জাতীয় নয়, আগে স্থানীয় নির্বাচন চায় জামায়াত

Jamaat e islami logo

দ্রুত নির্বাচন দিতে সরকারের ওপর চাপ তৈরি করেছে বিএনপি। নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ কিছু দাবিতে বুধবার থেকে মাঠের কর্মসূচিতে নেমেছে দলটি। কিন্তু বিএনপির এক সময়ের মিত্র জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান ঠিক এর বিপরীতে। সংস্কার ছাড়া এখনই সংসদ নির্বাচন চায় না নিবন্ধন হারানো দলটি।

এক যুগ পর বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে জামায়াতে ইসলামী। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনসহ অন্য নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। আর জামায়াতের পক্ষে ছিলেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ দলটির ছয় সদস্যের প্রতিনিধি।

বৈঠক নির্বাচন কমিশনের কাছে ২৩ দফা দাবি জানিয়েছে জামায়াত।

বৈঠক শেষে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, “সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন করলে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সেই সময় দিতে জামায়াত প্রস্তুত।”

“জনগণ চায় স্থানীয় সরকার সচল হোক, আমরাও চাই জাতীয় নির্বাচনের আগে হোক স্থানীয় নির্বাচন।” যোগ করেন মিয়া গোলাম।

জামায়াত সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের পক্ষে আছে জানিয়ে এই নেতা বলেন, “বাংলাদেশের জন্য এটি প্রয়োজন। সংসদ কার্যকরের জন্য প্রয়োজন। পাশাপাশি প্রবাসী ভোটারদের ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে বলেছি। এছাড়া রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইনবিধি কঠোর। তা বাতিল করা উচিত।”

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি জানতে গত রোববার বিএনপির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ইসির সঙ্গে বৈঠক করে। তার চার দিনের মাথায় নিজেদের অবস্থান জানাল বিএনপির এক সময়ের জোটসঙ্গী জামায়াত। যদিও নির্বাচনের অনেক বিষয় নিয়েই এখন তাদের ভাবনা ভিন্ন।

বিএনপি যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন চায়। জাতীয় নির্বাচনের আগে আর কোনো নির্বাচন তারা মানতে রাজি নয়। সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েও তাদের ঘোর আপত্তি দলিটির। কিন্তু জামায়াতের অবস্থান ঠিক এর বিপরীত।

দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায় না জামায়াত। সবার আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায়। সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতিতে আগ্রহ জামায়াতের। যদিও দলটির এখন নিবন্ধন নেই।

২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে হাই কোর্ট। তাদের জন্য বরাদ্দ মার্কা দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের তালিকা থেকে বাদ দেয় নির্বাচন কমিশন। জামায়াত আপিল বিভাগে গেলেও ২০২৩ সালে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে দলটির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

২০১৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতের ২২ জন প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন।

এর আগে ২০০১ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোটের অংশ ছিলো বিএনপি। দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন পেয়ে ওই জোট তখন ক্ষমতায় গিয়েছিলো।

তবে এককভাবে জামায়াত সবচেয়ে ভালো ফল করেছিলো ১৯৯১ সালের নির্বাচনে। সেই নির্বাচনে ১৮টি আসন পেয়েছিলো দলটি। তখন জামায়াতের সমর্থন নিয়েই সরকার গঠন করেছিলো বিএনপি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর:

প্রায় দেড়শ আসনে প্রার্থী দিল জামায়াত, এখনই কেন?

আরও পড়ুন