রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে ৮ মে থেকে ১১ মে পর্যন্ত তিন দিনের জন্য একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয় দিবসের স্মরণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন।
সোমবার ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “মানবিক বিবেচনায়” এই যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুদ্ধবিরতি ৭ মে রাত ১২টা থেকে শুরু হয়ে ১১ মে রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে, যাতে নাৎসি জার্মানির পরাজয়ের ৮০তম বার্ষিকী যথাযোগ্যভাবে পালন করা যায়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “রাশিয়া মনে করে ইউক্রেনীয় পক্ষেরও এই উদাহরণ অনুসরণ করা উচিত।”
এতে আরও বলা হয়, “যদি ইউক্রেনীয় পক্ষ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে, তাহলে রাশিয়ান ফেডারেশনের সশস্ত্র বাহিনী যথাযথ এবং কার্যকর প্রতিক্রিয়ামূলক ব্যবস্থা নেবে।”
ক্রেমলিন জানিয়েছে, “রাশিয়া আবারও পূর্বশর্ত ছাড়াই— শান্তি আলোচনায় প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করছে, যার উদ্দেশ্য ইউক্রেন সংকটের মূল কারণ দূর করা এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে গঠনমূলক সহযোগিতা স্থাপন।”
ক্রেমলিন আরও জানায়, কিয়েভকেও একই ধরনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব, যা ইউক্রেন সমর্থন করেছিল— মস্কো প্রত্যাখ্যান করেছে।
এবিষয়ে ইউক্রেন সরকারের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন।
এর আগে, ইস্টার সানডে উপলক্ষে ইউক্রেনে ৩০ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল ক্রেমলিন। এসময় উভয়পক্ষ সংঘর্ষের মাত্রা কিছুটা কমার কথা জানালেও— পরস্পরের বিরুদ্ধে শত শত যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে।
সবশেষ এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এমন এক সময়ে এলো, যখন যুক্তরাষ্ট্র চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনার জন্য চলতি সপ্তাহকে “অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ” বলে অভিহিত করেছে।
ওয়াশিংটন দুই পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তবে ট্রাম্প প্রশাসন হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, যদি যথাযথ অগ্রগতি না হয়, তাহলে তারা আলোচনার উদ্যোগ থেকে সরে আসবে।
রাশিয়া ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় সামরিক আগ্রাসন শুরু করে এবং বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে, যার মধ্যে রয়েছে ২০১৪ সালে মস্কোর দ্বারা অধিভুক্ত দক্ষিণের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ।
২০২২ সালের পর থেকে চলে আসা এই সংঘাতে সব পক্ষ মিলিয়ে কয়েক লাখ সেনা এবং বেসামরিক জনগণ হতাহত হয়েছে।