তেল অবকাঠামোতে হামলার পর ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, নিহত ১০

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে জ্বলছে ইসরায়েলের স্থাপনা। ছবি সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও থেকে নেওয়া।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে জ্বলছে ইসরায়েলের স্থাপনা। ছবি সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও থেকে নেওয়া।

ইরানের ক্ষেপণান্ত্র হামলায় অন্তত দশ জন নিহত হয়েছে বলে ইসরায়েলের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।

শনিবার রাতে ওই হামলার পর ইরান ইসরায়েলকে সাবধান করে বলেছে, যতক্ষণ তারা সংযত না হবে ততক্ষণ তাদের পাল্টা আঘাত চলবে।

পুলিশকে উদ্ধৃত করে বিবিসি জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ছয়জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে। এছাড়া সাতজন নিখোঁজ রয়েছেন। জরুরি পরিষেবাগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে হতাহতদের উদ্ধারে অনুসন্ধান চালাচ্ছে।

জরুরি পরিষেবা এবং স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রের তথ্য অনুযায়ী উত্তর আরব শহর তামরায় আরও চারজন নিহত হয়েছেন।

আল জাজিজার এক প্রতিবেদন অনুসারে, হাইফা ও তেল আবিবসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। ইসরায়েলি বাহিনী ইরানের বিভিন্ন বেসামরিক ও জ্বালানি অবকাঠামোতে বোমা হামলা চালানোর পর পাল্টা হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা “ইরান সরকারের পারমাণবিক অস্ত্র প্রকল্পের সাথে সম্পর্কিত” স্থানগুলিকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।

ইরানি গণমাধ্যম জানিয়েছে, গত দুই দিনে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৮০ জন নিহত এবং ৮০০ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২০ জন শিশুও রয়েছে।

ইরান ও ইসরায়েলের এই পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি এবং ভ্লাদিমির পুতিন একমত যে ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাত থামানো জরুরি হয়ে পড়েছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতের পর রোববার সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স হ্যান্ডলে এক পোস্টে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্জোগ বলেছেন, “একটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং কঠিন সকাল।”

“ইরানের সন্ত্রাসী হামলায় ইহুদি ও আরব, ইসরায়েলি নাগরিক এবং নতুন অভিবাসী শিশু ও বৃদ্ধ, নারী ও পুরুষ হতাহত হয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির জন্য আমি শোকাহত। আহতদের আরোগ্য এবং নিখোঁজদের খুঁজে পাওয়ার জন্য আমি প্রার্থনা করছি। আমরা একসাথে শোক করব। আমরা একসাথে কাটিয়ে উঠব।”

এদিকে, ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, তারা “ইসরায়েলের সংবেদনশীল লক্ষ্যবস্তুতে সামরিক অভিযান” শুরু করেছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধের পর থেকে ইরান-সমর্থিত হুতিরা ইসরায়েলে একাধিক হামলা চালিয়েছে। ইতোমধ্যে, ইসরায়েল ইয়েমেনের হুতি-নিয়ন্ত্রিত এলাকায়ও হামলা চালিয়েছে।

রোববার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে হুতিদের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ইরানের সাথে সমন্বিতভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের উপর হামলা চালানো হয়েছে।

আল জাজিরার আরেক খবরে জানানো হয়েছে, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ষষ্ঠ দফার পারমাণবিক আলোচনা বাতিল করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, ইসরায়েলের অব্যাহত আক্রমণের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কোনও যুক্তি নেই।

আরও পড়ুন