ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জিম্মা থেকে এত জিনিস ‘হাপিস’!

প্রতীকী। ছবি ইউকে ডিফেন্স জার্নাল থেকে নেওয়া।
প্রতীকী। ছবি ইউকে ডিফেন্স জার্নাল থেকে নেওয়া।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সময়কালের একটি পিস্তল, বন্দুক এবং একটি নিষ্ক্রিয় মেশিনগানসহ বিপুলসংখ্যক জিনিসপত্র দুই বছরে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংরক্ষণাগার থেকে উধাও বা চুরি হয়ে গেছে।

লিবারেল ডেমোক্রেটদের প্রকাশিত তথ্য বলছে, ওই সময়ে মন্ত্রণালয়ের সংরক্ষণাগার থেকে ৭০০’র বেশি ফোন, ল্যাপটপ, কমপিউটার এবং পেনড্রাইভের হদিসও পাওয়া যাচ্ছে না।

দলটির প্রতিরক্ষা বিষয়ক মুখপাত্র হেলেন ম্যাগুয়ের বলেছেন, বৈশ্বিক নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার সময়ে এই ধরনের ঘটনা ‘গভীর উদ্বেগের’।

তবে ব্রিটিশ সরকারের দাবি, ‘এ ধরনের ক্ষতি বা চুরি ঠেকানোর শক্তিশালী নীতি ও পদ্ধতি’ রয়েছে তাদের।

আগের রক্ষণশীল সরকারের মেয়াদের সময় ২০২৩ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংরক্ষণাগার থেকে এসব জিনিসপত্র খোয়া গেছে বলে জানিয়েছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি। পার্লামেন্টে দলটির এক জিজ্ঞাসার জবাবে হারানো জিনিস নিয়ে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন একটি নিষ্ক্রিয় ল্যুগার পিস্তল স্টেন সাব-মেশিনগান ২০২৩ সালের জুনে হারিয়ে গেছে।

আর একই বছরের জুলাইয়ে একটি এসএ৮০ বন্দুক ও তার পরের মাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একটি নিষ্ক্রিয় মেশিনগান খোয়া যায়। তবে দুটো অস্ত্রই পরে পাওয়া গেছে।

ডিসেম্বরে একটি ‘গ্লক-১৯’ পিস্তুল চুরি হয়েছে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংরক্ষণাগার থেকে।

ব্রিটিশ সশস্ত্র বাহিনী মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী লুক পোলার্ড বলেছেন, আগ্নেয়াস্ত্রের নিরাপত্তার বিষয়টি তার বিভাগ ‘খুব গুরুত্ব দিয়ে’ দেখছে এবং সমস্ত ক্ষতি এবং চুরির ঘটনা গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।

২০২৪ সালে কতগুলো অস্ত্র চুরি হয়েছে তার কোনো তথ্য অবশ্য জানা যায়নি। 

তবে ফোন এবং ইউএসবি স্টিক খোয়া যাওয়ার পরিমাণ ২০২৩ সালের তুলনায় এ বছর বেড়েছে।

গত বছর ১০১টি ফোন হারানো গেলেও এ বছর সেই সংখ্যা ১৫৯। আর গেল বছর যেখানে ২০টি ইউএসবি স্টিক হারানো গেছে, সেখানে এ বছর খোয়া গেছে ১২৫টি।

গতবছরের তুলনায় এ বছর ল্যাপটপ কম হারিয়েছে। ২০২৩ সালে ১৭৬ এবং চলতি বছর ১৩৮টি ল্যাপটপ উধাও হয়েছে। 

এছাড়া গত বছর ২৫টির মতো কমপিউটার হারিয়েছে অথবা চুরি হয়েছে।

ব্রিটিশ সরকার বলছে, প্রকৃতি অনুসারে ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোর সুরক্ষায় আনুপাতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।

তবে এসব জিনিস খোয়া যাওয়ার ঘটনা জরুরিভিত্তিতে তদন্ত এবং ক্ষতি ও চুরি কমাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা জানানোর আহ্বান জানিয়েছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি।

ম্যাগুয়ের বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তার প্রসঙ্গ এলেই সরকার সক্রিয় হওয়ার চেয়ে অনেক বেশি নিষ্ক্রিয় যায়। এসব সম্পদ খোয়া যাওয়া গভীর উদ্বেগের, বিশেষ করে যখন বৈশ্বিক নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা অনেক বেড়ে গেছে।”

এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে এবং এ ধরনের ক্ষতি বা চুরি ঠেকানোর মতো কার্যকর নীতি ও ব্যবস্থাও তাদের রয়েছে।

“কোনো সম্পদ হারানোর পেছনে যদি কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে আমরা তার তদন্ত, বিচার এবং জিনিসগুলো উদ্ধারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব,” বলেন তিনি।

সূত্র: বিবিসি

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads