রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় সাবেক ইসকন নেতা ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন স্থগিত করে দেয়া আদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন চেম্বার আদালত।
আগামী রোববার এ বিষয়ে আবারও শুনানি হবে।
বুধবার সন্ধ্যায় চেম্বার আদালত জামিন স্থগিতে দেয়া আদেশ প্রত্যাহার করে নেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে এদিন সন্ধ্যায় আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ওই জামিন আদেশ স্থগিত করেন। কিছুক্ষণ পরে ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে ফের রোববার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ধার্য করেছেন।
আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হকের আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে বিকেলে চিন্ময় দাসকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড হেলাল আমীন এ আবেদন দায়ের করেছেন।
এর আগে চিন্ময় দাসের জামিন প্রশ্নে রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করেছিল হাইকোর্ট। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে বুধবার বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
গত ২৩ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল শুনানির জন্য ৩০ এপ্রিল তারিখ রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি নিয়ে রুল ‘অ্যাবসলিউট’ ঘোষণা করে সিদ্ধান্ত দেন হাইকোর্ট।
আদালতে চিন্ময় দাসের পক্ষে আইনজীবী জেড আই খান পান্না, প্রবীর হালদার ও অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভুঞা, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরিদ উদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন।
পরে আইনজীবী প্রবীর হালদার প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্ট চিন্ময় দাসকে জামিন দিয়েছেন। জামিন হওয়ায় তার মুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই।
এই মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ গত ২ জানুয়ারি চিন্ময়ের জামিন আবেদন খারিজ করে আদেশ দিয়েছিলেন। এ নিয়ে হাইকোর্টে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়ে গত ১২ জানুয়ারি আবেদনটি করেছিলেন চিন্ময় দাস। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রুল দেন হাইকোর্ট। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ সিদ্ধান্ত দেন আদালত।
মামলায় গ্রেপ্তার চিন্ময় দাসের জামিন নামঞ্জুর হওয়া নিয়ে গত বছরের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ হয়েছিল। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর চিন্ময় দাসকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন জামিন শুনানির দিন ধার্য থাকলেও আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দিলে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। পরে আদালত গত ৩ ডিসেম্বর শুনানির দিন রাখেন। সেদিন চিন্ময়ের কোনো আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় আদালত শুনানির জন্য ২ জানুয়ারি পরবর্তী দিন রাখেন। সেদিন তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ওই মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
মামলায় জামিন চেয়ে চিন্ময় দাসের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ৪ ফেব্রুয়ারি রুল দিয়েছিলেন। আবেদনকারীকে (চিন্ময়) কেন জামিন দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়।
