জঙ্গিবিরোধী অভিযানে প্রাণ দিলেন ভারতীয় সেনা, তিনিও মুসলিম

Indian Army

ভারতের কাশ্মীরের পহেলগামের বৈসরনে পর্যটকদের ধর্ম জিজ্ঞেস করেছিল জঙ্গিরা। পাঁচ জঙ্গির গুলি শুধু ২৬টা নিরীহ পর্যটকের দেহ ঝাঁঝরা করে দেয়নি, তাদের এই কৌশল ভারতের মতো এই বৈচিত্র ভরা দেশে বিভাজনের আগুনে বাতাস দিয়েছে। যা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে।

ঠিক এমন একটা সময়ে সব হিসেব যেন উল্টে-পাল্টে দিলেন ঝন্টু আলী শেখ। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্য তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন ঝন্টু। তিনি বাঙালিও। তার বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার তেহট্টের পাথরঘাটায়।

বুধবার পহেলগামে জঙ্গি হামলার পর শুরু হয়েছে উপত্যকায় চিরুনি তল্লাশি। কাশ্মীরের কুলগামে নিরাপত্তা বাহিনী ও সন্ত্রাসবাদীদের মধ্যে শুরু হয়েছে গুলির লড়াই।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উধমপুর জেলার বসন্তগড় এলাকাতেও শুরু হয় এনকাউন্টার। নিহত হন ভারতীয় সেনা সদস্য ঝন্টু আলী শেখ।

প্রথমে ওই সেনা সদস্যের পরিচয় পাওয়া যায়নি। পরে সেনার হোয়াইট নাইট কোর-এর পক্ষে জানানো হয়, তার নাম ঝন্টু আলী শেখ, ৬ প্যারাস্যুট রেজিমেন্টের সদস্য ছিলেন।

লড়াই চলাকালীন গুলি লাগে তার শরীরে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।

হোয়াইট নাইট কোর-এর পক্ষে এক্স হ্যান্ডেলে জানানো হয়েছে, “কর্তব্যের প্রতি অবিচল থাকা ও সাহসের সঙ্গে তিনি যেভাবে লড়েছেন, তা চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”

পরে কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন। তিনিই প্রথম জানান এই খবর। লেখেন, “কাশ্মীরে পাকিস্তানি জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াই করতে করতে শহীদ হলেন নদিয়ার তেহট্ট ব্লকের পাথরঘাটার বীর বাঙালি সৈনিক ঝন্টু আলী শেখ। অমর রহে।”

বৃহস্পতিবার দুপুরের পরেই ঝন্টুর মৃত্যুর খবর তার বাড়িতে এসে পৌঁছেছে। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ঝন্টুর পরিবার। ঝন্টুর বয়স ৩৬ বছর। পরিবার নিয়ে আগ্রায় থাকতেন। তার স্ত্রী এবং এক ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। ঝন্টুর মৃত্যুর পর তার ছেলেমেয়ের কী হবে তা ভেবেই কাঁদছেন তেহট্টের পাড়া।

পহেলগামে জঙ্গি হামলায় পশ্চিমবঙ্গের তিন জন মারা গেছেন। বুধবার তাদের মরদেহ এসে পৌঁছায় কলকাতায়। বিতান অধিকারী, সমীর গুহ, মনীশ চন্দ্র মিশ্রদের পরিবারের চোখের পানির সঙ্গে ঝন্টুর পরিবারের চোখের পানি কি আলাদা! পার্থক্য করা কী আদৌ সম্ভব!

আরও পড়ুন