ভারতের কাছে যুদ্ধবিমান বিক্রির প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ পাকিস্তান

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে সামরিক সামরিক প্রযুক্তি সরবরাহ সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছে ট্রাম্প-মোদীর বৈঠকে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে সামরিক সামরিক প্রযুক্তি সরবরাহ সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছে ট্রাম্প-মোদীর বৈঠকে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতকে আধুনিক যুদ্ধবিমান বিক্রির প্রস্তাব দেওয়ায় চরম ক্ষুব্ধ পাকিস্তান।

শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কাছে উন্নত সামরিক প্রযুক্তি সরবরাহ করলে, দক্ষিণ এশিয়ায় সামরিক ভারসাম্য আরও বিপর্যস্ত হবে।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত যৌথ বিবৃতিতে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করাকে ‘একপাক্ষিক’ ও ‘ভুলভাবে উপস্থাপন’ বলে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শফকাত আলী খান।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ১৩ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটন সফরের সময় প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলা ও পাঠানকোট ঘটনার জন্য দায়ীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানানো হয়। পাকিস্তানের ভূমি যেন সীমান্তবর্তী সন্ত্রাসবাদে ব্যবহার না হয়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়।

সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে শফকাত আলী খান বলেন, “আমরা বিস্মিত যে পাকিস্তানের সন্ত্রাস বিরোধী কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার পরও আমাদের বিরুদ্ধে এমন একতরফা মন্তব্য করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বিদেশি গোষ্ঠীগুলোর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ সকল সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রতিরোধে কাজ চালিয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্র-ভারত যৌথ বিবৃতিতে পাকিস্তানকে ঘিরে করা মন্তব্যকে একতরফা, বিভ্রান্তিকর এবং কূটনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থি বলে মনে করি।”

সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মন্তব্য করায় নিন্দা জানিয়ে মুখপাত্র বলেন, বিবৃতিতে ভারতের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ভিন্নমতাবলম্বীদের টার্গেট করার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের মন্তব্য ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসবাদ, ষড়যন্ত্র এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে আড়াল করতে পারবে না। এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিকে সরিয়ে নিতে পারবে না যে ভারত এখন মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক অপরাধের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে।”

শফকাত আলী খান জোর দিয়ে বলেন, “পাকিস্তান আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে। আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব এবং এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান করব।”

তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “শান্তি ও নিরাপত্তার ইস্যুগুলোতে আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের উচিত একটি ব্যাপক ও বাস্তবভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা এবং একতরফা অবস্থান না নেওয়া, যা বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।”

সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র আরও জানান, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আগামী সপ্তাহে নিউইয়র্ক সফরে যাবেন। তিনি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন এবং অন্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন, যার মধ্যে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গেও আলোচনা হতে পারে।

আরও পড়ুন