিবাসন রুট হিসেবে পরিচিত।
আইওএম বলেছে, চলতি বছর সংস্থাটির ‘মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রজেক্ট’ অনুযায়ী এই রুটে এক হাজার ৪৬ অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫২৭ জন মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন লিবিয়ার উপকূলে।
উদ্ধার হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক সহায়তা এবং প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করতে লিবিয়ার স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে বলেও জানিয়েছে আইওএম।
