সরকারে থেকে দল গোছাতে দেব না, ফখরুলের হুঁশিয়ারি

বক্তব্য রাখছেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল।
বক্তব্য রাখছেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল।

রাখঢাক না করে অন্তবর্তী সরকারের কঠোর সমালোচনা করলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যারা এতদিন বলে এসেছেন সরকারের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।  

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, “সরকারের সুযোগ–সুবিধা নিয়ে দল গঠন করলে তা কখনোই মেনে নেওয়া হবে না। এ দেশের মানুষ তা হতে দেবে না।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন নিয়ে আলোচনার মধ্যে বুধবার এক সমাবেশে বক্তব্য রাখছিলেন বিএনপি মহাসচিব।

ছাত্রদলের উদ্যোগে বুধবার দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এই আলোচনা সভা হয়।

সরকারের এক উপদেষ্টাকে ইঙ্গিত করে এ মির্জা ফখরুল বলেন, “তখন তিনি বলেছিলেন আমি না কি এক–এগারোর দিকে নজর দিচ্ছি। আমরা এক–এগারোর ভুক্তভোগী। এক–এগারো যারা তৈরি করেছে তারা টিকতে পারেনি মানুষের কাছে। আবারও হুঁশিয়ার করে বলে দিতে চাই যদি আবার কেউ সেই এক–এগারোর কথা চিন্তা করেন, গণতন্ত্রকে বিসর্জন দিয়ে সেই একদলীয় শাসন ফ্যাসিস্ট সরকারের দিকে যেতে চান, তাহলে কখনোই জনগণ তা মেনে নেবে না।”

নতুন যেকোনো রাজনৈতিক দলকে বিএনপি স্বাগত জানাবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “ছাত্রসংগঠন ইতিমধ্যে করেছেন, আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। যখনই দল তৈরি করবেন, স্বাগত জানাব। তার অর্থ এই নয় যে আপনারা সরকারে বসে সরকারের সব সুযোগ–সুবিধা নিয়ে আপনারা আপনাদের দল গঠন করবেন। সেটা কখনোই মেনে নেওয়া হবে না।”

তিনি বলেন, “অতি দ্রুত একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশে ফিরে যেতে পারে- দেশের মানুষ তা-ই চায়। এখন পর্যন্ত সাত মাসে সেই জায়গায় যেতে পারিনি। আমরা দেখছি, নতুন সরকার অন্তর্বর্তী সরকার আমরা তাদের সমর্থন দিয়েছি, তারা চেষ্টা করছেন অতি দ্রুত কিছু কাজ শেষ করে এই নির্বাচনের দিকে যাওয়ার। কিন্তু এরই মধ্যে কতগুলো সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে মানুষের মধ্যে।”

নির্বাচন অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, “কারণ আছে এই সন্দেহ সৃষ্টি হওয়ার। তার মধ্যে গতকাল স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেছেন, ফ্যাসিস্টদের লোকেরা যদি কেউ মাফ চেয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়, তারা অংশ নিতে পারবে।”

তিনি বলেন, “এটাই প্রমাণিত হয়েছে, তারা এখন তাদের নিজেদের স্বার্থে ফ্যাসিস্টদের জায়গা দিতে চায়। এই কথাটা কালকে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেছেন। হুইচ ইজ ডেঞ্জারাস। তার মানে কি আমরা এটা মনে করব, তারা সরকারে থেকে তাদের দল গোছানোর জন্য বিভিন্ন রকম কৌশল নিচ্ছেন? সেই কৌশল নিলে আমরা তা হতে দেব না। এ দেশের মানুষ তা হতে দেবে না।”

উপদেষ্টাদের বিভিন্ন বক্তব্য নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বলেও মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আর এটি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ক্রমবর্ধমান সন্দেহের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।”

অবিলম্বে এ বিষয়গুলোতে ব্যবস্থা নিতে অন্তবর্তী সরকার ও সরকার প্রধানের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

“তা না হলে আপনাদের প্রতি জনগণের যে আস্থা আছে, সেই আস্থাও থাকবে না।”

আরও পড়ুন