ফিনল্যান্ডের ডায়েরি: ‘জনমানব ছাড়া’ সব আছে যেখানে

শীত ঋতুতে জমে থাকা তুষার পরিষ্কার করার বাড়তি ঝক্কি পোহাতে হয় কমবেশি সবারই! ছবি: দ্য সান ২৪
শীত ঋতুতে জমে থাকা তুষার পরিষ্কার করার বাড়তি ঝক্কি পোহাতে হয় কমবেশি সবারই! ছবি: দ্য সান ২৪

জীবনে ছন্দ খুঁজতে খুঁজতে সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছি আমি। এই তিন ডিগ্রি তাপমাত্রায় শরতের সন্ধ্যায় বসে এখন কেবলই ভাবি ‘আহা আমার সেই টং দোকানের চায়ের আড্ডার দিনগুলো মন্দ ছিল না’। চায়ের কাপ হাতে সিগারেটের তৃষ্ণাটা বড্ড জ্বালাতন করছে ইদানিং!

উত্তর ফিনল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শহর অউলু। অবশ্য জনসংখ্যাটা বেশ ছোট! দুই লাখ। ছিমছাম গোছানো এই শহরটাকে আমার একটা সময় খুব নিঃসঙ্গ মনে হতো। গাড়ির হর্ন নেই, কোলাহল নেই, রাস্তায় জট নেই। কেন জানি শুধু নেই আর নেই মনে হতো শুরুতে।

ইদানিং আর সেই ‘নেই’ এর অনুভূতিটা নেই। সারি সারি গাছ, রাস্তার পাশে দীর্ঘ লেইক, সাইকেলের জন্য বিকল্প পথ। কতকি আছে আছে এখানে। এখানে এসে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে সবুজায়ন। অবশ্য এখন শরৎ, পাতা ঝরছে। বার্চ গাছের পাতা ঝরে সে এক নান্দনিক রূপ ধারণ করেছে বিস্তীর্ণ এলাকা।

পুরো ফিলল্যান্ড জুড়েই এই বার্চ গাছের আধিপত্য। দেখতে প্রায় একইরকম হলেও প্রজাতিতে বেশ ভিন্নতা আছে এই বৃক্ষে। বেতুলা পেন্ডুলা তারই একটি। রূপালী বার্চের প্রজাতি এটি। আকাশছোঁয়া সারি সারি গাছ নিঃসঙ্গতায় যেন পাশে এসে হাঁটে!

ফিনিশদের কাছে এই বার্চ ট্রি খুব পবিত্র। অনেকেই বলেন, যিশু ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার পর এই বার্চ গাছ তাকে ছায়া দিয়েছিল। বার্চ গাছ নিয়ে বলতে গেলে অনেক কিছুই বলা যায়। আজ আর না বলি। আরেকদিন বলা যাবে।

তাও বলি, ফিনল্যান্ডে যে পরিমাণ গাছ আছে তার ভ্যলিয়ুম প্রায় দুই বিলিয়ন কিউবিক মিটার; যা দিয়ে পৃথিবীর চার দিকে ১০ মিটার পুরুত্ব আর পাঁচ মিটার উচ্চতার প্রাচীর করা সম্ভব। তথ্যটা অদ্ভূত না? আমার কিন্তু বেশ লেগেছে!

ও হ্যাঁ, আজ অদ্ভূত একটা তথ্য পেলাম- নরডিক দেশগুলোর মধ্যে নাকি ফিনিশদের আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি, তাও মেয়েরা। কারণটা কি নিঃসঙ্গতা? গবেষণা কি বলে? ওদের এই পশু প্রেমের কারণটা কি নিঃসঙ্গতা, নাকি অন্য কিছু!

আরও পড়ুন